বিশ্বত্রাস করোনার ছোবলে... ১৪২৮ সূচনায় জীবন নিলো কেড়ে প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষ.....স্তব্ধ হলো শঙ্খনাদ (সমাপ্তি পর্ব)
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখক : লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
দেশ : India , শহর : New Delhi

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , সেপ্টেম্বর
প্রকাশিত ৯৩৫ টি লেখনী ৭২ টি দেশ ব্যাপী ২৫১০৪২ জন পড়েছেন।
বিশ্বত্রাস করোনার ছোবলে... ১৪২৮ সূচনায় জীবন নিলো কেড়ে
প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষ.....স্তব্ধ হলো শঙ্খনাদ (সমাপ্তি পর্ব)
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

নববর্ষে কি পেলাম? পেয়ে সব হারালাম
কবি শঙ্খ ঘোষ আর নাই
স্তব্ধ হলো শঙ্খনাদ, বসুধার আর্তনাদ
ক্ষণে ক্ষণে শুনিবারে পাই। 

শঙ্খ ঘোষ (৫ ই ফেব্রুয়ারি ১৯৩২ - ২১ শে এপ্রিল ২০২১) ছিলেন একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কবি ও সাহিত্য সমালোচক। তিনি ছিলেন একজন বিশিষ্ট রবীন্দ্র বিশেষজ্ঞ ও শক্তিমান সাহিত্যিক। তিনি কাব্য সাহিত্যে রবীন্দ্রনাথ ও জীবনানন্দ দাসের উত্তরসূরী ছিলেন। তাঁর প্রকৃত নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। ছদ্মনাম ছিল কুন্তক।

জন্ম অবিভক্ত বাংলার চাঁদপুরে, ১৯৩২ সালে। আসল নাম চিত্তপ্রিয় ঘোষ। প্রেসিডেন্সি কলেজ থেকে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতক। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর। পেশা হিসেবে গ্রহণ করেন অধ্যাপনাকেই। পড়িয়েছেন কলকাতার বঙ্গবাসী কলেজ, সিটি কলেজ এবং যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

১৯৬৭ সালে আমেরিকার আইওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক লেখক কর্মশালায় যোগ দেন। পরে পড়িয়েছেন দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়, সিমলার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব অ্যাডভান্সড স্টাডিজ এবং বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ে।

কবি শঙ্খ ঘোষের কথা ও কবিতা থেকে---
‘কখনো এমন হয়, হতে পারে, বানিয়ে তুলতে হয় সব
ইস্কুলই পুলিশফাঁড়ি।
আর পড়ুয়ারা?
পথে বা বিপথে তারা প্রত্যেকেই একে একে AK 47!’
(নিরুপায়)

‘সবাই আমার ভালো করতে চায়।
ওরা এসে আমার ভালো করতে চাইলে
ঘর ছেড়ে এগিয়ে যাই
ওরা কেটে নেয় আমার ডান হাতখানা
ঝুলিয়ে দেয় গাছের ডালে
এরা এসে আমার ভালো করতে চাইলে
মাঠ ছেড়ে এগিয়ে যাই
এরা কেটে নেয় আমার বাঁ হাতখানা
গেঁথে দেয় আলপথে।’
(ভালো)

 ‘স্বপ্নবাস্তব’ কবিতায় কবি লিখেছেন-

‘তাকিয়ে দেখি আমারই বসতির চারপাশে
ঘিরে আছে অচরিতার্থ সারি সারি শব।
পরেরই মুহূর্তে তিনি প্রাসাদে মঞ্জিলে ঢেকেছিলেন তাকে, আর
পা বাড়ালেন ফিরে যাবার জন্য।
আকুল হয়ে জিজ্ঞেস করি তখন: কিছু কি বলবেন আমাকে?
হেসে জানালেন তিনি:
একটাই শুধু কথা—
তোমার স্বপ্নে কোনো বাস্তব নেই, বাস্তবে নেই কোনো স্বপ্ন।’

ফুলের জলসায় কবি তাই নীরব থাকেন না। তিনি যেন নিরুচ্চার শুভর জেগে ওঠার প্রতীক্ষায়—
‘দাহকাজ সাঙ্গ করে যে যার মতো ফিরে গেছে সবাই
গোটা পাড়া শুনশান
কাছেই শেয়াল ডাকছে
ঘরের পাশে লেগে থাকা রক্তদাগ মুছে নিতে নিতে
বিড়বিড় করছে দাওয়ায় বসে থাকা একলা বুড়ো
জেগে থাকাও
জেগে থাকাও একটা ধর্ম।’
(বুড়ো)

সঙ্গ দেবার জন্য কোনো হাত নেই আর কোথাও, 
সংগোপনের মন বুঝবার মন—
কিসের ওপর ভর করেছ হদিশ তো নেই তারও
দাহর পরে দাহই অনুক্ষণ।
                         —শঙ্খ ঘোষ

বাংলা সাহিত্যের একটা যুগ যেন হঠাৎই স্তব্ধ হয়ে গেল। করোনা কেড়ে নিল আরও এক নক্ষত্রকে। সত্যি তো, আকাশের নক্ষত্রের স্থানেই তো আজ থেকে দেখা মিলবে প্রিয় কবি শঙ্খ ঘোষের। বিপ্লব ছিল রক্তে। যা ঝলকে পড়ত লেখায়। কবির লেখা পড়ে অনুপ্রাণিত হত তরুণ সমাজ। 

তথ্যসূত্র:  প্রথম আলো  ও আনন্দবাজার পত্রিকা

রচনাকাল : ২৫/৪/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 1  Germany : 2  Hong Kong : 1  India : 155  Russian Federat : 7  Sweden : 5  Ukraine : 5  United States : 156  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 1  Germany : 2  Hong Kong : 1  
India : 155  Russian Federat : 7  Sweden : 5  Ukraine : 5  
United States : 156  
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
বিশ্বত্রাস করোনার ছোবলে... ১৪২৮ সূচনায় জীবন নিলো কেড়ে প্রয়াত কবি শঙ্খ ঘোষ.....স্তব্ধ হলো শঙ্খনাদ (সমাপ্তি পর্ব) by Lakshman Bhandary is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৪৪৬২৭৩
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী