অঘ্রানে ধানের খেতে..... সোনা ধানের হাসি
নবান্ন উত্সব অনুগল্প (চতুর্থ পর্ব)
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
নবান্ন কৃষিকেন্দ্রিক উৎসব। আবার এটাকে ঠিক উৎসবও বলা চলে না। বলা চলে রিচুয়াল বা অবশ্য পালনীয় আচার বা প্রথা। জীবন যখন কৃষির সঙ্গে যুক্ত, তখন তার আচার-প্রথা হবে শস্যকেন্দ্রিক, এটাই স্বাভাবিক। শস্য বোনা থেকে শুরু করে তোলা এবং সংরক্ষণ করা—সবকিছুকে ঘিরেই তাই পৃথিবীর সব কৃষিকেন্দ্রিক জনপদে দেখা যায় উৎসব আর আচার পালনের ঘটা। ইউরোপ, এশিয়ার প্রায় সব দেশে খুঁজলে নতুন ফসল তোলার উৎসব পাওয়া যায়।
ফ্রান্সের প্রোভান্স শহরে প্রতিবছর আগস্ট মাসের শেষ রোববার পালিত হয় নতুন ফসল তোলার উৎসব। চীনে পালিত হয় মিড অটাম ফেস্ট। ভারতের আসামে ভোগালি বিহু বা মাঘ বিহু, পাঞ্জাবে লহরি, ওডিশায় নুয়াখাই, তামিলনাড়ুতে পোঙ্গল। এ ছাড়া ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে আরও বিভিন্ন নামে নতুন শস্য তোলার বিভিন্ন উৎসব হয়। দেবী শ্রী উৎসব নামে শস্য তোলার উৎসব হয়
ইন্দোনেশিয়ার বালিতে, মিয়ানমারের ফসল তোলা উৎসবের নাম হতামানে পিউ। বিভিন্ন সংস্কৃতির এসব ফসল তোলার উৎসবের বিভিন্ন নাম হলেও একটা জায়গায় সবার মিল আছে। আর সেটা হলো প্রতিটি উৎসবের মূল আকর্ষণ খাবারদাবার।
শুধু যে বাঙালিরাই খাদ্যবিলাসী, তেমনটা বলা যাবে না। নতুন ফসল তোলার উৎসব পৃথিবীর সব সংস্কৃতির মানুষ নতুন শস্যে তৈরি খাবার দিয়েই উদ্যাপন করে থাকে। চীনের মিড অটাম ফেস্টের প্রধান আকর্ষণ মুন কেক। পদ্ম ফুলের বীজসহ নানা ধরনের বীজ দিয়ে তৈরি এই কেক হলো পারিবারিক মিলনের প্রতীক।
মিয়ানমারের হাতামে পিউ উৎসবে রান্না করা হয় হাতামে। ভারতের সব প্রদেশের নতুন শস্য তোলার উৎসবে রান্না করা হয় হরেক রকম খাবার। আমাদের দেশেও নতুন ফসলে রান্না হয় খাবার বা অন্ন। আর সে জন্যই আমরা বলি নবান্ন।
রচনাকাল : ১২/১২/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।