স্বচ্ছন্দ্য
আনুমানিক পঠন সময় : ৩ মিনিট

লেখক : দীনবন্ধু দাস
দেশ : India ,

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২১ , ফেব্রুয়ারী
প্রকাশিত ১৯ টি লেখনী ১৯ টি দেশ ব্যাপী ৪২৩১ জন পড়েছেন।
হঠাৎ আমি ছুটতে ছুটতে পৌঁছে গেলাম একটি সুন্দর দেশে। সেখানকার সুন্দরময়  দৃশ্য দেখে, আমি যেন মুগ্ধ হয়ে গেলাম । আমি মনের আনন্দে চারিদিক শুধু ঘুরে ঘুরে দেখতে থাকলাম। কি অপূর্ব জায়গা।  এক পলকে আমার চোখে পড়লো একটি নদী। আমি ছুটে গিয়ে দেখলাম নদীর জল যেন হালকা স্রোতে বয়ে যাচ্ছে। নদীর ধারে ধারে লাল, সাদা পদ্মফুলেরা  হাসি মুখে আমাকে যেন স্বাগতম জানাচ্ছে ওদের দেশে।  আমিও বুক ফুলিয়ে আরো কাছে গিয়ে দেখলাম নদীর জল নয়, এতো মুখ দেখার আয়না। নদীর অতল থেকে মৎস্যকন্যারা লেজ নাড়িয়ে নাড়িয়ে আমাকে ওদের সুন্দর নাচ দেখাচ্ছে। আর শত শত ঝিনুক বার বার মুখটি খুলে তাদের মুক্তোর উজ্জ্বল জ্যোতি আমায় দেখাচ্ছে । আমি তো খুশিতে কেঁদেই ফেললাম, হঠাৎ আমাকে এক মৎস্যকন্যা জিজ্ঞাসা করলো আচ্ছা তুমি কাঁদছো কেন বন্ধু? আমি জল ভরা চোখে উত্তর দিলাম কত সুন্দর এই নদীর জল কতোনা শান্তির পরিবেশ। এখানে এসে আমার মৃত মন যেন প্রাণ খুঁজে পেল। কিন্তুু আমাদের ওখানে নদীর ধারে তো বসাই যায় না। কারণ বসলেই পচা দুর্গন্ধে আমাদের মাথা যেন ফেটে যায়। কিন্তুু এখানে এতো সুন্দর কিভাবে আছে? বা কে পরিস্কার করে এই নদীর জল? মৎস্যকন্যারা হেসে হেসে উত্তর দিল, এখানে কেউ এই জল  পরিস্কার করে না। কারণ তোমাদের ওখানকার মতো কেউ এখানে নোংরা আবর্জনা ফেলে না, বুঝতে পেরেছো বন্ধু । তারপর তারা আবার লেজ নাড়তে নাড়তে চলে গেল নদীর গভীরে । আচমকা আমার নাকে ভেসে এলো হাজারও ফুলের গন্ধ, মনটা আমার আরো মেতে উঠলো । আমি  এই গন্ধকে অনুসরণ করতে করতে পৌঁছে গেলাম স্বর্গের যেন বাগানে । রঙবেরঙের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে সাজানো গোছানো এই পরিবেশ । চারিদিক বিভিন্ন রকমের ফল ও ফুল গাছে সাজানো এই বাগানখানি।প্রতিটি গাছে ফল ও ফুলে ভরে আছে। আর দেখছি ফুলের উপর প্রজাপতি ও ভ্রমরের গুন গুন রবে সারা বাগানটা যেন মেতে উঠেছে। আমি আরো দেখছি পাকা ফলের উপর বিভিন্ন রকমের পাখিরা দল বেঁধে বসে বসে ফল খাচ্ছে আর নানান সুরে গানও গাইছে, কেউ আবার মনের আনন্দে গাছের ডালে বাসার ভিতরে থাকা বাচ্চাদের জন্য নিয়েও যাচ্ছে। তারা কত খুশিতেই না বাস করে এখানে।আমি আর দাঁড়িয়ে থাকতে পারলাম না চুপ করে বসে পড়লাম কোনের মধ্যে থাকা বড়ো চাপা ফুল গাছটির নিচে । আমি তাদের প্রশ্ন করলাম - আচ্ছা বন্ধুরা, তোমরা তো এখানে সুখেই আছো, কিন্তুু আমাদের দেশে কেন তোমরা এই ভাবে থাকোনা? যদি থাকতে তাহলে আমরা  তোমাদের পেয়ে কতো খুশিতেই আমরা আমাদের জীবন অতিবাহিত করতে পারতাম, কেন তোমরা সবাই মিলে এখানে চলে এসেছো? তখন গাছেরা উত্তর দিল, আমরা তো ওখানেই ছিলাম কিন্তুু স্বার্থপর মানুষেরা আমাদের শান্তিতে বাস করতে দিলো না যে । কারণ তারা নিজেদের চাহিদা মেটানোর জন্য আমাদের কেটে ফেলছিলো যে । আমরা অনেক অনুরোধ করেছি, কিন্তুু তারা শোনেন নি আমাদের কথা। এবং আমাদের বাঁচাবার মতো কেউ সেখানে ছিল না। তাই আমরা কাঁদতে কাঁদতে এখানে চলে এসেছি । হঠাৎ কিচিরমিচির শব্দে পাখিরা বলে উঠলো আর আমরাও চলে এসেছি কারণ আমাদের খাবার ও আশ্রয়ের  অভাবের জন্য । আর আমরা কখনই ফিরে যাব না তোমাদের দেশে। একথা শুনে আমার হৃদয় ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেল, আর যেন চোখের জল বাঁধনই মানছে না ।এমন সময় একদল পরী এসে আমার চোখের জল মুছিয়ে, সুন্দর গানের সুরে নৃত্য করে আমার মনের সব দুঃখকে দূর করে দিল ।কখন জানিনা মনের আবেগে আমিও নাচতে শুরু করেছিলাম ওদের সাথে । হঠাৎ মায়ের এক লাঠির আঘাতে ঘুম ভেঙে দেখি, আমি সেই ছেঁড়া কাঁথাতেই শুয়ে আছি । ঝটপট বিছানার উপর উঠে বসে চোখ দুটো ভালোভাবে মুছে আর একটু হেসে ভাবলাম, তাহলে কি আমি এতক্ষণ স্বপ্ন দেখছিলাম ।।
রচনাকাল : ২২/২/২০২১
© কিশলয় এবং দীনবন্ধু দাস কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 3  China : 10  France : 2  Germany : 1  India : 68  Ireland : 3  Russian Federat : 6  Saudi Arabia : 5  Sweden : 21  
Ukraine : 4  United States : 86  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 1  Canada : 3  China : 10  France : 2  
Germany : 1  India : 68  Ireland : 3  Russian Federat : 6  
Saudi Arabia : 5  Sweden : 21  Ukraine : 4  United States : 86  
লেখক পরিচিতি -
                          দীনবন্ধু দাস পূর্ব বর্ধমান জেলার রামপুর গ্রামে ১০ই মে মাসে জন্মগ্রহণ করেন।

বর্তমানে উনি বাংলায় স্নাতক বিভাগে পাঠরত। উনি ওনার ঠাকুরদা 'শ্রী হারাধন দাস' এর কাছে সাহিত্যচর্চার অনুপ্রেরণা পেয়েছেন। 

এসবের পাশাপাশি বাগান তৈরি করা এবং গান-আঁকার প্রতি তার শখ আছে। 
                          
© কিশলয় এবং দীনবন্ধু দাস কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
স্বচ্ছন্দ্য by Dinabandhu DAS is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৩৭৭৪৫৭
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী