ভালবাসা শুধু ভালবাসা দ্বিতীয় খণ্ড
নবম পর্ব
সানাই বাজে ভালবাসা কাঁদে
লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
[এক]
-এটাই তোমার শেষ কথা?
-হ্যাঁ বাবা, অভিনব ছাড়া আমি কাউকে বিয়ে করতে পারবো না। আমি তাকে ভালবাসি বাবা।
-অভিনবকে তোমাকে ভুলে যেতে হবে মা। আগামীকাল পাত্রপক্ষ তোমাকে দেখতে আসবে। ওদের পছন্দ হলেই আমি ভালো দিন দেখে সেই পাত্রের হাতেই তোমার বিয়ের ব্যবস্থা পাকা হবে।
সুনীতার মা এবার এগিয়ে আসে। বলে- “মেয়েকে আস্কারা দিয়ে তুমি মাথায় তুলেছো। আগেই বলেছিলাম ভালো দিন ক্ষণ দেখে মেয়ের বিয়ে দিয়ে দাও। কলেজে পড়া ওর হবে না। তখন তো শোন নি এবার কি করবে তুমিই ভেবে দেখো।”
সুনীতা মায়ের পাশে এসে দাঁড়ায়। কাঁদতে কাঁদতে বলে- “মা, তুমি বাবাকে বুঝিয়ে বল না। ওকে ছাড়া আমি কাউকে বিয়ে করতে পারবো না।”
সুনীতার বাবা এবার হুংকার ছাড়েন। বলেন- “কি আছে অভিনবর মধ্যে। কোন কাজ করে না। বেকার। বেকার ছেলের হাতে তোমাকে দিলে পারবে তুমি সুখী হতে?”
সুনীতা বলে- “কাজ করে না ঠিকই কিন্তু ওর একটা মন আছে, বাবা মন। যা অন্য কারো ভালবাসা থেকে আলাদা। ওকে আমি কোনদিনই ভুলতে পারবো না মা।”
মাকে জড়িয়ে ধরে ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদতে থাকে সুনীতা।
চোখের জল! বড় ভয়ংকর জিনিস। মায়েরা মেয়েদের সব সইতে পারে, পারে না শুধু চোখের জল দেখতে। তাই সুনীতার মা বলে ওঠেন- “ওগো, তুমি পাত্রপক্ষকে বারণ করে দাও। বলবে- মেয়ের এখন বিয়েতে মত নেই। কলেজের পড়া শেষ করে তবেই বিয়ের পিঁড়িতে বসবে।”
এবার সুনীতার বাবা গর্জন করে উঠলেন। বললেন- “ওদের আমি আসতে বলেছি। আগামীকাল পাত্রী দেখতে আসছেন। এখন ওদের কি বারণ করা চলে? তোমরা কি ভাবো আমার কথার কোন দাম নেই।”
পরে আর একটু স্থির হয়ে বললেন- “তুমি একটু সুনীতাকে বোঝাও। কি আছে অভিনবর। না চাকরি, না টাকাপয়সা, ব্যাঙ্ক-ব্যালেন্স- নাথিং কিচ্ছু না। ওই ছেলেকে বিয়ে করলে তোমার মেয়ে সুখী হতে পারবে?”
এরপর আর কোন কথা নেই। অগত্যা সুনীতার বাবার কথাই থাকলো। আগামীকাল পাত্রপক্ষ পাত্রী দেখতে আসবেন- তার ব্যবস্থা করা হলো। সেদিন সন্ধ্যায় সুনীতার বাবা অভিনবকে ডেকে পাঠালেন। অবশ্য সুনীতাই অভিনবকে বলেছিল- “বাবা তোমাকে ডেকেছেন। আসবে কিন্তু অবশ্যই।”
সেদিন সন্ধ্যায় সুনীতা মাকে নিয়ে একটু ঘুরতে বেরিয়েছে। বাড়িতে কেউ নেই। সুনীতার বাবা একা বসে একটা বাংলা টিভি সিরিয়াল দেখছিলেন, এমন সময় অভিনব এলো। বলে- আপনি আমায় ডেকেছেন কাকাবাবু!
সুনীতার বাবা বললেন- “হ্যাঁ, বসো। তোমার সাথে কথা আছে।”
এরপর গম্ভীরভাবে বলতে শুরু করলেন। “আমি জানি তুমি সুনীতাকে ভালবাস? কিন্তু তোমাদের ভালবাসাকে আমি মেনে নেবো না। আর মনে রেখো- গরীব হয়ে একটি ধনীর মেয়েকে ভালবাসা অপরাধ। আর সেই অপরাধের প্রায়শ্চিত্ত তোমাকে করতে হবে।”
-“বলুন কি করতে হবে”?
- “ভালবাসার মিথ্যা অভিনয় করতে হবে। তুমি বলবে সুনীতা, আমি তোমাকে ভালবাসি না। যেটা ছিল সেটা হল মিথ্যা, অভিনয়। আমি আর একটা মেয়েকে ভালবাসি। তাকে নিয়ে আমি ঘর বাঁধতে চাই।”
“না, না, অমন কথা বলবেন না কাকাবাবু। আমি সুনীতাকে ভালবাসি, সুনীতাও আমাকে ভালবাসে। এর পর আমি যদি আপনার বলা কথাগুলো বলি- সুনীতা মনে কষ্ট পাবে। ওর কষ্ট মানে আমার যন্ত্রণা।”
“তুমি কি চাও না যে সুনীতা সুখী হোক। যদি তাই হয় তাহলে তাকে সুখী করতে একথা বলতে তোমাকে হবেই।”
এমনি সময়ে সুনীতাকে নিয়ে সুনীতার মা আসে।
বলে, “আরে অভিনব! কখন এলে? বসো, আমি তোমার জন্য চা নিয়ে আসছি”।
“না কাকীমা, বসবো না। আর চায়ের প্রয়োজন হবে না। আমি চলে যাচ্ছি কাকীমা।”
সুনীতা কিছুই বুঝতে পারে না। অভিনব এর আগে যতবারই তাদের বাড়ি এসেছে, নিজেই তার মাকে চায়ের অর্ডার দিয়েছে। আজ একি হলো অভিনবর।
অভিনব বলতে শুরু করে- “সুনীতার সাথে জরুরী একটা কথা বলার ছিলো। তাই এসেছিলাম”।
সুনীতা তাকে হাতে ধরে সোফায় বসায়।
সুনীতা বলে “কি জরুরী কথা? কিসের কথা? কার সাথে? নিশ্চয়ই আমার সাথে?”
বল অভিনব কি বলবে?
“এতদিন তোমার সঙ্গে আমার যে অবাধ মেলামেশা ছিল। সেটা ছিলো শুধু ভালবাসার অভিনয়। আমি তোমায় ভালবাসি না, বাসতে পারি না। সোনার চামচ মুখে দিয়ে তোমার জন্ম হয়েছে, কেন তুমি একটা গরীবের ছেলেকে ভালবেসে দুর্ভাগ্যের বোঝা মাথায় নেবে। তুমি আমাকে ভুলে যেও সুমিতা। আর কোন তোমার সাথে আমার দেখা হবে না। এই দেখাই শেষ দেখা।” কথাগুলো কোনরকমভাবে বলেই চলে গেল অভিনব।
সুনীতার মনে আজ বিষাদের ছায়া। তার চোখের সামনে থেকে পৃথিবীর মাটি সরে সরে যাচ্ছে। মাথার উপর আকাশটা হয়তো এখুনি সশব্দে ভেঙে পড়বে। সুনীতার চোখে টপ টপ করে দু’ফোঁটা অশ্রু ঝরে পরে সুনীতার দুই চোখে।
পরদিন সকালেই পাত্রপক্ষ এসে হাজির। সুনীতার মা- বাবা সবাই তাদের আপ্যায়নে ব্যস্ত। সুনীতার মনটা আজ ভালো নেই। তবু আজ মায়ের পরিয়ে দেওয়া বেনারসী শাড়িতে দারুণ লাগছে সুনীতাকে।
পাত্রপক্ষের মেয়ে পছন্দ হয়েছে। এবার দিনক্ষণ দেখে বিয়ের দিন ধার্য করা।
অবশেষে তাই হলো। আগামী ১২ ই ফাল্গুন, শুক্রবার বিয়ের দিন স্থির করা হোল।
সবাই বিয়ের আনন্দে মেতে ওঠে।
[দুই]
আজ ১২ ই ফাল্গুন, বিয়ের দিন। সকাল থেকেই বাড়িতে বিয়ের সানাই বাজছে।
আর সেই সাথে সানাইয়ের সুরে কাঁদছে ভালবাসা।
বিয়ে বাড়িতে সাউণ্ডবক্সে বেজে ওঠে করুণগীতি-
কেন রে তুই …………………..
নদীর কিনারায় মিছেই করিস আশা,
জীবন নদীর ঝড় তুফানে কাঁদছে ভালবাসা।
বিয়ের আনন্দে সবাই মেতে উঠেছে। মেয়েরা ঘন ঘন শাঁখ বাজাচ্ছে, এঁয়োরা উলুধ্বনি দিচ্ছে। লাল নীল সবুজের আলোয় ভরে উঠেছে বিয়েবাড়ি। তারপর শুভ মুহুর্তে বর ও বরযাত্রী সবাই এসে পৌঁছে গেল। হস্তবন্ধন, শুভদৃষ্টি, মালাবদল ও সিঁদুর দান সবই হল। ধীরে ধীরে সব আলো নিভে গেল। সানাই –এর সুর থেমে গেল।
আজ সকাল হতেই সুনীতার মনটা কু-গাইছে। বিদায়ের সময় তার মা-বাবা তাকে জড়িয়ে ধরে খুব কাঁদছে। তার মা সুনীতাকে কেঁদে কেঁদে বলছে-“আবার আসিস মা।”
সুনীতা কাঁদে নি। আজ তার চেয়ে সুখী আর কেউ নয়। চোখের জল ফেলা মানে ভাগ্যের উপর চরম অবমাননা করা, নিজের দুর্ভাগ্যকে বয়ে আনা। তাই সুনীতা তার মাকে বলে-“তোমরা কাঁদছো কেন মা, আমি তো তোমাদের পছন্দ করা পাত্রের হাত ধরে এই ঘর থেকে চলে যাচ্ছি। ভগবানের কাছে প্রার্থনা করি যেন আর কোনদিন আবার এই ঘরে না আসতে হয়। এতদিন পর্যন্ত তোমাদের যা খেয়েছি, যা পরেছি, তোমাদের ঋণ কোনদিনই শোধ করতে পারবো না। নতুন জায়গায় গিয়ে আমায় গড়ে তুলতে হবে আরও একটা সাজানো সংসার। তোমরা আমায় হাসিমুখে বিদায় দাও মা।” –এই বলে সুনীতা তার মা-বাবা ও আত্মীয়স্বজনদের প্রণাম করে।
বড় আশ্চর্য্য মেয়েদের ভাগ্য। যেখানে জন্মায়, সেই ঘরবাড়ি আত্মীয়স্বজন সবাইকে ছেডে় নতুন জায়গায়, নতুন পরিবেশে তাদের সংসার গুছোতে হয়। অথচ জন্মদাতা মা-বাবা অন্যের হাতে মেয়েকে দান করেই নিজেরা নিশ্চিন্ত হয়। এই তো সমাজের নিয়ম। আর এই সমাজ-ব্যবস্থা চিরাচরিত প্রথায় চলে আসছে যুগ যুগ ধরে। তাই তো বলি – মেয়েদের বিয়ে, বিয়ে নয়, স্নেহের বন্ধন থেকে মুক্ত করার এক অপকৌশল মাত্র। আসুন- প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার বিরুদ্ধে আমরা রুখে দাঁড়াই। শ্বশুরবাড়ি আর বাপের বাড়ি দুই জায়গায় যেন তারা সমান মর্যাদা পায়, দুই বাড়িতেই তাদের সমান অধিকার যদি প্রতিষ্ঠিত হয় তাহলেই মেয়েরা সুখী হতে পারবে।
গল্প এখানেই শেষ করার কথা। কিন্তু এত তাড়াতাড়ি এখানেই গল্প শেষ করলে কিছুর যেন একটা অভাব থেকে যায়। তাই গল্পের মোড় অন্য দিকে ঘুরে যায়। যেখানে আছে কিছুটা দুঃখ, কিছুটা যন্ত্রনা অথবা কিছুটা রোমান্টিক মূহুর্ত। এই গল্পকে বিয়োগান্তক করা লেখকের উদ্দেশ্য নয়। তাই গল্পটিকে আরও একটু রোমাঞ্চকর করে তোলা হলো। যাতে পাঠকের মনে শিহরণ জাগে।
সকলের চরণধূলি আর শুভ আশীর্বাদ মাথায় নিয়ে সুনীতা বরের সাথে ট্যাক্সিতে এসে বসলো। ড্রাইভার গাড়িতে স্টার্ট দিলো। বিদায়ের মূহুর্তে সুনীতা শেষ বারের মত বলে গিয়েছিল তার মাকে- “মা- মাগো- এরপর অভিনব যদি কোনদিন বাড়িতে আসে তাকে অসম্মান করো না মা। তাহলে আমি বড়ই কষ্ট পাব”।
[তিন]
আঁকা বাঁকা গ্রাম্যপথ পেরিয়ে শহরের বড় রাস্তায় এসে ড্রাইভার ট্যাক্সির স্পীড বাড়িয়ে দিল। ঠিক সেই মূহুর্তেই বিরাট একটা দূর্ঘটনা ঘটে গেল। একটা যাত্রীবাহী বাস এসে ধাক্কা দিল সজোরে। ট্যাক্সিটা ছিটকে পড়লো দূরে। ট্যাক্সি ড্রাইভার পলাতক। বর বধূর অবস্থা সংকটজনক। যাত্রীবাহী বাসের অনেকেই হতাহত হলো। গুরুতর অবস্থায় আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলো।
অজ্ঞান অবস্থায় সুনীতা হাসপাতালের বেডে শুয়ে আছে। স্যালাইন ও অক্সিজেন চলছে। জ্ঞান যখন ফিরলো সুনীতা বুঝতে পারলো তার মাথায় আঘাত লেগেছে। কিছুই মনে করতে পারছে না সে। নার্স এসে জিজ্ঞাসা করলো- কিছু মনে করতে পারছেন। বলুন তো কোথায় থাকেন, বাবা মা কোথায় থাকেন। ইত্যাদি ইত্যাদি। সুনীতা শুনছে, কিন্তু মনে করতে পারছে না কিছুই।
এবার কিছুটা প্রকৃতিস্থ হয়ে উঠেছে সুনীতা। একে একে সবই তার মনে পড়ছে। বিয়ে বাসর, আত্মীয় স্বজনের আনাগোনা, অভিনবর বাড়িতে আগমন, তার মুখের স্পষ্ট কথা। সবই এক এক করে সুনীতার চোখে ভেসে ওঠে। নার্স বললে- ফোন নম্বর দিন আপনার বাড়িতে খবর দেওয়া প্রয়োজন। সুনীতা বলে কোন প্রয়োজন নেই আপনি বরং এই নম্বরে ফোন করে যোগাযোগ করুন। সুনীতা ইশারায় তার ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে মোবাইল বের করে অভিনবর নম্বরটা খুঁজে নিতে বলে।
ক্রিং ক্রিং ক্রিং—
অভিনবর ফোন বেজে ওঠে। রিসিভ করে বলে- হ্যালো!
- হ্যালো! রয়্যাল সুপারলিটি হাসপাতাল থেকে বলছি। সুনীতা আপনার কে? তাকে গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
সংবাদ পেয়েই অভিনব ছুটে আসে হাসপাতালে। হাসপাতালে ঢুকতেই ডাঃ সুখেন্দু বোস অভিনবকে দেখে করমর্দন করে। বলে- “কনগ্র্যাচুলেশন অভি। কেমন আছিস?” অভিনব চিনতে পারে না। বলে- আপনাকে ঠিক চিনতে পারলাম না।
“আরে আমি সুখেন, তোর বাল্যকালের বন্ধু”।
সুখেন একটি পরিচিত নাম। অভিনবর সামনে ফুটে ওঠে সেই সুখেনের চেহারা। আজ তার আমূল পরিবর্তন। গলায় স্টেথিসকোপ, চোখে চশমা। অভি বলে- “ভালো আছি সুখেন। তুই কিন্তু দারুণ ইমপ্রুভ করেছিস। তোকে চেনাই যাচ্ছে না”। “বাই দি বাই সুখেন, তুই জানিস এই হাসপাতালে সুনীতা নামে এক পেসেন্ট ভর্তি হয়েছে। আমি তাকেই দেখতে এসেছি”।
এবার সুখেন বলে- “আয় আমার সাথে”।
অতঃপর দুজনেই সুনীতার কেবিনে আসে। তখনও স্যালাইন চলছিল। রিপোর্ট নিয়ে এলেন নার্স। রিপোর্ট দেখে ডাক্তার বললেন- কোন ভয়ের কারণ নেই। পরে হেসে সুনীতাকে বললেন- “কেমন আছেন সুনীতাদেবী। কোন অসুবিধা হচ্ছে”? “ভাল আছি স্যার! মাথার যন্ত্রণা কমেছে, কিন্তু মানসিক যন্ত্রণা আমাকে কুরে কুরে খাচ্ছে। চোখের সামনে যাকে দেখছি সেটা আমার কাছে স্বপ্ন মনে হচ্ছে”। সুনীতা জবাব দেয়।
অভিনব বলে- “স্বপ্ন নয় সুনীতা! আমি তোমায় কিছু বলবো বলে এসেছি। সেদিনের কথাগুলো আমার কথা নয় সুনীতা। এর পিছনে লুকিয়ে আছে এক অদ্ভুত রহস্য। তুমি আমায় ভুল বোঝ না সুনীতা”।
সুনীতা বলে- আমি জানতাম অভি আমি সেদিনই বুঝে ছিলাম তোমার বলা কথাগুলো তোমার মনের কথা নয়। তোমাকে জোর করে কে বা কারা এই কথাগুলো বলা করিয়েছে। কিন্তু আমি যে সব হারালাম অভি। আমার যে আর কিছুই রইলো না।
পরক্ষণেই ডাঃ সুখেন্দু বোস বলে ওঠে – আরও একটা দুঃসংবাদ আছে অভি। 5 নং কেবিনের পেসেন্ট আইমিন সুনীতার বরকে আমরা বাঁচাতে পারি নি। হোপলেস ডিয়ার ফ্রেণ্ড আমাদের কোন করার ছিল না।
অভিনব সুনীতার কাছে এসে বলে- দুঃখ করো না সুনীতা। ভাগ্যের ওপর কারো হাত নেই।
“জানি অভি, আমি জানি- ভাগ্যের উপর কারো হাত নেই। কিন্তু আমার ভাগ্যের আকাশে দুর্ভাগ্যের কালো মেঘটাকে আমি কি করে সরাবো”। পাড়া প্রতিবেশী যখন সবাই শুনবে বিয়ের দুদিন পেরোতে না পেরোতেই আমি স্বামী কে খেয়েছি। তার প্রত্যুত্তরে আমি কি জবাব দেবো”? সুনীতা কথাগুলো কান্নার সুরে বলতে থাকে।
অভিনব সুনীতার দিকে এগিয়ে আসে। বলে- “কেঁদো না সুনীতা। আমি তোমার ভাগ্যাকাশ থেকে দুর্ভাগ্যের কালো মেঘকে সরিয়ে দেবো। আমি আবার নতুন করে তোমার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দেবো।”
সুনীতার জীবনে দুর্ভাগ্যের মেঘ ধীরে ধীরে কেটে গেল। ধীরে ধীরে সে সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে উঠল। তারপর শুভদিন দেখে একদিন অভিনব তার সিঁথিতে সিঁদুর পরিয়ে দিল।
রচনাকাল : ২৪/৪/২০২১
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।