বকরী ঈদের উত্সব (প্রবন্ধ)
তথ্য সংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
আজ সারা বিশ্বজুড়ে পালিত হচ্ছে বকরী ঈদ। এটি মুসলিম সম্প্রদায়ের একটি অন্যতম উৎসব। এই ঈদের আরেক নাম হল কোরবানি ঈদ বা ঈদ-উল-আজহা। বিভিন্ন জায়গায় এই ঈদের বিভিন্ন রকম নাম। মুসলিমরা সাধারণত দু'ধরনের ঈদ পালন করেন, ঈদ-উল ফিতর ও ঈদ-উল-আজহা। মুসলিম সম্প্রদায়ের দু'টি সর্ববৃহৎ উৎসবের মধ্যে এটি অন্যতম। দু'টি ঈদ-ই শুরু হয় নতুন চাঁদ দর্শন করে। আকাশে নতুন চাঁদ ওঠার সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন দেশে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা এই উত্সেবে মেতে ওঠেন। এদিন ছোটো-বড় নির্বিশেষে সবাই নতুন জামা পরে খোলা জায়গায় একসঙ্গে নামাজ পড়ে। তারপর সবাই সবাইকে কোলাকুলি করে ঈদের শুভেচ্ছা জানায়।
বিশ্বজুড়ে অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে এই উৎসব পালিত হয়।এই ঈদ কোরবানির ঈদ বলে এই উৎসবে আল্লাহ-কে কিছু না কিছু উৎসর্গ বা কোরবান করতে হয়। ভারতের স্বাধীনতার পূর্বে অবিভক্ত বাংলায় বকরি বা ছাগল ছাড়া কোরবানির জন্য অন্য কোনও পশু পাওয়া যেত না। তাই সেই সময় কোরবানির জন্য বকরি বা ছাগল ব্যবহারের কারণেই এই ঈদের আরেক নাম হয় বকরি ঈদ। অন্যদিকে, আরবি 'বকরা ' শব্দের অর্থ গাভী বা গরু। আর এই কারণে, গরুকে বলি দেওয়ার মধ্যে দিয়েও পালন করা হয় বকরী ঈদ।
হিজরি ক্যালেন্ডারের দ্বাদশ ও শেষ মাস ধুল হিজার দশম দিনে পালিত হয় ঈদ-আল-আধা। কথিত আছে, হজরত ইব্রাহিম আল্লাহ-র স্বপ্নাদেশ অনুযায়ী নিজের ছেলেকে আল্লাহ-র কাছে কোরবানি বা উৎসর্গ করতে গিয়েছিলেন। তখন স্বয়ং আল্লাহ তাঁকে দেখা দিয়ে একটি ভেড়া তাঁর হাতে তুলে দেন এবং বলেন যে ছেলের বদলে এই ভেড়াটাকে কোরবানি হিসেবে উৎসর্গ করতে। তারপর থেকেই এই উৎসবের আগে থেকে মুসলিম ধর্মাবলম্বীরা ভেড়া, ছাগল, উট কিনে তাকে যত্ন সহকারে পালন করে বকরী ঈদের দিনে আল্লাহ-র নামে উৎসর্গ করেন। ইসলাম মতে, ত্যাগের অন্যতম প্রতীক এই কোরবানির ঈদ। সবাই এই দিনে নতুন জামা পরে, যে যার সাধ্যমতো ভোজের আয়োজন করেন। ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সবাই এই উৎসবে একত্রিত হয়ে ওঠেন, কোনও ভেদাভেদ থাকে না। আত্মীয়-স্বজন, বন্ধুবান্ধব প্রত্যেকেই এই ঈদের আনন্দে মেতে ওঠেন। এই উৎসবের রীতি অনুযায়ী এলাকার দরিদ্র ও দুঃস্থদের জামা-কাপড়, খাবার ইত্যাদি দান করা হয়।
রচনাকাল : ২১/৭/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।