কালী কালী মহাকালী...... কালরাত্রি দেবী চণ্ডিকা
এক অজানা তথ্য জেনে নিন।
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
মা কালির জিহব্বা বের করেছিলেন কেন তা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু মা কালীর জিহ্বা বের করা আসলে একটি গূঢ় প্রতীক। সেই রহস্য এর অর্থ আমরা জানি না। এই রহস্যের অর্থ বুঝলেই জেনে যাবো জীবন ধারণের কৌশল। মা কালী জিহ্বা বের করে আসলে সমগ্র সৃষ্টি কে দিয়েছেন এক শিক্ষা। সেই শিক্ষা হলো জীবনধারণের শিক্ষা। আজ আমি আপনাদের বলবো মা কেন জিহ্বা বের করা রূপেই পূজিত হন। তাঁর এই রূপের আসল অর্থ কী?জানেন? অসুর নিধনের জন্য উমা কালী রূপ ধারণ করলেন। সমগ্র জগৎ কে শিক্ষা দিলেন নারী যখন অন্তরের শঙ্কাকে ত্যাগ করে তখনই সে শংকরী হয়ে ওঠে। নারী যখন কালকে নিয়ন্ত্রণ করে তখনই সে মহাকালি হয়ে ওঠে। প্রতিটি নারীর অভ্যন্তরেই যে কালী রূপ আছে সেই শিক্ষা দিতেই মায়ের শক্তি রূপ ধারণ। মা কালীর জিহ্বা বের করার আসল অর্থ কী? মা কালীর রূপ যখন দেখবেন তখন একটু নজর রাখবেন মা শুধু জিহ্বা বের করেই রাখেন না। তিনি লাল জিহ্বাকে সাদা দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরে থাকেন। এটি একটি গূঢ় রহস্য।এখানে সাদা রং সত্ত্ব গুনের প্রতীক আর লাল রং রজ গুনের প্রতীক। লাল জিহ্বাকে সাদা দাঁত দিয়ে কামড়ে ধরার অর্থ হলো সত্ত্বগুণ দিয়ে রজ গুণকে দমন করা। অনেকে বলে মা কালী রক্ত পান করেছেন তার জন্য জিহ্বা লাল। কিন্তু রক্ত পান করলে তো দাঁতে ও লাল রক্ত লেগে থাকতো তাতো নেই। এখন আপনার মনে প্রশ্ন আসতে পারে যে শিবের উপর দাঁড়িয়েছেন বলেই তিনি জিহ্বায় কামড় দিয়েছেন। কিন্তু শিব স্বয়ং বলেছেন আমাকে যদি তিনি শক্তি দেন তাহলে ই আমি শিব নচেৎ আমি শক্তিহীন শব ( মৃত)। এ কথার অর্থ হল একজন পুরুষের প্রকৃত শক্তি নারী। একজন পুরুষের উচিত জীবনের সবথেকে বেশি গুরুত্ব তার মাকে ও স্ত্রীকে দেওয়া। কারণ জীবনের এই দুটির সম্পর্ক যদি মজবুত না হয় তাহলে একজন পুরুষ যতই পেশাগত ক্ষেত্রে সফল হোন না কেন দিন শেষে তিনি অসুখী। মা কালী ও মহেশ্বর আদপে যা কিছু করেছেন তা সংসারকে শিক্ষা দেওয়ার জন্য। তাই মা কালীর জিহ্বা বের করা রূপে পূজিত হন সংসারকে আত্মনিয়ন্ত্রণের শিক্ষা দিতে। কিন্তু আমরা মূর্খ মানুষ ভাবি তিনি শিবের অঙ্গে পা দিয়েছেন বলে লজ্জায় জিভ বের করেছেন। ভুলে যায় শিব- দুর্গার অর্ধনারীশ্বর রূপের কথা যেখানে তারা জগত সংসার কে এই শিক্ষা দিয়েছেন যে তারা অভিন্ন। আদপে সংসারে স্বামী স্ত্রী ও অভিন্ন ই। দুজনেই সমান। কিন্তু আবার পৌরাণিক অর্থ লিখতে গেলে একজন পুরুষকে শক্তি প্রধান করেন নারী। আবার দিনের শেষে পুরুষ মানুষটির আশ্রয় হন নারীই। নারী পরম স্নেহে মমতায় পুরুষকে সেবা করে। খুব ভালো করে খুঁটিয়ে দেখবেন একজন সফল পুরুষ মানুষ একসময় অসফল হয়ে ওঠেন যদি তার দাম্পত্য সম্পর্ক ঠিক না থাকে।তাই জীবনের সবথেকে বেশি গুরুত্ব দিন এই সম্পর্কে। নারীকে ভালবাসুন, নারীকে সম্মান করুন,আর নারীকে মর্যাদা দিন। মাতা রূপে, সহধর্মিনী রূপে, ভগিনী রূপে একজন নারী পুরুষের প্রেরণা স্থল।
রচনাকাল : ১৬/১১/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।