তোমার হাসিটুকুই না হয় দেখুক সবাই। তোমার কষ্ট গুলো, তোমার যন্ত্রণাগুলো না হয় লুকোনোই থাক। একান্ত তোমার ব্যক্তিগত হয়েই থাক।
এই যে তুমি হাসছো, পরিপাটি করে নিজেকে গুছিয়ে রেখেছো ঠিক যেমন সকলে চায়। ভেতরে যে ভেঙেচুরে চুরমার সেটা কি কেউ টের পায়?
পাবেও না। তুমি যে বড্ড যত্ন করে ভাঙচুরের শব্দ আড়াল করে রাখতে শিখে গেছো। তুমি হারবে না, হেরে গেলে চলবে না যে। সবাই হয়ত বলবে তুমি মুখোশধারী। দিনভর সবার কাছে ভালো আছি-র মুখোশ পরো তুমি। হ্যা মুখোশটা তোমার কাছে ভীষণ দরকারি। সবাই তোমার কাজল দেখুক, তোমার চোখের জলটুকু না হয় কাজলের আড়ালেই থাক। চোখের জল লুকোতে তুমি আজকাল ভীষণ পারদর্শী।
এই যে তোমায় সুখী ভেবে হিংসেও করে কেউ কেউ। তোমার খুব ভালো লাগে তাই না? তুমি মনে মনে হাসিতে ফেটে পড়ো। নিজেকে জয়ী মনে করো। তুমি পেরেছো তোমার "তুমি"টাকে লুকিয়ে রেখে একটা মিথ্যে কাঠামোকে "তোমার প্রতিরূপ" হিসেবে মেলে ধরতে তুমি পেরেছো।
ভেতরে ঝড় উঠুক, প্লাবন আসুক, সব তোলপাড় হয়ে যাক। ওপরে কেউ তার আঁচটুকুও পাবেনা। সবাই শুধুই তোমার হাসিমাখা মুখ দেখবে, গোছানো পরিপাটি একটা শক্ত কাঠামো দেখবে। সহানুভূতি দেখানোর এতটুকুও সুযোগ পাবেনা কেউ। আহা উহু করে মিথ্যে সান্ত্বনা দেওয়ারও কেউ সুযোগ পাবেনা। দিনের শেষে যখন সূর্যটা ঘরে ফিরবে তার কাজ মিটিয়ে, যখন ঘুটঘুটে অন্ধকারে ছেয়ে যাবে চারদিক তখন তুমিও ঘরে ফিরবে। সারাদিন পড়ে থাকা মুখোশটা খুলে পাশে রাখবে। ভেতর থেকে টেনে বের করে আনবে তোমার আসল স্বত্তাটাকে। ততক্ষণে চোখের কাজল মুছে যাবে। গড়িয়ে পড়বে নোনা জল। নিজের কাছেই নিজেকে সপে দেবে তখন। সারারাত নিজেকে ভেঙেচুরে আবার একটা নতুন দিনের জন্য তৈরি করবে নিজেকে।
শুরু হবে আবার একটা মুখোশপরা দিন।
রচনাকাল : ৯/৩/২০২১
© কিশলয় এবং মনি রায় ঘোষ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।