বিধিলিপি
আনুমানিক পঠন সময় : ৯ মিনিট

লেখক : শিব প্রসাদ হালদার
দেশ : India , শহর : কোলকাতা

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২১ , মার্চ
প্রকাশিত ১০ টি লেখনী ২৬ টি দেশ ব্যাপী ২৪৮৯ জন পড়েছেন।
আজ সলিলের বিয়ে।এই বিয়েতে সবার সম্মতি থাকলেও নিজের ইচ্ছা নেই। তবুও সুমনাকে বিয়ে করতে হবে। সলিল খুব স্মার্ট। উঁচু লম্বা সুদর্শন সুপুরুষ। যেন সাক্ষাৎ কার্তিক। তার বাহ্যিক চেহারার অহংকারে সে কলেজ লাইফে অনেক মেয়েকে ঠকিয়েছে। নাচিয়েছেও কম নয়। আর সেই সূত্রেই পরিচয় সুমনার সাথে। ওরা একে অন্যকে ভালোবেসে কাছে টানে। দিনে দিনে শুরু হয় ঘনিষ্ঠতা। পরিস্থিতি এমন রূপ নেয়- সেখান থেকে সলিল সরে যাবার চেষ্টা করলেও সুমনা সরে যেতে পারেনি। স্কুলশিক্ষক সনাতনবাবু তার মেয়ের এই পথভ্রষ্ট পরিণতির জন্য বড় লজ্জায় পড়ে গেলেন। উপায়ন্তর না দেখে সুমনার বাবা সলিলের বাবার শরণাপন্ন হলেন। সলিলের বাবা সুব্রতবাবু নিজের সন্তানের সাম্প্রতিক চারিত্রিক অধঃপতন সহ্য করলেন না। অকপটে স্বীকার করে নিলেন অবাধ্য সন্তানের অপকর্মের দায়। নিরুপায় হয়ে তিনি তাদের বিয়ের ব্যবস্থা করলেন।

                সলিল কিন্তু কিছুতেই এই বিয়েতে রাজি হলো না। সে চিরকাল একটু স্বার্থন্বেষী স্বাধীনচেতা। বাপের একমাত্র ছেলে সচ্ছল পরিবারে মায়ের অতিরিক্ত আদরে বেড়ে উঠেছে। সাথে সাথে সঙ্গদোষে পর পর যখন সম্মানের জলাঞ্জলি দিতে লাগলো তখন সুব্রতবাবু হয়ে উঠলেন বেপরোয়া। পূর্ণ মর্যাদার স্বীকৃতি দিয়ে পুত্রবধুরূপে সুমনাকে ঘরে তুলতে চাইলেন। সকলের প্রবল চাপে সলিল অনিচ্ছাসত্ত্বেও বিয়েতে রাজি হ'ল। তাদের বিয়ে হলো সাড়ম্বরে। আনুষ্ঠানিক ফুলশয্যাও হ'ল। কিন্তু সকলের অগোচরে ফুলশয্যার রাতে সুমনার কোন সজ্জাই সলিলকে সন্তুষ্ট করাতে পারলো না। পারলো না কিছুতেই তার মন গলাতে। সে আর কিছুতেই সুমনাকে এখন সহ্য করতে পারছে না। সে চায় না যৌবনের চারিত্রিক চঞ্চলতা সুমনাকে নিয়েই সীমাবদ্ধ থাকুক। সে চায় নিত্যনতুন মেয়ের সাথে বন্ধুত্ব। আর------------।

                  ছয় মাস কাটলো না। চরম অশান্তিতে ভেঙ্গে গেল জোর করে সাজানো নূতন ঘর। তার সিঁথির পবিত্র সিঁদুরের উজ্জলতা হয়ে গেল ম্লান। সুমনা ফিরে এলো বাপের বাড়ি। তাকে সবাই বোঝালো- "নারী জীবনে অনেক কিছু মানিয়ে নিতে হয়। নারী জীবনের সম্বল পিতা নয়- পতি। কেউ কেউ শোনালো- সতীর দেবতা পতি----।" কিন্তু সুমনা অন্তরের নরক যন্ত্রনায় জ্বলে মরলেও কেউ বুঝতে চাইলো না - যে তার পতি কত বড় মাপের অসতের অধিপতি!

           সুমনা আস্তে আস্তে সলিলের সব স্মৃতি মন থেকে মুছে ফেলতে লাগলেও একটা স্মৃতি সে আগলে রাখলো। তাদের বিয়ের ভিডিও রেকর্ডিং করেছিল কলেজের সহপাঠী টিঙ্কু। সুমনার অনুরোধেই টিঙ্কু রেকর্ডিংয়ের কাজটা হাতে নেয়। আর এটাই ছিল তাঁর জীবনের ব্যবসাভিত্তিক প্রথম পদক্ষেপ। এই ভিডিও ক্যাসেটটি যদিও আজ চরম বেদনার স্মৃতি তবুও সে এটাকে খুব যত্নে রাখতো টিঙ্কুর দেওয়া ভিআইপি সুটকেসে। সুমনার বিয়েতে এটাই সে দিয়েছিল বিশেষ উপহার হিসাবে।

             অগ্রহায়ন মাস। তার মাসতুতো বোন সোমার বিয়ের নিমন্ত্রণপত্র এসেছে জামশেদপুর থেকে। সনাতনবাবু আজ সুমনাকে নিয়ে এই বিয়েতে যেতে মানসিকভাবে বড় কষ্ট পাচ্ছেন সেটা সুমনা বুঝতে পেরেই সে নিজেই যাবার জন্য উদ্যোগী হ'ল। বিশে  অগ্রহায়ণ বৃহস্পতিবার সোমার বিয়ে। বৃহস্পতিবারে বিয়ের কথা শুনলেই তাদের গোটা পরিবারটাই যেন কুসংস্কারে আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। কারণ বৃহস্পতিবারেই সুমনার বিয়ে হয়ে অলক্ষ্মীর আলপনা এঁকে বাপের বাড়ি ফিরে এসেছিল। শিক্ষার আলোতে থেকেও যেন মনের দূর্বলতায় কুসংস্কারকে দ্রুত সংস্কার করতে পারেনি। তবুও সোমার শুভ পরিণয়ের শুভ মুহূর্তে উপস্থিত থেকে সুখী করতে না পারলে যেন বুকে জমা ব্যথার বোঝা কমবে না। তাই পুরনো ব্যথা ভুলে সোমবার ভোরেই ওরা রওনা হ'ল জামশেদপুরে। দুপুরের মধ্যেই তারা পৌঁছে গেল টাটার টেলকোর বির্শানগর। খবর পেয়ে দুর্গা এলো টাটার বিষ্টুপুর থেকে। দুর্গা সোমার বান্ধবী। তারও বিয়ে এক সপ্তাহের মধ্যে। দুপুরের খাওয়া-দাওয়া সেরে ওরা সবাই মিলে বিয়ের শাড়ি ও সজ্জা সামগ্রী দেখছে। কথাচ্ছলে দুর্গার মুখে তার হবু শ্বশুর বাড়ির বিবরণ শুনে সুমনা চমকে ওঠে। দুর্গা যেন গর্বের সাথে গড়গড়িয়ে বলে চলেছে তার শ্বশুর মশাইয়ের নাম সুব্রত দত্ত। ছেলের নাম সলিল দত্ত। দুর্গাপুর স্টিল পার্কে তাদের বাড়ি। বড়লোক বাপের একমাত্র ছেলে--------।

         হঠাৎ সুমনার দিকে তাকিয়ে দুর্গা থেমে গেল। কিছুতেই সে বুঝতে পারলো না হঠাৎ আবার কি হলো? সুমনা নিজেকে সামলে নিয়ে জিজ্ঞাসা করলো- আচ্ছা দুর্গা! তোরা কি ছেলে সম্পর্কে ভালো করে খোঁজ খবর নিয়েছিস? প্রত্যুত্তরে জানলো- তাদের এক দুরসম্পর্কের জামাইবাবুর মাধ্যমে এই সম্বন্ধ ঠিক হয়েছে। সে সম্প্রতি তাদের বাড়িতে প্রায়ই যাতায়াত করছে। তার সঙ্গেই পাত্র একদিন এসেছিল দুর্গাকে দেখতে। ছেলেকে দেখতে খুব ভালো। ছোট্ট সচ্ছল পরিবার। সুমনা ভাবলো- হয়তো সলিলের এতদিনে পরিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু সুমনার মনে ততক্ষনে জোর সন্দেহ দানা বেঁধেছে। সে ভাবতে পারছেনা- এই পরিবর্তন কি সম্ভব? কয়লা ধুলেও যে ময়লা যায় না। সে তা ছয় মাসে হাড়ে হাড়ে উপলব্ধি করেছে। সন্দেহ দূর করতে- সঙ্গে সঙ্গেই দুর্গার বাবা দীনেশবাবুকে ফোন করে দূর্গাদের বাড়িতে তখনই আসতে বললো। জরুরী ফোন পেয়ে দীনেশবাবু ছুটে এলেন। পাত্র সম্পর্কে জানতে চাইলে সুমনাকে তিনি সমস্ত ঘটনা জানালেন। এমন সুপাত্র তিনি হাতছাড়া করতে চান না বলেই তড়িঘড়ি বিয়েটা ঠিক করেছেন। তাছাড়া তার দুর সম্পর্কের জামাই ঝন্টুর আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে তিনি রাজি হয়েছেন। এত অল্প সময়ের মধ্যে এত ভালো সম্বন্ধ উপস্থিত করাতে তিনি ব্যক্তিগতভাবে ঝন্টুর নিকট কৃতজ্ঞ। এই কৃতজ্ঞতার অন্তরালে যে কত বড় সর্বনাশী স্বার্থপরতার সংকীর্ণতা লুকিয়ে আছে সাদাসিধা কন্যাদায়গ্রস্ত দীনেশবাবু কিছুই বুঝতে পারেননি। ভালো মানুষ সেজে ঝন্টু নির্ঝঞ্ঝাট দীনেশবাবুর সুখের সংসারে বরণ ডালায় করে হাজির করলো মস্ত বড় ঝঞ্ঝাট।

            সুমনা চোখের সামনেই ভয়ঙ্কর অমঙ্গলের কালো ছায়া দেখতে পেল। কি করবে নিজেই বুঝে উঠতে পারছে না। যেন মুহূর্তেই বোবা হয়ে গেল। সে নিজে যে জ্বালায় জ্বলতে জ্বলতে দাম্পত্য জীবন যুদ্ধে কলঙ্কের কালিমা লেপন করেছে সেই কালি সে কিছুতেই দুর্গার কপালে লাগতে দেবে না। যেভাবেই হোক এই বিয়ে বন্ধ করতেই হবে। সে উঠে গেল পাশের ঘরে। মিনিট পাঁচেক পরে ফিরে এলো। সঙ্গে একটি ভিআইপি সুটকেস। গম্ভীরতা কাটিয়ে স্যুটকেস থেকে বের করলো একটি ভিডিও ক্যাসেট। টিভিতে চালিয়ে দিয়ে জিজ্ঞাসা করলো- দেখুন তো এই ছেলের সঙ্গে কি আপনারা বিয়ে ঠিক করেছেন? ছবি দেখে দীনেশবাবু হতভম্ব! আর দুর্গার চক্ষু চড়কগাছ। সে এখন রণচণ্ডী দুর্গা।

          শিক্ষার তকমা লাগিয়ে আমরা একবিংশ শতাব্দীর চৌকাঠ পেরিয়ে এসেছি তবুও আজ আড়ালে-আবডালে করে চলেছি অশিক্ষিতের মত নিন্দনীয় কত কাজ। কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা স্কুলশিক্ষক দিনেশবাবুও এমন ভুল করতে দ্বিধা করলেন না। পণ প্রথা সমাজে আজ মস্ত বড় অপরাধ। তা জেনেও তিনি পঞ্চাশ হাজার টাকা সলিলের বাবাকে যৌতুক হিসাবে ইতিমধ্যে হাতে তুলে দিয়ে এসেছেন। বাকি দশ হাজার টাকা বিয়ের আগেই বিয়ে দিতে হবে। এটা বড্ড উপকারী দুর সম্পর্কের জামাই ঝন্টুর পরিষ্কার নির্দেশ।

           সোমাদের ঘরে সমবেত সবাই সলিল সুমনার বিয়ের ছবি দেখলো। দিনেশবাবু সুমনার কাছে সমস্ত ঘটনা জেনে কালবিলম্ব না করেই তিনি সোজা ছুটলেন টাটা নগর পুলিশ স্টেশনে। সঙ্গে নিয়ে গেলেন ভিডিও ক্যাসেট খানি। ভারপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসারকে সেটা দেখিয়ে অভিযোগ দায়ের করলেন। পুলিশ অফিসার যখন জানতে পারলেন এই ঘটনার আগেও সলিল পাত্র সেজে কয়েকবার প্রতারণা করেছে তখনই সঙ্গে সঙ্গে নির্দেশ গেল বর্ধমান পুলিশ সুপারের দপ্তরে। সেখান থেকে দুর্গাপুর বিধান নগর থানায়। দীনেশবাবু নিজেই গিয়ে পৌঁছালেন দুর্গাপুর। পুলিশের সহায়তায় উদ্ধার হল যৌতুকের টাকা। প্রতারণার দায়ে গ্রেফতার হ'ল সলিল। কিন্তু দুর্গার এখন কি হবে? দুঃসময়ের দুর্বিপাকে কে হবে তার সারা জীবনের জীবন সঙ্গী? এদিকে বিয়ের সবকিছু প্রস্তুত। মাঝখানে মাত্র কটা দিন। দীনেশবাবু এখন কি করবেন ভেবে পাচ্ছেননা। হঠাৎ মাথায় এলো ছয় মাস আগে তাচ্ছিল্যে তাড়িয়ে দেওয়া মেয়ের জন্য আগত সম্বন্ধের পাত্র দুলালের কথা। দুলালের পক্ষ হয়ে যারা সেদিন দুর্গাকে দেখতে গিয়েছিল তারা ফিরেছিল এক তিক্ততার অভিজ্ঞতা নিয়ে। সে কথা আজ দীনেশবাবুর অন্তরে বারবার খোঁচা মারছে। যতই ভাবছেন ততই যেন নিজেকে অপরাধী বলে মনে হচ্ছে। যে দম্ভে সেদিন তিনি তাকে উপেক্ষা করেছিলেন সেই দম্ভ আজ হয়ে গেছে চূর্ণ-বিচূর্ণ। আজ তিনি নিতান্ত অসহায়। তবুও নিরুপায় হয়ে অপরাধীর মতো অত্যন্ত বিনয়ের সুরে ফোন করলেন দুলালের বাবা দুলেন্দ্র ভৌমিকের কাছে।

         দুলেন্দ্রবাবু রাঁচি রামগড়ে থাকেন। গোলা রোডে তার নিজস্ব বাড়ি ও ব্যবসা। একমাত্র ছেলে দুলালের গায়ের রঙ একটু কালো হলেও সে চরিত্রবান । প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী হিসেবে তাঁর সুনাম আছে। চেহারার দিক থেকে তেমন সুদর্শন নয়। সুশ্রী সুন্দরী দুর্গার অহংকারের অপছন্দে সেদিন ফিরেছিল সবাই বড় ব্যথা নিয়ে। কিন্তু আজ সেই দুর্গার বাবা ভাগ্যের পরিহাসে দুলালের বাবার শরনাপন্ন। দুপুরের মধ্যেই তিনি পৌঁছালেন রামগড়। অপরাধীর বেশে হাতজোড় করে দুলেন্দ্রবাবুর নিকট প্রথমেই ক্ষমা চেয়ে নিলেন। তিনি খুলে বললেন সমস্ত ঘটনা।আজ তিনি দিশাহারা। অস্বস্তিতে অসহায় কন্যাদায়গ্রস্থ পিতার বর্তমান পরিস্থিতি তিনি বুঝতে পারলেন। তিনি ভুলে গেলেন পুরানো তিক্ততার স্মৃতি। হাতে হাত মিলিয়ে আত্মায় আত্মায় আবদ্ধ হবার সিদ্ধান্তে উপনীত হলেন। আত্মীয়তার সিদ্ধান্তে দুলেন্দ্র বাবু দীনেশবাবুর দুঃশ্চিন্তা দূর করলেন। তিনি কথা দিলেন পূর্বনির্ধারিত ওই দিনেই বিয়ে হবে। কিন্তু তখনও পাত্র দুলাল জানেনা কটাদিন বাদেই তার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে। সে তখন রাঁচি সদরে। তার নিজস্ব ব্যবসা স্টোন ক্রেসারের  লাইসেন্স রিনিউ এর জন্য আজ কয়দিন ধরে দৌড়াদৌড়ি করছে। সম্প্রতি ঝাড়খণ্ড সরকার স্টোন ক্রেসারের উপর কতকগুলি বিধি-নিষেধ জারি করেছে। সেজন্য সে বড় দুশ্চিন্তায় আছে।

              দীনেশবাবুকে আশ্বস্ত করিয়েই  তিনি ফোন করলেন দুলালের মোবাইলে। ফোন পেয়ে দুলাল যেন বেহাল।সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে সে কি করে কি করবে যেন ভাবতে পারছেনা। দুলেন্দ্রবাবু ফোনে ফোনে যোগাযোগ করলেন সমস্ত আত্মীয়-স্বজনের সাথে। আমন্ত্রিত আত্মীয়-স্বজনেরা বড় অস্বস্তিতে পড়লো। তারা ব্যস্ত হয়ে পড়লো দুলালের বিয়েতে আসার জন্য। সবাই ব্যস্ত শুভ বিবাহের শুভক্ষণের অপেক্ষায়।

              তড়িঘড়িতে একদিকে যখন বেজে উঠেছে দুর্গার বিয়ের বাজনা অন্যদিকে সুমনার হৃদয়ে উঠেছে ঝড়! ফেলে আসা মাত্র কটা দিনের দাম্পত্য জীবনের স্মৃতি দুমড়ে-মুচড়ে তোলপাড় হচ্ছে তার স্মৃতিপটে। নিষ্ঠুর নিয়তির নিষ্পেষণের মাঝে ক্ষণে ক্ষণে আজ ভেসে উঠছে পুরনো দিনের সেই স্মৃতি- সেই কথা---! হাসিখুশি প্রাণচঞ্চল টিঙ্কুর প্রাণের প্রাঞ্জল কথা---! টিঙ্কুও মনে মনে চেয়েছিল সুমনাকে আরও কাছে -আরও আপন করে নিতে। কিন্তু উড়ন্ত চঞ্চল দুষ্টু প্রজাপতি বারবার তার গায়ে পড়েও উড়ে গেছে। শুভ বিবাহের অধিপতি ছোট্ট প্রজাপতি তাদের শুভ পরিণয়ের সবুজ সংকেত দেয়নি। সুমনা প্রসন্ন হয়েছিল সলিলের প্রতি। তারাই পেয়েছিল প্রেমের পরশ। প্রেমের জোয়ারে তারা ভেসে গেল। তবুও কোনদিন তাকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী হিসাবে ভাবেনি।

             সেই থেকে টিঙ্কু তার মনে আর কোনো সুমনাকে আপন করে নেবার কথা ভাবেনি। সুমনার বিয়ের পরেও দেখা হয়েছে টিঙ্কুর সাথে। সুমনা অনুনয়ে বলেছিল -"যা হবার হয়ে গেছে। এখন তুমি তোমার মনের মত আর একজন সুমনাকে খুঁজে নাও। বিয়ে করে সংসারী হও--।" বিয়ে আর টিঙ্কু করেনি। পিছুটানহীন উদাসীন জীবনে ভাসিয়ে দিয়েছে গা। কল্লোলিনী কলকাতা ছেড়ে সে চলে গেল খড়গপুর।

        জামশেদপুরে দুদিন বাদেই দুলাল আসবে বিয়ে করতে। দুর্গার হবে গায়ে হলুদ- আসবে বরযাত্রী- হবে বিয়ে- সিঁথিতে পরিয়ে দেবে সিঁদুর- হবে বাসর---! আর সুমনার? আজকের ব্যস্ততার মাঝে কে নেবে তার মনের খোঁজ? তাকে আজও যে মনে রেখেছে সেই টিঙ্কুর টানে সুমনার মন টেনেছে। দুর্গার বিয়েতে যখন সবাই মেতে উঠেছে তখন সকলের দৃষ্টির অগোচরে সুমনা লুকিয়ে রওনা হয়ে গেছে খড়গপুর অভিমুখে। তার মনে উঠেছে ঝড়। বিক্ষিপ্ত হাওয়ায় সে ভাসতে ভাসতে এগিয়ে চললো-----!
রচনাকাল : ১০/৪/২০২১
© কিশলয় এবং শিব প্রসাদ হালদার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 3  Europe : 23  France : 1  Germany : 1  Hungary : 1  India : 107  Japan : 1  Russian Federat : 1  Saudi Arabia : 10  Ukraine : 3  
United Kingdom : 9  United States : 137  Vietnam : 1  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 3  Europe : 23  France : 1  Germany : 1  
Hungary : 1  India : 107  Japan : 1  Russian Federat : 1  
Saudi Arabia : 10  Ukraine : 3  United Kingdom : 9  United States : 137  
Vietnam : 1  
© কিশলয় এবং শিব প্রসাদ হালদার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
বিধিলিপি by Shibaprasad Halder is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১১১১৫৮২২
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী