এক প্রত্যন্ত গ্রামে বাস করতেন সরল মনের মানুষ হরপ্রসাদ চ্যাটার্জি। তিনি খুব দরিদ্র ছিলেন। ওনার ছোট্ট সংসারে একমাত্র কন্যা রুপা ও স্ত্রী কমলাদেবীকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল। তিনি পূজা করে যতটুকু উপার্জন করতেন তাতেই কোন রকম সংসার চলে যেতো। ওনার ধনদৌলত না থাকলেও মনের দিক দিয়ে তিনি সুখী ছিলেন । রুপা জন্মাবার পর থেকেই হরপ্রসাদবাবু চিন্তায় মগ্ন থাকতেন। কিভাবে তিনি রুপাকে একজন বড়ো ডাক্তার তৈরী করবেন। তারপর মেয়ে যখন প্রাইমারী স্কুলে পা দিল, তখন হরপ্রসাদ বাবু বুঝতে পারলেন যে মেয়েকে ডাক্তার তৈরী করার যে আশা তিনি করেছিলেন তা অলীক কল্পনা মাত্র ।
এদিকে মেয়ের পড়াশোনার খরচ, সংসারের খরচ এবং মেয়ের বিয়ে দিতে প্রচুর অর্থ প্রয়োজন, এতো টাকা তিনি কোথায় পাবেন বা কিভাবে রোজগার করবেন, এই দুশ্চিন্তা ওনাকে কালো মেঘের মতো ঘিরে ধরেছিল। তারপর তিনি একদিন ঘর থেকে কাজের সন্ধানে বেড়িয়ে পড়েন । ঘুরতে ঘুরতে একদিন বনের মধ্যে এক ভাঙা বাড়িতে প্রবেশ করেন এবং মনে মনে ভাবেন আজ এই রাত্রি টা এখানেই বিশ্রাম নিয়ে সকালে আবার বেড়িয়ে পড়ব। তারপর তিনি ঘরের এক কোনে চোখ বন্ধ করে বসে পড়েন। হঠাৎ একটা শব্দে ওনার ঘুম ভেঙে যায়, তখন প্রায় রাত ১২ টা। দেখলেন এক বিশাল কালো সাপ একটি কলসির মতো কি যেন জড়িয়ে ধরে আছে। ভয়ে ওনার জীবন যায় যায় অবস্থা তবে উনি সাহস করে একটু কাছে যান এবং একটা লাঠি দিয়ে সাপটিকে তাড়িয়ে দেন আর কলসির কাছে যেতেই দেখলেন ভিতর থেকে চকচকে এক আলো বেড়িয়ে আসছে, তিনি তা দেখেই হতভম্ব হয়ে যান । তিনি সঙ্গে সঙ্গে ভেবেনিলেন তার সমস্ত স্বপ্নই পূরণ হবে এবার। হুম, সেই কলসির ভিতর ছিল শুধুই সোনার মোহর।।।।
রচনাকাল : ১২/৫/২০২১
© কিশলয় এবং দীনবন্ধু দাস কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।