ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও ভাইফোঁটা
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখক : লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
দেশ : India , শহর : New Delhi

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , সেপ্টেম্বর
প্রকাশিত ৯৩৫ টি লেখনী ৭২ টি দেশ ব্যাপী ২৫৭২২৭ জন পড়েছেন।
Lakshman Bhandary
ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও ভাইফোঁটা 
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

ভাইফোঁটা হিন্দুদের একটি উৎসব। এই উৎসবের আর এক নাম ভ্রাতৃদ্বিতীয়া । কার্তিক মাসের শুক্লাদ্বিতীয়া তিথিতে (কালীপূজার দুই দিন পরে) এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। পশ্চিম ভারতে এই উৎসব ভাইদুজ নামেও পরিচিত। সেখানে ভ্রাতৃদ্বিতীয়া পাঁচ-দিনব্যাপী দীপাবলি উৎসবের শেষদিন। আবার, মহারাষ্ট্র, গোয়া ও কর্ণাটকে ভাইফোঁটাকে বলে ভাইবিজ। নেপালে ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব পরিচিত ভাইটিকা নামে। সেখানে বিজয়াদশমীর পর এটিই সবচেয়ে বড় উৎসব।

হিন্দুদের সামাজিক উৎসব হল ভাইফোঁটা। প্রতিবছর কার্তিক মাসের শুক্লপক্ষের দ্বিতীয়া তিথিতে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। এই উৎসবের ভ্রাতৃদ্বিতীয়া নামেও পরিচিত। গোটা দেশ জুড়েই পালিত হয় এই উৎসব। দেশের বিভিন্ন জায়গায় এই উৎসব বিভিন্ন নামে পরিচিত। হিন্দিভাষীদের কাছে 'ভাইদুজ', বাঙালিদের 'ভাইফোঁটা', মহারাষ্ট্রে 'ভৌ বিজ' , দক্ষিণ ভারতে 'যমদ্বিতীয়া' আবার নেপাল ও পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং পার্বত্য অঞ্চলে এই উৎসব 'ভাইটিকা' নামে পরিচিত।

এটি ভাই-বোনের অটুট বন্ধনের উৎসব। সারাবছর ধরে এই দিনটার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করে ভাই-বোনেরা। পুরো বছরে হয়ে আসা রাগ-অভিমান, দুঃখ-কষ্ট, ঝগড়া, খুনসুটি, সেই ভাইয়ের মঙ্গল কামনার জন্য কপালে ফোঁটা দেওয়ার অপেক্ষায় থাকে বোনেরা। পশ্চিমবঙ্গে ভাইফোঁটা একটি ঘরোয়া অনুষ্ঠান হলেও ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্যে দিয়ে গ্রাম বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে এই উত্সব পালিত হয়।

ভাইফোঁটা উদযাপন করার পদ্ধতি ভাইফোঁটার দিন বোন বা দিদিরা তাদের দাদা বা ভাইদের কপালে কনিষ্ঠা আঙুল দিয়ে দই বা চন্দনের ফোঁটা দেয় এবং ছড়া কেটে বলে - "ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা। যমুনা দিল যমকে ফোঁটা, আমি দিলাম আমার ভাইকে ফোঁটা।" এই শ্লোক বাক্যের মাধ্যমে বোনেরা তার ভাইদের কপালে তিনবার ফোঁটা দেয়। এরপর বোন তার ভাইয়ের মাথায় ধান এবং দুর্বা ঘাসের শীষ রাখে। এই সময় শঙ্খ বাজানো এবং উলুধ্বনি দেওয়া হয়। এরপর দিদি তার ভাইকে আশীর্বাদ করে এবং বোন ভাইকে প্রণাম করে আর ভাই বোনকে আশীর্বাদ করে থাকে। এইভাবে বোনেরা ভাইয়ের সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে। তারপর ভাইকে মিষ্টি খাওয়ায়। ভাই-বোনের মধ্যে উপহার আদান-প্রদান হয়। তবে ভাইফোঁটার নিয়ম পরিবারের রীতিনীতিভেদে পরিবর্তিত হয়ে থাকে।

ভাইফোঁটার পৌরাণিক কাহিনী এই উৎসবের আরও একটি নাম হল যমদ্বিতীয়া। কথিত আছে, এই দিন মৃত্যুর দেবতা যম তাঁর বোন যমুনার হাতে ফোঁটা নিয়েছিলেন। আশীর্বাদ স্বরূপ যম তার বোনকে বরদান করে বলেছিলেন, বোনের কাছ থেকে যারাই ফোঁটা নেবে তাদের নরক যাত্রা থেকে মুক্তি লাভ হবে। ভাইফোঁটার আরেকটি কাহিনী হল, নরকাসুর নামে এক দৈত্যকে বধ করার পর যখন কৃষ্ণ তাঁর বোন সুভদ্রার কাছে আসেন, তখন সুভদ্রা তার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁকে মিষ্টি খেতে দেন। সেই থেকে ভাইফোঁটা উৎসবের প্রচলন হয়।

রচনাকাল : ১৬/১১/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 8  France : 1  Germany : 1  India : 73  Russian Federat : 5  Sweden : 12  Ukraine : 5  United States : 63  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 8  France : 1  Germany : 1  
India : 73  Russian Federat : 5  Sweden : 12  Ukraine : 5  
United States : 63  
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
ভ্রাতৃদ্বিতীয়া ও ভাইফোঁটা by Lakshman Bhandary is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৪৮৪০০৬
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী