আজ ২৩শে জানুয়ারির সকাল। চারিদিকে শুধুই "নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু"-র নাম আর দেশাত্মবোধক গান, দেশের পতাকা সব কিছু দিয়েই ঘেরা আবেশে ভরা সকাল। কিন্তু , বছরের বাকি দিনগুলো কি সত্যিই মনে পড়ে সেই মহাপুরুষের কথা? নেতাজি সম্পর্কে লিখতে গিয়ে মন আবেগে ভরে যায়।
দেশের একশো তিরিশ কোটি মানুষ যার অপেক্ষায় সেই মানুষটা যদি সত্যিই ফিরে আসতো তবেই প্রকৃত অর্থে আমার দেশ স্বাধীন হতো। আমার দেশ কথাটা বলার মতো , স্বাধীনতার স্বাদ আস্বাদ করা যে কি অমৃত যে মহাপুরুষ আমাদের বোঝালেন তাঁকে অন্তরের শতকোটি প্রণাম জানাই তাঁর জন্মদিনে। ২৩শে জানুয়ারি অর্থাৎ আজ ভারতের শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মদিন। তাঁর শৈশব থেকে কৈশোর আর কৈশোর থেকে যৌবন সবটুকু কথা তো ছোটো থেকে পড়ার বইয়ে মুখস্থ করেই আসছি তাই নতুন করে কিছু আমার বলার অপেক্ষা রাখে না। আসলে নেতাজি যে ছোটো থেকেই আমাদের মনে প্রাণে রক্তের মধ্যেই মিশে আছেন।
জীবনের দাবি মেনে আমরা রোজের কাজে মেতে থাকি ঠিকই কিন্তু এই অভস্থ্য যাপন প্রণালীর মধ্যে কিছু কথা যখন অপ্রত্যাশিত ভাবে জীবনে আনন্দ দেয় তখন তা অন্তরের অন্তস্থল স্পর্শ করে , এবং তা তখন ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব হয়ে পড়ে। তেমনই এক রোজের দুপুরে যখন 'আমি নেতাজিকে দেখেছি' সবেমাত্র শেষ করেছি তখনই বিভিন্ন ওয়েবসাইটে নেতাজি সম্বন্ধে পড়তে পড়তে হঠাৎই পেলাম "মুখার্জি কমিশনের রিপোর্ট"। ওই "মুখার্জি কমিশনের রিপোর্ট" পড়ে আমার মনে হয়েছে, বিতর্ক চলুক আর চলুক, তথ্য নির্ভর আলোচনা যেখানে গল্পকে সমর্থন করবে কিছু ইতিহাস নির্ভর তথ্য।
শোনা যায়, ফৈজাবাদের এক বাড়িতে নেতাজি থাকতেন। আলফ্রেড ব্যাগ নামে এক মার্কিন সাংবাদিক এবং আরও অনেকে দাবী করেছিলেন যে ফৈজাবাদের "ভাগবনজি" বা যাঁকে আমরা "গুমনামি বাবা" বলে জানি উনি এবং নেতাজি একই ব্যক্তি। কিন্তু তা প্রমাণিত সত্য নয়। নেতাজিকে, গুমনামি বাবা বলে ধরে নেওয়ার বিতর্ককে বাঁচিয়ে রেখেই লিখছি যে এই আলফ্রেড ব্যাগ হলেন প্রথম সাংবাদিক যিনি জনসমক্ষে প্রথম পণ্ডিত জহরলাল নেহরু কে আপত্তি জানিয়ে বলেন যে নেতাজির মৃত্যু ১৯৪৫ সালের ১৮ই আগস্ট তারিখে তাইহোকু বিমানবন্দরে ঘটা বিমান দুর্ঘটনায় হয়নি। আসলে সেইদিন ই শুধু নয় সেই বছরও কোনো বিমান দুর্ঘটনা ওই জায়গায় ঘটেই নি। ১৯৪৫ সালের ২৯শে আগস্ট তারিখে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত এক সাংবাদিক বৈঠকে নেহরু ব্রিটিশ সরকারের কাছে একটি "plea for clemency" বা "অপরাধ থেকে মুক্তির আর্জি" জানাচ্ছিলেন নেতাজির জন্য। এটা খুব সম্ভবত উনি করেছিলেন যাতে নেতাজিকে যুদ্ধপরাধী বা "War Criminal" হিসাবে ঘোষণা না করা হয়। ঠিক এই সময়েই আলফ্রেড ব্যাগ বেশ উত্তেজিত ভাবে নেহরুর বক্তব্যে হস্তক্ষেপ করে বলেন যে সুভাষ চন্দ্র বসু অবশ্যই একজন যুদ্ধপরাধী বা "War Criminal" এবং তিনি বেশ ভালো ভাবেই জীবিত কারণ তিনি নিজেই তাঁকে সাইগন শহরে (যা আজকের ভিয়েতনামের হো চী মিন সিটি) ঠিক চারদিন আগেই দেখেছেন। এই খবরে নেহরু যে খুব আশ্চর্য হয়েছিলেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না এবং বিষয় গড়িয়েছিল বহুদূর।
এই ঘটনার পরও আলফ্রেড ব্যাগ নেতাজি সম্বন্ধে অনুসন্ধান চালাতে থাকেন কিন্তু তিনি কোনোদিনই নেতাজির শুভাকাঙ্ক্ষী ছিলেন না কারণ নেতাজি সম্বন্ধে তিনি কোনোদিনই প্রশংসাসূচক মন্তব্য করেন নি। ড: ক্যাপ্টেন লক্ষ্মী সেহগলের সাক্ষাৎকার উনি নিয়েছিলেন শুধুমাত্র অনুসন্ধান চালানোর জন্য। ১৯শে জুন ১৯৪৬ সালে আলফ্রেড ব্যাগ "ট্রিবিউন পত্রিকা" তে লিখলেন --- "সারা ভারতে সবাই বলাবলি করছেন যে সুভাষ চন্দ্র বসু তিব্বতের দিক দিয়ে সাধুর বেশে ভারতীয় সীমান্ত অতিক্রম করার চেষ্টা করে চলেছেন। সুভাসবাবু সেই ভারতীয় যাঁকে ব্রিটিশ আধিকারিকরা সবচেয়ে বেশি ভয় পান এবং তিনি যদি ভারতে ফিরে আসেন তাহলে সমগ্র ভারতে এক তুমুল গোলযোগের সৃষ্টি হবে।"
এই মহাপুরুষটির সম্বন্ধে যত পড়েছি যত জেনেছি তত অবাক হয়েছি। এমন এক ব্যক্তিত্ব সম্বন্ধে লিখতে গেলেও যে গায়ে কাঁটা দেয়, ভাবতে হয়। "গুমনামি বাবা" র গোলক ধাঁধা থেকে বেরিয়ে এসে এবার চোখ রাখি দেশের নায়কের জানা না জানা আখ্যানে।
১৯৪৩ সালে ২১ শে অক্টোবর সিঙ্গাপুরে নেতাজি তৈরি করেছিলেন প্রথম স্বাধীন ভারতের সরকার। আর্জি হুকুমতে আজাদ হিন্দ যাকে বলা হয় "The Provisional Government of Free India", অর্থাৎ এক অস্থায়ী সরকার। যে সরকারের রাষ্ট্রনায়ক, সেনাপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী তিনি একমাত্র তিনি। আমাদের দেশে প্রথম সরকার যখন গঠন হয়েছিল তখন নয়টি দেশ মান্যতা দিয়েছিল। তার মধ্যে জাপান, ফিলিপিন্স, চায়না, রাশিয়া ইত্যাদি ছিল। এই সরকারের কোর্ট ছিল, মুদ্রা ছিল, ব্যাংক ছিল, বেতার ছিল আবার সেই সরকারের আলাদা মন্ত্রণালয় অবধি ছিল। এই সময় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চরম মুহূর্ত অর্থাৎ এই সময় জাপানের হিরোশিমা নাগাসাকি তে বোমা বর্ষণের ফলে তারা আত্মসমর্পণ করলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের কাছে। এরই ফলে নেতাজির আজাদ হিন্দ ফৌজ কে পিছিয়ে যেতে হয়েছিল। কিন্তু একটি মুদ্রা পর্যন্ত তিনি কারুর বাকি রাখেননি। নিয়ম কানুন মেনে এই সরকার গঠন করা হয়েছিল। এই সময় কর্ণেল শওকত মালিক, নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর নেতৃত্বে উড়িয়েছিলেন "মৈরাং" ভারতের স্বাধীন পতাকা। এই সরকারের এক আলাদা স্তব ও ছিল "শুভ সুখ"। এই গানটি আসলে কবিগুরুর "জনগণমন অধিনায়ক জয় হে" র ওপর ভিত্তি করে গঠন করা হয়েছিল। নেতাজি, মুমতাজ হোসেন এবং কর্ণেল আবিদ হাসান সফরানী কে অনুরোধ করেছিলেন গানটি হিন্দি ভাষায় অনুবাদ করে দিতে এই সময়ে অর্থাৎ ১৯৪৩ সালে। এই সংগীত পরিচালনার নির্দেশকের ভূমিকায় ছিলেন ক্যাপ্টেন রাম সিংহ ঠাকুর।
এই প্রসঙ্গে বলি, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের জন্য পৃথিবী তখন উত্তাল। ব্রিটিশের মতো শক্তির বিরুদ্ধে তিনি, অবশ্য তিনি কোনোদিনই এই দোর্দণ্ড প্রতাপ ব্রিটিশ শক্তিকে তোয়াক্কা অবধি করেননি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন নেতাজির জনপ্রিয়তায় ভীত হয়ে ব্রিটিশ সরকার ভারত রক্ষা আইনে ১৯৪০ সালে তাঁকে মারাত্মক বিপ্লবী রূপে গ্রেফতার করে। প্রথমে "আলিপুর সেন্ট্রাল জেল" এ বন্দি করে রেখে পরে তাঁর এলগিন রোডের বাড়িতে তাঁকে নজরবন্দি করে রাখার ব্যবস্থা করে। এখান থেকে ১৯৪১ সালে ১৯ শে জানুয়ারি পুলিশের চোখে ফাঁকি দিয়ে প্রথমে তিনি মথুরাতে যান। তারপর তিনি "গিয়াসউদ্দিন" ছদ্মনামে কাবুলে যান এবং সেখান থেকে মস্কোতে যান এবং স্ট্যালিনের কাছে অসহযোগিতা পেয়ে ১৯৪১ সালের ২৮ শে মার্চ জার্মানির রাজধানী বার্লিনে আসেন। বার্লিনের প্রবাসী ভারতীয়গণ তাঁকে "নেতাজি" নামে আখ্যা দেন এবং তাঁকে "জয় হিন্দ" ধ্বনিতে বরণ করে নেন। এখানে তিনি হিটলারের বিদেশ মন্ত্রী রিবেন ট্রপ এবং ইতালির মুসোলিনীর সঙ্গে দেখা করে জার্মান সরকারের সহযোগিতায় জার্মানির হাতে বন্দি ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে তিনি "ভারতীয় মুক্তিবাহিনী" গঠনের চেষ্টা করেন। এই সময় বার্লিন বেতারকেন্দ্র থেকে তিনি নিয়মিত ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী সংগ্রামের আহবান জানাতেন। এদিকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পর সাফল্য নেতাজির স্বপ্নকে আরও উজ্জ্বল করে তোলে। উত্তর ভারতের অভ্যুত্থান ঘটানোর ব্যর্থ চেষ্টার পর বিপ্লবী রাসবিহারী বসু জাপানে চলে গিয়ে বিপ্লবীদের সংগঠিত করার চেষ্টা করে ১৯৪২ সালের মার্চ মাসে টোকিও এবং জুন মাসে ব্যাংককে দুটি সম্মেলন আহবান করেন। ওই দুটি সম্মেলনের গৃহীত প্রস্তাবে "Indian Independence League" স্থাপিত হয়। দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয় এবং জাপানের হাতে পরাজিত ভারতীয় যুদ্ধবন্দীদের নিয়ে ১৯৪২ সালের ১ লা সেপ্টেম্বর বিপ্লবী রাসবিহারী বসু "আজাদ হিন্দ বাহিনী" গঠন করলেন। বিপ্লবী রাসবিহারী বসু এবং ক্যাপ্টেন মোহন সিংহ এর সভাপতি এবং সৈন্যধ্যক্ষ নিযুক্ত হলেও পরে মোহন সিংহের উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও লোভের জন্য যোদ্ধা রাসবিহারী বসু তাঁকে সরিয়ে দিয়ে নিজেই সর্বময় কর্তৃত্ব গ্রহণ করেন। ব্যাংকক সম্মেলনে আহবান করে এই সময় সুভাষ চন্দ্র বসুকে জাপানে আনা হয় এবং তিনি সেই আহ্বানে সাড়া দিয়ে সকল প্রতিকূল অবস্থায় এক দুঃসাহসিক সমুদ্র যাত্রায় বিপদের ঝুঁকি নিয়ে ডুবো জাহাজে ১৯৪৩ সালে ১৩ই জুন টোকিও তে আসেন। টোকিও তে তিনি জাপানি প্রধানমন্ত্রী তোজো এবং অন্যান্য সরকারী কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনা করেন এবং তাঁরা নেতাজিকে ভারতের মুক্তি সংগ্রামের জন্য সবরকম সাহায্যের প্রতিশ্রুতি দেন। এরপর নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসু সিঙ্গাপুরে এলে যোদ্ধা রাসবিহারী বসু তাঁকে সাদরে বরণ করে নিয়ে ১৯৪৩ সালের ১৪ই জুলাই তাঁর হাতে Indian Independence League এবং Azad Hind বাহিনীর দায়িত্ব অর্পণ করেন। আজাদ হিন্দ ফৌজের নারী বাহিনীর নেতৃত্ব দিয়েছিলেন শ্রীমতী লক্ষ্মী স্বামীনাথন এবং তাঁর বাহিনীর নাম ছিল " ঝাঁসির রানী ব্রিগেড"। দায়িত্ব গ্রহণের পরই নেতাজি সিঙ্গাপুরে একটি অস্থায়ী "আজাদ হিন্দ সরকার" গঠন করে সমস্ত ভারতবাসীর উদ্দেশ্যে আহবান জানান। তাঁর নেতৃত্বে "দিল্লি চলো" ডাক এক অভূতপূর্ব উন্মাদনার সৃষ্টি করেছিল। এইসময় নেতাজির বাহিনী বার্মার মউডক বন্দরে প্রচণ্ড বোমা বর্ষণ করে এবং ব্রিটিশ সৈন্য তাতে ফিরে যেতে বাধ্য হয়। ১৯৪৩ সালের ৬ ই নভেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী তোজো নেতাজির হাতে "আন্দামান" ও "নিকোবর" দ্বীপপুঞ্জ দুটি অর্পণ করলে ১৯৪৩ সালের ৩১ শে ডিসেম্বর নেতাজি ওই দুটি দ্বীপের নামকরণ করেন যথাক্রমে "শহীদ দ্বীপ" এবং "স্বরাজ দ্বীপ"। এখান থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের ওপর নেতাজি আঘাত হানার পরিকল্পনা করেছিলেন। পূর্ব ভারতের প্রায় ১৫০ মাইল এলাকা আজাদ হিন্দ ফৌজের দখলে আসে, কিন্তু বিশ্বযুদ্ধের গতি পরিবর্তন এবং মিত্র বাহিনীর হাতে জাপানের পরাজয়ের ফলে "আজাদ হিন্দ বাহিনী" তেও বিপর্যয় ঘনিয়ে আসে। সুভাষ চন্দ্র বসুর বার বার আবেদন সত্ত্বেও জাপান সরকার সাহায্য বন্ধ করে দেয়।ফলে বাধ্য হয়ে তাঁর বাহিনীকে অস্ত্র সংবরণের আদেশ দিয়ে সুভাষ চন্দ্র বসু ১৯৪৬ সালের ২৩ শে ফেব্রুয়ারি টোকিও র উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে যান। পথে বিমান দুর্ঘটনায় তাঁর তথাকথিত মৃত্যু সংবাদে আজাদ হিন্দ বাহিনীর পরাজয় সম্পূর্ণ হয়। বহু প্রতিকূল পরিবেশ, সামরিক সরঞ্জাম, খাদ্য ও রসদের পর্য্যাপ্ত সরবরাহের অভাব সত্ত্বেও আজাদ হিন্দ বাহিনীর সদস্যরা অভূতপূর্ব শৌর্য বীর্য ও পরাক্রমের পরিচয় দিয়েছিল। দেশের মানুষের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা ব্যতীত আজাদ হিন্দ বাহিনীর এই পরাক্রম দেখে ব্রিটিশ সরকার যথার্থ উপলব্ধি করেছিল যে ভারতে তাদের সাম্রাজ্য আর বেশিদিন টিকিয়ে রাখা সম্ভব নয়।
এই মানুষটি নিজের ছাত্রাবস্থায় অসম্ভব মেধাবী ছিলেন ওনার ভবিষ্যৎ অন্যরকম হতে পারতো কিন্তু শুধুমাত্র আমাদের জন্য আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য তিনি সর্বস্ব ত্যাগ করলেন। এই মানুষটি ছিলেন সবার থেকে আলাদা। এই যে আমরা এতো সুখ স্বাচ্ছন্দ্য, দুঃখ কষ্টের কথা ভাবি কিন্তু এই মানুষটি সম্বন্ধে যতটুকু জেনেছি তাতে মনে হয়েছে কিসের সুখ, কিসের স্বাচ্ছন্দ্য, কিসের দুঃখ আর কিসেরই কষ্ট!
এই মানুষটির একটাই প্রেম ছিল আর তা ছিল দেশ। মানুষ যখন কোনো কিছুর মধ্যে নিজেকে খুঁজে পায় তখনই তার সেটার ওপর ভালোবাসা যত্ন তৈরি হয় আর নেতাজি নিজের দেশের মধ্যেই নিজেকে খুঁজে পেয়েছিলেন। কিন্তু শেষ অবধি, নিজের দেশের লোকেরাই তো তাঁর আপন হয়নি। যাঁদের জন্য এতো স্বার্থ ত্যাগ তারা কিছুই দেয়নি সেই অর্থে তাঁকে।
নেতাজি বলতেন----
"কর্মণ্যেবাধিকারস্তে মা ফলেষু কদাচন।
মা কর্মফলহেতভূর্মা তে সঙ্গোহস্তকর্মণি।।"
নেতাজি আমাদের মাথা তুলে বাঁচার অধিকার শিখিয়ে দিয়ে গেছেন। কিন্তু মানুষটা শেষ অবধি কোথায় হারিয়ে গেলেন তা আমরা আজও অবধি সঠিক ভাবে জানতে পারলাম না। তাই নতুন করে প্রতিটি বই পড়ার পরও আশ মিটছে না।
আমার জীবনের আদর্শকে অন্তরের শত কোটি প্রণাম জানিয়ে শেষ করি...
"ভারতবাসী ভাবতে ভালোবাসে, তাই ভালোবাসা থাকুক মানুষ নেতাজিতে, নেতা সুভাষে । যার জীবন প্রতিটা বাঁকে ইতিহাসকে চ্যালেঞ্জ করে আবার অলৌকিককে আলিঙ্গন করে অনায়াস দক্ষতায়।"
সুমি ভট্টাচার্য্য
তথ্যসূত্র : ----- মুখার্জী কমিশনের রিপোর্ট
তথ্যসূত্র : ----- "আমি নেতাজিকে দেখেছি" শ্রী নারায়ণ সান্যাল
তথ্যসূত্র : ----- "সুভাষ চন্দ্রের অন্তর্ধান কাহিনী" শ্রী উত্তমচাঁদ
তথ্যসূত্র : ----- বিভিন্ন ওয়েবসাইট
রচনাকাল : ২৩/১/২০২১
© কিশলয় এবং সুমি ভট্টাচার্য্য কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।