শিবের উল্টোপুরাণ
নারীর প্রতি তুষ্ট অতি ভোলা মহেশ্বর,
চাইলে পরেই প্রদান করেন মনের মতন বর।
ভক্তিভরে আকন্দ আর ধুতুরা,বেল পাতা,
মাথায় দিয়ে জল সেচনেই পরম খুশী পিতা
নারীকে দেন রূপে গুণে শ্রেষ্ঠ ধনী পতি,
কমজোরী ঐ পুরুষগুলোর হয় তাতে দুর্গতি।
বাছাই সেরা সুন্দরীরা শ্রেষ্ঠ পতি পেয়ে,
অহঙ্কারে অন্য পুরুষ দেখেই না তাকিয়ে।
ক্রমাগত ঘা খেয়ে সব পুরুষ সাধারণ
দল বেঁধে তাই শিবের কাছে করেন নিবেদন-
"হে অগতির গতি,তুমি নিজে পুরুষ ভোলা,
তবুও কেন তোমার প্রভু একচোখো এই লীলা!
সুন্দরী ঐ নারীগুলো ঢাললে মাথায় জল,
ক্ষেপা ভোলা খুশি হয়ে হও কেন চঞ্চল?
যা ওরা চায় বর দিয়ে দাও শুধুই ওদের বেলা,
একবারো ভাবোনা মোদের করছো অবহেলা?
সুন্দরীদের প্রতি তোমার এতই স্নেহের টান,
শ্রেষ্ঠ পুরুষগুলোই বেছে ওদের করো দান।
সুন্দরীরা বর পেতে চায় কোটিপতি ধনী,
যাদের আছে গাড়ি,বাড়ি,সোনা,টাকার খনি।
বেলপাতা ও ধুতরা পেলেই বর দিয়ে দাও তাই,
আমরা যারা গোবেচারা সুন্দরী কই পাই?
বাছাই করার পরে যে সব পড়তি থাকে হায়!
বাধ্য হয়েই তাদের আনি,দুঃখেতে প্রাণ যায়।
এমনতরো অবিচারে ভুগেই হাড়ে হাড়ে -
ঠিক করেছি তুষ্ট করে ভোলাবো তোমারে।
শুনেছি ঐ ভালবাসো গাঁজা,কারণ বারি।
সব কিছু যোগাবো প্রভু,চাই শুধু সুন্দরী।
বিলাতি মদ দেবো তোমায়,কড়া পাকের গাঁজা,
আপেল,কলা,কাজু,খেজুর,ঝাল চানাচুর ভাজা।
কেবল তোমার বরের ধারা বদলে দিতে হবে,
তোমার বরে সুফল শুধু পুরুষেরাই পাবে।”
যে যুগেতে ঘুষের টাকায় টলে বিচারপতি,
মন্ত্রী টলে,যন্ত্রী টলে,কোটাল মহামতি,
গায়ক,বাদক,সাধক টলে,টলে যতেক নেতা,
লেখক টলে,সাংবাদিকও বদলে ফেলে কেতা,
সেই যুগেতে সামলানো লোভ নয়তো ছেলেখেলা
বিলাতি মদ,গাঁজার লোভে বদলে গেলো ভোলা!
মহিলারা যতই এখন মাথায় ঢালুক জল,
পুরুষ যেমন চায় তেমনই মেলে তাদের ফল।
শিব না পেয়ে বাঁদর জোটে,জোটে পিশাচ নর,
উড়ণচণ্ডী স্বামীর জ্বালায় ভোগে জীবন ভর।
সমাজেতে ছড়িয়ে থাকা যত ভূতের দল
অসহায়া নারী পেলেই দেখায় আপন বল।
শিবের ত্রিশূল করে না আর অসুরে সংহার।
নারীরা আজ পরাজিত তাই দেখো বারবার।
শিবের দয়ায় উল্টোপুরাণ,ঠকছে এখন নারী,
পুরুষ দলে আমিও ছিলাম,শেষে স্বীকার করি!
সমর কুমার সরকার/শিলিগুড়ি
রচনাকাল : ১০/৩/২০২১
© কিশলয় এবং শ্রী সমর কুমার সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।