ভোট আগত,'ভোটের মাদল' বাজছে গুরু গুরু,
রঙ বদলের,দল বদলের মহোৎসবও শুরু!
'হাওয়া-মোরগ রাজনীতিবিদ' যতেক ধুরন্ধর,
নিয়েও ঝুঁকি,মারে উঁকি অন্য দলের গড়!
কৃষিজীবী,শ্রমজীবী আর বৃত্তিজীবীর মত
আমজনতার,সর্বহারার নেতা শত শত,
ভোটের টিকিট চাইতে হাজির মন্ত্রী-নেতার দ্বারে,
মওকা বুঝে ফয়দা লোটার উপায় একাধারে।
গায়ক,বাদক,উকিল,লেখক,শিল্পী,চিকিৎসক,
সবারই লোভ সেবার ভেকে হাতিয়ে নেবার হক!
শাসক দলের ছত্রছায়ায় বাড়াতে মান,কেতা,
শিল্পপতি,ব্যবসায়ী মায় দক্ষ অভিনেতা,
ফকির,যোগী,কোচ,খেলোয়াড় জনসেবার ছলে,
ভোটে দাঁড়ায় নাম লিখিয়ে রঙবেরঙের দলে।
যদিও মুখে দেশসেবা আর জনসেবার নাম,
অন্তরালে সবার সাধন আপন মনস্কাম!
নানা মতের নানা পথের দল ও দলের জোট,
দাঁড়িয়ে ভোটে করছে দাবী,'চাই জনতার ভোট'।
মিছিল,শ্লোগান,জনসভার বিরাট আয়োজন,
লক্ষ্য আপন দলকে জয়ী করার আবেদন।
ভোটপ্রচারে নেত্রী-নেতা হাজির দ্বারে দ্বারে,
যেন কতই আপন ঘরের মানুষ একেবারে!
দেওয়াল জুড়ে আত্মপ্রচার,গরম গরম বুলি,
উন্নয়নের হিসেব-নিকেশ,প্রতিশ্রুতির ঝুলি।
উন্নয়নের ফিরিস্তি দেয় সকল প্রধান দল-
“স্কুল বানাবে,কলেজ হবে,হবে শপিং মল।
রাস্তা হবে ঝকঝকে আর আলোতে ঝলমলে,
আবর্জনা জমবে না আর,ভাসবে না আর জলে।
স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসাতে লাগবে না আর টাকা।
বেকার যারা চাকরি হবে ব্যবস্থা সব পাকা।
ক্ষুদ্র,বৃহৎ শিল্প হবে,হাজারো কারখানা।
দারিদ্র্য দূর হবে দেশের পূর্ণ ষোল আনা!"
অভিজ্ঞতায় প্রায় দেখা যায় প্রতিশ্রুতিই সার!
ভোটের পরে নেতার নাগাল পায় না কেহ আর।
জনগণের দুঃখে কাতর যে নেতারা আজ,
জিতলে ভোটে আত্মসুখে তারাই মহারাজ!
উন্নয়নের এই যে প্রচার,কাদের উন্নয়ন?
কারচুপিতে লোপাট আধেক,ভেট ও কমিশন!
আমজনতার ভাগ্যে জোটে ছিঁটেফোঁটাই অতি,
জনগণের রায়ে জিতে বজ্জাতি,হুজ্জতি।
জনগণের বোকামি আজ দেখলে জাগে ভয়,
এত ঠকেও ওদের বুঝি শিক্ষা হবার নয়!
নেতা সেজে,মন্ত্রী সেজে ঠকায় যারা আজ,
জেনেবুঝেও জিতিয়ে তাদের টিঁকাই কেন রাজ?
অল্পদিনের জন্য কিছু লোক ঠকানো যায়,
ঠকার বোঝা বাড়লে শেষে ঠেকিয়ে রাখাই দায়!
মিথ্যা ব'লে লোক ঠকিয়ে করলে হাসিল গদি,
ভবিষ্যতে হারিয়ে যাবে,"মানুষ জাগে যদি"।
সমর কুমার সরকার/শিলিগুড়ি
রচনাকাল : ১২/৩/২০২১
© কিশলয় এবং শ্রী সমর কুমার সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।