আশ্চর্য নয় সত্য......অপ্রিয় হলেও সত্য ঘটনা (পঞ্চম পরিচ্ছেদ)
আনুমানিক পঠন সময় : ৪ মিনিট

লেখক : লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
দেশ : India , শহর : New Delhi

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , সেপ্টেম্বর
প্রকাশিত ৯৩৫ টি লেখনী ৭২ টি দেশ ব্যাপী ২৭৩৮৩৬ জন পড়েছেন।
আশ্চর্য নয় সত্য......অপ্রিয় হলেও সত্য ঘটনা (পঞ্চম পরিচ্ছেদ)
তথ্য সংগ্রহ ও সম্পাদনা ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

৫ স্ত্রী ও ৩৫০ উপপত্নীর বিশাল হারেম

রাজা ছিলেন তীব্র নারীসঙ্গে আসক্ত। প্রজাদের প্রতি নিষ্ঠুর আচরণ প্রদর্শন করতেন তিনি। ডমিনিক ল্যাপিয়ার এবং ল্যারি কলিন্স ‘ফ্রিডম এট মিডনাইট’ নামক একটি বইয়ে মহারাজা ভূপিন্দর সিং প্রসঙ্গে বলেন, নারী প্রজাদের ক্ষেত্রে তার নির্দেশ ছিল বেশ ভয়াবহ।
মহারাজার নির্দেশে নারী প্রজারা বছরে একবার নগ্ন হয়ে হাজিরা দিতেন। তাদের মধ্যে যাকে মহারাজা পছন্দ করতেন; তাকে হীরার বক্ষবন্ধনী পরানো হত। পরবর্তীতে রাজার মনোরঞ্জন করতে বাধ্য করা হত ওই নারীকে।
যদিও রাজার ছিল ৫ জন আবার কোথাও উল্লেখ করা হয় ১০ জন স্ত্রী। সন্তান ছিল মোট ৮৮ জন। বিশাল এক হারেমও ছিল নিষ্ঠুর এই রাজার। সেখানে ছিলেন ৩৫০ জন যৌনদাসী। দেওয়ান জারমানি দাসের ‘দ্য মহারাজা’ বইয়ে জানা যায়, রাতে বিশাল সুইমিংপুলে তিনি গোসল করতেন।
তখন তার পাশে থাকতেন যৌনদাসীরা। রাজা যেভাবে খুশি যৌনতায় মেতে উঠতেন যৌনদাসীদের সঙ্গে। ব্যক্তিগত জীবনে পাঁচবার পাণিগ্রহণ করেছেন ভূপিন্দর সিং। এ ছাড়াও অগণিত উপ-পত্নী ছিল তার। তার সবচেয়ে ভয়ঙ্কর অধ্যায় ছিলো তান্ত্রিক যৌনতার। সেটা উপভোগের জন্য মহারাজাকে সাহায্য করতেন এক তান্ত্রিক। নাম তার প্রকাশনন্দ ঝা।
জারমানি দাসের বইয়ের বিবরণ থেকে জানা যায়, দেবীমূর্তির সামনে ১৫০-৪০০ জন কুমারি উপস্থিত থাকত। গভীর রাত পর্যন্ত পূজা করতেন বাঘছাল পরিহিত প্রকাশ তান্ত্রিক। পূজার পর ওই মেয়েদের মধ্য থেকে একজনকে বেছে নেওয়া হত। মহারাজা ও তার ঘনিষ্টজনরা ওই কুমারির উপর ঝাঁপিয়ে পড়ত রাতে। অনেক সময় কুমারি মেয়েরা পাশবিক নির্যাতনের ফলে মারাও যেত।
এভাবে বিলাসিতা ও নিষ্ঠুরতায় জীবন উপভোগ করেছেন ভূপিন্দর সিং। ১৯৩৮ সালের ২৩ মার্চ তিনি প্রয়াত হন মাত্র ৪৭ বছর বয়সে। পরবর্তীতে পাতিয়ালার সিংহাসনে বসেন তার বড় ছেলে যাদবেন্দ্র সিং। তার আমলেই স্বাধীন ভারতবর্ষের অংশ হয় পাতিয়ালা স্টেট।
আজব এক প্রথা মানেন পাঞ্জাবারে মানসার বোহা গ্রামের আদিবাসীরা। সেখানে এক স্ত্রী নিয়েই সংসার পাতেন পরিবারের সব ভাইয়েরা। ওই গ্রামের শত শত বছরের এই প্রথা মেনেই কোনো কোনো নারীরা ৫-৭ স্বামী নিয়ে সংসার করছেন।
২০২১ সালে এসেও অদ্ভুত এই ঘটনার সাক্ষী বিশ্ব। তবে তারা ঠিকই দিব্যিই এই রীতি মেনে বছরের পর বছর কাটিয়ে দিচ্ছেন। কারও মনে নেই কোনো অভিযোগ। বংশপরম্পরায় চাষযোগ্য জমির সংকট, দারিদ্র্যের কষাঘাত এবং নারী-পুরুষ জনসংখ্যার আনুপাতিক হ্রাসের কারণেই এই প্রথা মানতে বাধ্য হয়েছেন তারা।
সাম্প্রতিক সময়ে পাঞ্জাবে নারী-পুরুষের আনুপাতিক হার হলো, ৭৯৩ জন নারীর বিপরীতে ১০০০ পুরুষ। এ অবস্থায় গড়ে প্রতিটি পরিবারের অর্ধ-ডজন ভাই মিলে বিয়ে করেন এক নারীকে।
সেখানকার নারীরা বেশ ক্ষমতাশীল। ৫ স্বামী নিয়ে সংসার করছেন রজ্জো ভার্মা। দুই সন্তানের এই জননী প্রতি রাতে পরিবারের একেক ভাইয়ের সঙ্গে শুয়ে থাকেন। প্রতি রাতে রজ্জো কার সঙ্গে থাকবে, সেটি সম্পূর্ণ তার সিদ্ধান্ত। এটাই সেখানকার রীতিনীতি। ৫ স্বামী আর দুই সন্তান নিয়ে সুখেই সংসার করছেন রজ্জো। তাদের মধ্যে নেই কোনো অশান্তি।
একইভাবে সুখে সংসার করছেন সুনীতা দেবী নামের আরেক নারী। তার অবশ্য ২ স্বামী। কারণ তার শ্বশুরের মাত্র ২টি ছেলে সন্তান। তাই এই ঘরে দুই ভাইয়ের বউ হয়ে এসেছেন সুনীতা। সুনীতার ভাষায় তিনি খুবই ভাগ্যবতী। কারণ তিনি দুজন স্বামীর স্ত্রী।
একজন তাকে রান্নাতে সাহায্য করে এবং অন্যজন বাচ্চা মানুষ করতে। এমনইভাবে দুই ভাইকে বিয়ে করেছিলেন বুদ্ধি দেবীও। তার বয়স এখন প্রায় ৮০ বছর। তার এক স্বামী মারা গেছে। অন্যজন এখনও বেঁচে আছেন।
এক নারীর একাধিক ভাইয়ের সঙ্গে বিয়ের এই রীতি গত শতাব্দী ধরে চলে আসছে। এক পরিবারে যতটুকু জমি আছে তা ছেলেদের মধ্যে ভাগ করে দেয়া হয়। পরবর্তীকালে তারা যখন বিয়ে করেন; তখন সেই জমি তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে দেওয়া হয়।
যেহেতু প্রতিটি ভাইয়ের একজনই স্ত্রী থাকে; তাই আলাদা করে জমি প্রত্যেকের নামে ভাগ করার প্রয়োজন হয় না। তবে এ রীতির কারণে বাল্যবিবাহের প্রকোপ এবং একই সঙ্গে অকাল মাতৃত্বের আশঙ্কাজনক হার বেড়ে চলেছে।
তবে এ পরিস্থিতি ঠেকাতে বর্তমানে ওই এলাকার পার্শ্ববর্তী রাজ্য বিহার, উত্তর প্রদেশের ধর্মগুরু ও সমাজপতিরা বাঁধ সাধছেন। অন্যদিকে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে, একজনের বিয়ে করা বউকে তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামীর অন্য ভাইদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখতে বাধ্য করা হচ্ছে।
ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং ন্যাশনাল কমিশন ফর ওমেনের নজরদারিতেও এসেছে বিষয়টি। তারাও মনে করছেন, এসব অঞ্চলের নারীরা মোটেই স্বেচ্ছায় এ দুর্ভোগ মেনে নিচ্ছেন না। প্রবল সামাজিক চাপ আর পারিবারিক দারিদ্র্যের অলঙ্ঘনীয় বাধ্যবাধকতার কারণে তারা মেনে নিচ্ছেন এই প্রথা।
অনুসন্ধানে দেখা যায়, পরিবারে বড় ভাই যাকে বিয়ে করছেন; সেই স্ত্রীই স্বামীর অন্য ভাইদেরকেও দেখভাল করেন। তাদের খাওয়া-দাওয়া, কাপড়-চোপড়, গরু-লাঙ্গল দেখা থেকে শুরু করে পালাক্রমে তাদের শয্যাসঙ্গীও হতে হয় তাকেই। কোনো কোনো পরিবারে দেখা ছে, এক নারী পরিবারের ৮ ভাইয়ের শয্যাসঙ্গী হচ্ছেন। যা রীতিমতো বিষ্ময়কর ও অমানুষিক।
এ বিষয়ে ভারতের ন্যাশনাল কমিশন ফর ওমেনের চেয়ারম্যান ড. গিরিজা ব্যাস বলেন, ‘এ ধরনের একজন নারীর অনেকগলো সন্তান থাকে। যাদের কারও পিতৃপরিচয় নির্ধারিত নয়।’ এ ছাড়াও এ ধরনের বিয়ে কখনও প্রচলিত ধর্মীয় বা সামাজিক বিধি-বিধান মেনে হয় না। তাই এ সংক্রান্ত কোনো প্রমাণপত্র বা সাক্ষী-সাবুদ একেবারেই পাওয়া যায় না।

সূত্র: ডেইলি মেইল/টাইমস অব ইন্ডিয়া

রচনাকাল : ২৪/৮/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 1  France : 1  Germany : 2  Iceland : 1  India : 49  Ireland : 3  Romania : 1  Russian Federat : 1  Ukraine : 1  
United States : 56  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 1  France : 1  Germany : 2  
Iceland : 1  India : 49  Ireland : 3  Romania : 1  
Russian Federat : 1  Ukraine : 1  United States : 56  
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
আশ্চর্য নয় সত্য......অপ্রিয় হলেও সত্য ঘটনা (পঞ্চম পরিচ্ছেদ) by Lakshman Bhandary is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৫৬৪৪৩৩
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী