একদিন জগত পতি বৈকুন্ঠাসনে বসি।
বিচার করিলেন আপনার মনে মন।।
সম্মুখে আগত কাল,হবে তাহা দীর্ঘপ্রায়।
ভয়াল রূপী কলিকালের উপস্থিতি লক্ষণ।।
স্মরণে করিয়া হরি প্রমাদ গনিল মানি।
কেমনে ত্বরিবে হায়, জগত জীব আমার।।
এমনিতে কলির জীব ,পঙ্কে ডুবে আছে।
অন্নগত প্রাণ,আর বিষয় বাসনাতে ।।
নাহি তাদের ধ্যান শক্তি,নাহি যাগ যজ্ঞের বল।
নাহি আছে পূজার্চনা,কেমনে ত্বরিবে জগত পারাবার।।
আমার সৃষ্ট জানি এ জগত সংসার।
তথাপি জগতে আমি নই, আমাতে জগত।।
কেমনে উদ্ধার পাবে ধরাতল বাসী।
নিশ্চয় করিব উপায় হইয়া নদীয়া বাসী।।
পুরবে মোর অংশ কলা, করিল অসাধ্য সাধন।
এবে আমি নিজে যাব,রূপ করিয়া সংবরণ।।
দেখিলাম আপন মনে করিয়া বিচার।
হেন কঠিন কার্য নহে দূতের আমার।।
আগের লীলায় বৃন্দাবনে, গেলাম দুই রূপে।
এক আত্মা দুই জন রাধাকৃষ্ণ হয়ে।।
পুনরায় যাইব নিজে ,দুইরূপ এক হয়ে।
অন্যভাবে সম্ভব নহে,নাম প্রচারিতে।।
কান্তি মোর গৌরসুন্দর,অন্তরে রাধাভাব।
শিখাইব জগতজীবে নাম লইবার।।
নাম বিনা কলিকালে, কোন পথ নাই।
অন্য পথে গেলে তুমি, কুল নাই আর।।
সময় অনেক গত হল,আর দেরী নয়।
সম্মুখে ফাল্গুনী পূর্ণিমা, সর্বশুভময়।।
চন্দ্রগ্রহণ,সন্ধ্যাকালে যত নদীয়া বাসী।
আসিলেন গঙ্গাতীরে, অবগাহন লাগী।।
কীর্তন, খোল -করতালির, আর হরিবোল ধ্বনি।
মাতাইল নদীয়া নগর বিভেদ ভাব ভুলি।।
জয়গানে, ভগবানে, মাতিল সংসার।
ঘন- ঘন হুঙ্কার দেয়, ভক্তবৃন্দ বারবার।।
ভাব তাদের এই,যেন অশুভ না আসে আরবার।
নাম নিয়ে যায় ঘরে, প্রনমি বারংবার।।
হেনকালে গোলক পতি, শচীগর্ভ আশ্রয়করি।
আবির্ভূত হলেন নদের চাঁদ, আমার গৌরহরি।।
কত পূর্ণিমা আসে যায়, নিরবচ্ছিন্ন ধারায়।
এই পূর্ণিমা বিদিত হল গৌর পূর্ণিমায়।।
রচনাকাল : ২২/৩/২০২১
© কিশলয় এবং তাপস কুমার সামন্ত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।