আশ্চর্য নয় সত্য......অপ্রিয় হলেও সত্য ঘটনা (সপ্তম পরিচ্ছেদ)
আনুমানিক পঠন সময় : ৩ মিনিট

লেখক : লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
দেশ : India , শহর : New Delhi

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , সেপ্টেম্বর
প্রকাশিত ৯৩৫ টি লেখনী ৭১ টি দেশ ব্যাপী ২৩৬৪৫০ জন পড়েছেন।
আশ্চর্য নয় সত্য......অপ্রিয় হলেও সত্য ঘটনা (সপ্তম পরিচ্ছেদ)
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

যে কারণে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার হন এই নারী

কথায় আছে- ‘লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু’। লোভ মানুষকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যায়। সব নারীদেরই কমবেশি গয়নার প্রতি দুর্বলতা থাকে। তাই বলে গয়নার লোভে মানুষ হত্যা করার মতো নিকৃষ্ট কাজ করাও কি সম্ভব! তেমনই লোমহর্ষক দৃষ্টান্ত গড়েন কর্ণাটকের কে ডি কেম্পম্মা।
তবে সবাই তাকে চিনতেন ‘সায়ানাইড মল্লিকা’ বলে। তিনিই ভারতের মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত প্রথম নারী সিরিয়াল কিলার। ১৯৯৯ সাল থেকে পরবর্তী আট বছরে তিনি খুন করেন ৬ নারী। কীভাবে তিনি খুনের ছক সাজাতেন জানেন?
বেঙ্গালুরু শহরের বিভিন্ন মন্দিরগুলোই ছিল তার টার্গেট পয়েন্ট। সন্ন্যাসিনীর বেশ ধরে বিভিন্ন মন্দিরে মন্দিরে ঘুরতেন তিনি। মন্দির আসা বিভিন্ন নারীদের দেখে বোঝার চেষ্টা করতেন, কে কে পারিবারিক সমস্যার কারণে অবসাদে আছেন।
এমন নারীদের খুঁজে বের করে; তাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলতেন সাইনাইড মল্লিকা। তাদের বিশ্বাস অর্জন করে ফাঁকা কোনো মন্দিরে নিয়ে যেতেন। সেখানে সমস্যা সমাধানের জন্য যজ্ঞ করার পরামর্শ দিতেন।
তবে এই নারীর শর্ত থাকত একটিই, তাদের আলমারিতে থাকা সবচেয়ে দামি শাড়ি এবং সব গয়না পরে আসতে হবে। তার কথা মেনে যে নারী ফাঁকা মন্দিরে আসতেন, সুযোগ বুঝে সায়ানাইড মেশানো পানি খাইয়ে হত্যা করে শাড়ি-গয়না নিয়ে পালিয়ে যেতেন সাইনাইড মল্লিকা।
কেম্পাম্মার বিরুদ্ধে একাধিক নারী হত্যার অভিযোগ থাকলে, সুনির্দিষ্ট ৬ নারীকে হত্যার জন্য তাকে দোষী সাব্যস্ত করা হয়। গ্রেফতারের পর তিনি জানান, সিনেমার মাধ্যমে তিনি সায়ানাইড দিয়ে হত্যা সম্পর্কে জানতে পারেন। এই পদ্ধতির কারণেই তিনি ‘সায়ানাইড মল্লিকা’ নামে আলোচিত হয়ে ওঠেন।
তিনি পুলিশকে আরও জানান, যখন কোনো নারী ওই পানি খেতে না চাইতেন; তখন তাদের নাক চেপে ধরে জোর করে তা খাওয়াতেন তিনি। ভিকটিম কখন মারা যাবেন, সেজন্য অপেক্ষা করতেন; তারপর অর্থ ও মূল্যবান জিনিসপত্র ছিনতাই করতেন সাইনাইড মল্লিকা। প্রতিটি খুনের পরই তিনি বেশ-ভূষা পরিবর্তন করতেন।
এভাবেই একের পর এক নারীদেরকে নিজের শিকার বানিয়েছেন কুখ্যাত নারী সিরিয়াল কিলার সাইনাইড মল্লিকা। তিনি কর্ণাটকের কাগ্গালিপুরার বাসিন্দা ছিল। তিন সন্তান ও দর্জি স্বামী নিয়েই ছিল তার সংসার।
সংসার চালাতে তিনি গৃহকর্মী এবং স্বর্ণকারের সহকারীসহ বিভিন্ন কাজ করেছেন। তবে সব জায়গা থেকে চুরি করতেন তিনি। চুরির অভ্যাস সম্পর্কে জানতে পেরে ১৯৯৮ সালে তার স্বামী ঘর থেকে তাকে বের করে দেন। এরপর অর্থ ও গয়নার লোভে কুখ্যাত সিরিয়াল কিলার বনে যন এই নারী।
২০০০ সালে প্রথম তিনি পুলিশের হাতে গ্রেফতার হন। একটি বাড়ি থেকে মূল্যবান জিনিসপত্র লুটের চেষ্টা করার সময় পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ৬ মাস কারাভোগের পর তিনি মুক্তি পান। এরপর বিভিন্ন লাশ পাওয়ার পর পুলিশ তার খোঁজ করেও গ্রেফতার করতে ব্যর্থ হন।
সর্বশেষ ২০০৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর ধরা পড়েন সাইনাইড মল্লিকা। ভিকটিমের গয়না বিক্রির সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। তারপর পুলিশী জেরায় সিজের অপকর্মের কথা স্বীকার করেন কুখ্যাত এই নারী। পুলিশ জানায়, ডাকাতির উদ্দেশ্যেই এসব নৃশংস কাজ করেন তিনি।
একাধিক খুনের জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয় থাকে। ২০১০-২০১২ সালের মধ্যে বিচারবিভাগ মোট ৬ নারীকে হত্যার দায়ে তাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করে।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে তার জীবনী নিয়ে নির্মিত ছবি ‘সায়ানাইড মল্লিকা’ প্রকাশ পেয়েছে। এ ছবির মূল চরিত্রে অভিনয় করেছে সানজানা প্রকাশ।

সূত্র: গাল্ফ নিউজ

রচনাকাল : ২৪/৮/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  Germany : 1  India : 32  Russian Federat : 1  Ukraine : 1  United States : 32  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  Germany : 1  India : 32  Russian Federat : 1  
Ukraine : 1  United States : 32  
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
আশ্চর্য নয় সত্য......অপ্রিয় হলেও সত্য ঘটনা (সপ্তম পরিচ্ছেদ) by Lakshman Bhandary is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৩৬৩০২১
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী