ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু
আনুমানিক পঠন সময় : ৯ মিনিট

লেখক : সনৎকুমার পুরকাইত
দেশ : India , শহর : ডায়মন্ডহারবার

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , জুন
প্রকাশিত ৯৭ টি লেখনী ৬০ টি দেশ ব্যাপী ৫০৯৬৮ জন পড়েছেন।
Sanat Kumar Purkait
চেতো-দর্পণ-মার্জনং ভব-মহা-দাবাগ্নি-নির্বাপণং শ্রেয়ঃ-কৈরব-চংদ্রিকা-বিতরণং বিদ্যা-বধূ-জীবনম্ অর্থাৎ চিত্ত দর্পণ মার্জন করলে এই বিশ্বসংসারের যত কষ্টের আগুন নির্বাপিত হয়ে যায়। আর একটু ভালো করে ব্যাখ্যা করলে বলা যায় যে দর্পণ বা আয়নার উপর নোংরা জমা হলে যেমন সেই দর্পণে প্রতিবিম্ব পাওয়া যায় না, যেমন সরোবরের জল পরিষ্কার না থাকলে পূর্ণিমার চাঁদ আকাশে ঝলমল করলেও তা জলে দেখা যায় না, তেমনি আমাদের হৃদয়রূপ সরোবরে অজ্ঞানতার মলিনতা গ্রাস করে রাখলে সেখানে জ্ঞানরূপ সূর্যের প্রতিফলন হয় না। আর চাঁদের আলো প্রতিফলিত না হলে যেমন কচুরিপানা পূর্ণ সরোবরে কেউ স্নান করতে যান না, তেমন জ্ঞানসূর্য না প্রদীপ্তমান হলে সে হৃদয়ে মহত্ত্ব ফুটে ওঠে না, সেখানে কেউ বিরাজও করেন না। এত কথা লেখার একটাই কারণ, বর্তমান প্রজন্ম অজ্ঞানতার অন্ধকারে ডুবে অনেক সময় অনেক কিছুই অমান্য করেন। যিনি এই শ্লোক লিখে গেছেন তিনি আজ থেকে ৫৩৪ বছর পূর্বে নবদ্বীপের মাটি আলো করে এই বাংলা তথা সারা ভারতের অন্ধকার দূর করতে অবতীর্ণ হয়েছিলেন প্রেমের শীতল বারিধারা নিয়ে। তিনি সবার প্রেমের ঠাকুর যুগাবতার ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু। তাঁর সেই অমিয় প্রেমের বন্যায় মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছিলেন জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে তামাম নবদ্বীপের আবালবৃদ্ধবণিতা। তাঁর জন্ম, বংশ পরিচয় ও কর্ম আর সর্বোপরি তাঁর রহস্যময় অন্তর্ধানের কথা আপনারা বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্নভাবে পড়েছেন বা পাবেন। তাই আজকের এই ক্ষুদ্র পরিসরে আলোচনার কেন্দ্রে তাঁর কথা বলব, বলব তাঁর দর্শন, তাঁর ভাব আর তাঁর প্রভাব নিয়ে।

        ২৪ বছরের আজানুলম্বিতভুজৌ কাঁচা সোনার মত শরীর ও পদ্মফুলের মত চোখ, যার দিকে তাকালে নবদ্বীপের নারী পুরুষ কেউ মুখ ফেরাতে পারেন না, সেই প্রেমের ঠাকুর আমাদের মাঝে এসেছিলেন ব্রাহ্মণ পরিবারে। পরিচয় পেয়েছেন শচীনন্দন হিসাবে, জগন্নাথনন্দন হিসাবে নয়। মায়ের স্থান তাঁর দর্শনে যে কত বড় জায়গা নিয়েছিল তা এখানে ভীষণভাবে প্রকট হয়েছিল। সেই শচীর নন্দন গৌরহরি অনন্ত জ্ঞানের অধিকারী হয়ে যৌবনে একের পর এক তর্কালঙ্কার, বিদ্যারত্নের ন্যায় পণ্ডিতদের শাস্ত্র আলোচনায় পরাজয় করলেও তিনি তাঁর জীবদ্দশায় একটাও গ্রন্থ রচনা করে গেলেন না। শুধুমাত্র জীবশিক্ষার লাগি রেখে গেলেন মাত্র আটটি শ্লোক যা শিক্ষাষ্টকম্‌ নামে পরিচিত এবং আজকের প্রবন্ধের শুরুতেই তাঁর প্রথম শ্লোকের অংশ নিয়ে শুরু করা হয়েছে। তাঁর জ্ঞানের এই প্রভাব অঙ্গ, বঙ্গ কলিঙ্গের সকল স্থানে প্রাথমিকভাবে ছড়িয়ে পড়লেও পরবর্তীকালে তা সারা ভারত ছাড়িয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ছড়িয়ে পড়েছে কালের নিয়মে। তিনি বলেছিলেন, ‘পৃথিবীতে আছে যত নগরাদি গ্রাম/সর্বত্র প্রচার হবে মধুর কৃষ্ণনাম’। সেই ধারা মেনে আজকের গৌড়ীয় মঠ কিংবা নিত্যানন্দ আশ্রম আর ইস্কনের আন্তর্জাতিক শাখা সেই কাজ এগিয়ে নিয়ে চলেছে নিরলসভাবে।

        ভগবান কৃষ্ণের অংশ বলে মানা হয় নবদ্বীপের নিমাই পণ্ডিতকে। তিনি ভক্তের প্রেম আস্বাদিতে এই অবতারে এলেন একেবারে ভক্ত হয়ে। তাই তো সত্যের নারায়ণের ন্যায় চারহস্তে অস্ত্র নিয়ে এলেন না, ত্রেতার রামচন্দ্রের ন্যায় তীরধনুক নিয়ে রাজা হলেন না, আবার দ্বাপরের কৃষ্ণের ন্যায় সুদর্শন চক্রের ব্যবস্থা রাখলেন না। এলেন শুধু প্রেমকে সাথী করে। অন্তরে কৃষ্ণ আর বাহিরে রাধাভাব নিয়ে কলির জ্ঞানান্ধ জীবকে মুক্তি দিতে নিয়ে এলেন মধুর কৃষ্ণ নাম। ভক্তের পদধুলি মেখে গৌরাঙ্গ মহাপ্রভুর এক ভাবান্তর ঘটে। দ্বাপরে বৃন্দাবনে ছিলেন কালো কৃষ্ণ, ত্রিভঙ্গ মুরারী, রাখাল বালক। ভক্তের ভালোবাসায় সেই বঙ্কিম কৃষ্ণ আজ আজানুলম্বিতভুজৌ গৌরাঙ্গ, কালো কৃষ্ণ হয়ে গেল কাঁচা সোনার মত বর্ণ গোরা আর রাখাল গোপবালক কৃষ্ণ হয়ে গেল নবদ্বীপের সেরা পণ্ডিত। এখানে বাস্তবতা হল ভগবান দ্বাপরের রাজপরিবার ছেড়ে একেবারে নবদ্বীপের সাধারণ জনগণের মাঝে এসে যে মাধুর্য পেলেন তা হয়ে গেল এক জীবশিক্ষা। আমরা ধর্মের কথা যতই মুখে বলি না কেন, যার জন্য ধর্ম পালন, তাঁদের থেকে দূরে থেকে কোনদিন সেই ধর্ম পালন বা নির্দেশে কিছুই প্রতিপন্ন হয় না। তিনি পূর্ণভাবে বিশ্বাস করতেন যে আপনি আচরি ধর্ম অপরে শিখাও। নিজে এক গরীব ব্রাহ্মণ পরিবারে জন্ম নিয়ে যে জ্ঞান, যে প্রেম, যে সৌম্যকান্তি দেহে নবযৌবনের উদ্ভাসিত ডাককে উপেক্ষা করার ক্ষমতা আর মানুষকে আপন করে নেবার দক্ষতা তা জগতকে শিক্ষা দেবার জন্য যথেষ্ট। তাঁর মানবপ্রেমের বহ্নিশিখায় জ্বলে পুড়ে ছাই হয়ে গেছিল দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক বিভেদের বেড়াজাল। তিনি সবার কাছে হয়ে গেছিলেন পরম প্রেমময়। যবন হয়েও হরিদাস (হারেশ) বা চাঁদকাজী পেয়েছিলেন তাঁর সান্নিধ্য। অস্ত্র নয়, রাজনীতি নয় শুধু তাঁর প্রেমের বন্যায় ভেসে উত্তরণ ঘটেছিল সেসময়কার ত্রাস সমাজবিরোধী মাতাল দুই ভাই জগাই ও মাধাই আর চাপল গোপাল। এখানেই ফুটে ওঠে এক দর্শন। জীবের কাছে রক্তচক্ষু প্রদর্শনের থেকে বেশী দরকার প্রেম আর আগলে রাখার সহবৎ শিক্ষা, তাতেই ঘটবে রূপান্তর। কিন্তু আমরা সেই গৌরাঙ্গকে হাতের কাছে পেয়ে অনেকেই চিনতে পারি নি, আর অনেকেই চিনতে চাই নি। তাই তো লোচন দাস বড় আক্ষেপ করে বলেছিলেন-

অবতারের সার                   গোরা অবতার

          কেননা ভজিলি তাঁরে।

করি নীরে বাস,          গেল না পিয়াস

        আপন করম ফেরে।।

কণ্টকের তরু            সদাই সেবিলি (মন)

          অমৃত ফলের আশে।

প্রেম কল্পতরু            শ্রী গৌরাঙ্গ আমার

       তাহারে ভাবিলি বিষে।।

-----------------------------

সংসার ভজিলি           শ্রী গৌরাঙ্গ ভুলিলি

       না শুনিলি সাধুর কথা।

তোর ইহ পরকাল        দু’কাল খোয়ালি (মন)

        খাইলি আপন মাথা।।

 

        শ্রীচৈতন্যের শিক্ষা আর দর্শনের অপর একটি উল্লেখযোগ্য শ্লোক হল, ‘তৃণাদপি সুনিচেন তরোরিব সহিষ্ণুনা, অমানিনেন মানদেন কীর্তনীয় সদাহরি’। অর্থাৎ ঘাসের থেকেও নম্র হতে হবে, গাছের থেকেও সহনশীল হতে হবে আর গ্রামে যাকে কেউ মানেন না, তাঁকে সম্মান দিয়ে চলতে হবে তবেই হবে প্রকৃত বৈষ্ণব, তবেই হবে কীর্তনের অধিকারী। ঘাসের উপর দিয়ে যেমন কেউ হেঁটে চলে গেলে ঘাস প্রতিবাদ করে না, সময়ের সাথে সাথে নিজেকে মানিয়ে নেয়, বৃক্ষরাজির উপর কুঠারাঘাত করলে যেমন বৃক্ষ প্রতিবাদ করে না, তেমন আমাদের সবাইকে হতে হবে। তবেই প্রবাহিত হবে অমিয় প্রেমের ধারা, তবেই দূর হবে এই ঘন অন্ধকার। জাতপাতের বেড়াজাল আর ব্রাহ্মন্যবাদের উপরে উঠে তিনি সাম্যের গান গাইতেন। তাঁর অনুগামীদের মধ্যে সকল ধর্মের এবং সকল বর্ণের মানুষের ভিড় ছিল। মানুষকে দেবতা জ্ঞান করতে হবে, সেই কারণে কোন ব্যক্তির নাম রুচিসম্মত না হলে তিনি পরিবর্তন করে নতুন নামকরণ করে দিতেন।

        যিনি আসেন অনেকের জন্য তাঁকে মনে হয় কোনভাবেই একজনের কাছে আবদ্ধ রাখা যায় না কোনভাবেই। এত পাণ্ডিত্য নিয়ে নিমাই পণ্ডিত জগতের কাছে এক মনীষায় পরিণত হলেন সেই নিমাইয়ের কারণে সারাজীবন তিনজন নারী বেঁচে থেকেও মৃতপ্রায় অবস্থায় ছিলেন। তাঁরা হলেন মাতা শচী দেবী, প্রথম স্ত্রী লক্ষ্মীপ্রিয়া ও দ্বিতীয় স্ত্রী অভাগিনী বিষ্ণুপ্রিয়া। তিনি স্বীকার করেছিলেন সংসার ছেড়ে তিনি যে সন্ন্যাস নিয়ে সারা ভারতের সংস্কৃতি জগতে এক অনন্য বিপ্লবের কাণ্ডারি হয়ে উঠেছিলেন তা শচী দেবী ও স্ত্রী বিষ্ণুপ্রিয়া দেবীর অসীম ত্যাগের ফসল। তপ্ত যৌবনের আগুনে উড়ন্ত পতঙ্গের ন্যায় ঝাঁপ না দিয়ে উদাসীন ছিলেন। লক্ষ্মীপ্রিয়া সর্পাঘাতে মারা গেলেও তাঁর সাধনজীবনের অন্যতম সঙ্গী হতে পারতেন প্রেমময়ী রাজকন্যা বিষ্ণুপ্রিয়া। তাঁকে বঞ্চিত করে রাতের অন্ধকারে সন্ন্যাসের পথে পা বাড়িয়ে কাঁদিয়েছেন মা ও প্রিয়া কে। সেজন্য তিনি পরে আক্ষেপ করেছিলেন, যে কৃষ্ণপ্রেম তাঁর এই দায়িত্ব থেকে মুখ ঘুরিয়ে দিয়েছিল, কিন্তু তা ঠিক হয় নি। তিনি সেই আক্ষেপের কারণে নীলাচল থেকে নিত্যানন্দকে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সংসার করার জন্য। তিনি এটাও বলেছিলেন, নিতাই তুমি যাও সংসার করো, নইলে ভবিষ্যৎ অনুগামী বিবাহ, সংসার বা পরিবার থেকে সদা উদাসীন থাকবেন। সেটা কৃষ্ণ পথের পথিকদের জন্য শোভনীয় হবে না। ধর্মপালন বা কোন দর্শনের অনুগামী হওয়ার মধ্যে দিয়ে মানুষের জীবনচর্চায় নৈতিক চেতনার বিকাশ ঘটে। এর বাইরে ধর্মাচরণ কে ধর্মান্ধ বলাই শ্রেয়। চৈতন্যদেব তাঁর চেতনা ও দর্শনে সেটাই উপস্থাপন করেছেন বারেবারে। আজ প্রায় সাড়ে পাঁচশত বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেলেও তাঁর ভাবনা আর দর্শনের ক্রমবিকাশ ঘটেছে, একটুও ভাটা পড়ে নি। দেশ থেকে দেশান্তরে ছড়িয়ে পড়েছে সেই প্রেমের মন্ত্র। তাই শাস্ত্র আলোচনা বা মহাজন সম্পর্কে ব্যাখ্যা করতে গেলে জলে নামতে হবে। তীরে দাঁড়িয়ে জলের গভীরতা পরিমাপ করা যায় না। আমরা জানি, ‘দুধেতে নবনী আছে মন্থন কর যেয়ে/মোক্ষ অর্থ ঢাকা আছে গৌণ অর্থ দিয়ে’। বাইরে থেকে আমরা যা দেখতে পাই সেটা হল তথ্য কিন্তু অন্তর দিয়ে যা অনুভব করে প্রকাশ করতে হয় তা হল তত্ত্ব।

        তাঁর মত জ্ঞানী, পণ্ডিত, ত্যাগী, সন্ন্যাসী মানুষেরও যেমন খ্যাতি ছিল, তেমন ছিল খ্যাতির বিড়ম্বনা। জীবনের প্রথমভাগ থেকে তাঁর পাণ্ডিত্য আর সমাজের কুসংস্কার বা অপসংস্কার মুক্ত করতে ব্রাহ্মণসমাজের বিরুদ্ধে লড়াই করে শাস্ত্র ব্যাখ্যা করে সবাইকে পরাজয় করেও একে একে শত্রু বেড়েছে। ‘পণ্ডিত যে জনা, আজন্ম কানা/ শাস্ত্র ঘেঁটে মরে, শাস্ত্রের মর্ম বোঝে না’। এমন অনেক স্বঘোষিত পণ্ডিতের মানসিক অত্যাচার সহ্য করতে হয়েছে তাঁকে। নবদ্বীপ ছেড়ে নীলাচলে গিয়ে থাকলেন জীবনের শেষ ২৪ বছর। সেখানে রাজা প্রতাপাদিত্যের মত মানুষ তাঁর শিস্য হলেও সেখানে বঙ্গসংস্কৃতির এই উত্থান মেনে নিতে পারেন নি স্থানীয় ধর্মের ধ্বজাধারীরা। তাঁর অন্তর্ধান নিয়ে এক গভীর রহস্য আজও বিরাজ করে বাঙ্গালীর মনে প্রাণে। বিখ্যাত চৈতন্য গবেষক তথা ড. জয়দেব মুখোপাধ্যায় তাঁর অন্তর্ধান নিয়ে কাজ করতে গিয়ে তাঁকেও নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। এমন করুন পরিণতি প্রেমের পথযাত্রী চৈতন্যদেবের জন্য বরাদ্দ হয়েছিল যে তাঁর অন্তর্ধানের পরে প্রায় এক’শ বছর প্রকাশ্যে বাংলায় কীর্তন গান করার সাহস কেউ দেখাত না। আজ সময়ের সাথে সাথে তাঁর দর্শন বা তাঁর প্রভাব ভারতীয় সংস্কৃতি ছাড়িয়ে সারা পৃথিবীর মানচিত্রে কিভাবে জায়গা করে নিয়েছে সেটা সবার কাছে উন্মোচিত হয়েছে।


আজও নীলাচলবাসী অন্তর দিয়ে মানেন পুরীধামের সমুদ্রসৈকত কে কেন্দ্র করে তাঁদের যে পর্যটনশিল্প সারাবছর ধরে, তাঁর প্রকৃত কেন্দ্র কিন্তু পুরীর জগন্নাথ মন্দির। আর সেই জগন্নাথধামে মানুষের ভিড়, বাঙ্গালীর ভিড় হয় কিন্তু আমাদের মহাপ্রভুর প্রতি বাঙ্গালীর আবেগমথিত হৃদয়ের কারণে। যদিও তাঁরা স্বীকার করেন না প্রকাশ্যে। মানুষ আসেন মানুষ যায়, তবুও তিনি বেঁচে থাকেন তাঁর কর্মে, তাঁর ফেলে রাখা ভাবধারায়। আমাদের মহাপ্রভু বেঁচে আছেন আজও, থাকবেন আগামীতে শুধুমাত্র তাঁর দর্শন আর তাঁর কর্মে। বিশ্বাস বা অবিশ্বাস তো সময়ের দাস। গভীর সমুদ্রে ঝড় উঠলে নৌকার কোন যাত্রী নাস্তিক থাকেন না। পরিস্থিতি মানুষকে দেবতা বানায়, আবার পরিস্থিতি মানুষ মানুষকে মানুষ বলে মনে করতে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। এভাবেই মানুষের মাঝে মানুষ এসে দেবতা হয়ে চিরকাল রয়ে যায় আবার কেউ মানুষ হয়েও শয়তানের কারিগর বলে পরিচয় পায়। এভাবেই গড়ে ওঠে স্বর্গ, এভাবেই চোখের সামনে ফুটে ওঠে নরক। কল্পনার দরকার কি যদি বাস্তবের চেতনায় নিজের ভাবার ক্ষমতা থাকে। আজও আমরা যেভাবে উপহাস করি মায়াপুরের ইস্কনে বিদেশীদের মাটিতে লুটিয়ে কৃষ্ণনাম জপ করতে দেখে, ঠিক তেমনি যেদিন নবদ্বীপে মহাপ্রভু এসেছিলেন সেদিনও আমরা উপেক্ষা করেছি। প্রকৃত জ্ঞানচক্ষু না থাকলে দর্শন মেলে না ঘরের বাইরের পরিবেশের। তাই আমরা সাগর থেকে উত্তরে ছুটে যাই পাহাড় দেখতে আর তাঁরা দক্ষিণে আসেন সাগর দেখতে। নিজের কাছে যেটা সুপ্রাপ্য তা আর গুরুত্ব পায় না। এটাই দুর্ভাগ্য হয়ে রয়ে যায় চিরকাল। প্রেমের ঠাকুর শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভুকে আমার প্রণাম।


রচনাকাল : ২০/৬/২০২১
© কিশলয় এবং সনৎকুমার পুরকাইত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 3  Canada : 22  China : 3  Europe : 98  Germany : 2  Hungary : 27  Iceland : 1  India : 329  Iran, Islamic R : 1  Ireland : 11  
Japan : 3  Romania : 3  Russian Federat : 3  Saudi Arabia : 5  Taiwan : 1  Ukraine : 2  United Kingdom : 7  United States : 377  Vietnam : 1  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 3  Canada : 22  China : 3  Europe : 98  
Germany : 2  Hungary : 27  Iceland : 1  India : 329  
Iran, Islamic R : 1  Ireland : 11  Japan : 3  Romania : 3  
Russian Federat : 3  Saudi Arabia : 5  Taiwan : 1  Ukraine : 2  
United Kingdom : 7  United States : 377  Vietnam : 1  
© কিশলয় এবং সনৎকুমার পুরকাইত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
ভগবান শ্রীকৃষ্ণচৈতন্য মহাপ্রভু by Sanat Kumar Purkait is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১১০০৯৩৬৮
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী