কালী কালী মহাকালী...... কালরাত্রি দেবী চণ্ডিকা
কালীকা দেবীর জন্ম রহস্য (পৌরাণিক কাহিনী)
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
একবার হিমালয়ের সুকমল রমনীয় স্থানে মহাকাল ভৈরব এবং নন্দী সহ আরো অনেক শক্তি গণদেবতা বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলছিলেন। সহসা সেখানে চারিযুগে অমর ঋষি মার্কেণ্ডেয়। তাকে দেখে নন্দী এবং অন্যান্য দেবগণ অতীব আনন্দিত হলেন।
অতঃপর কথোপকথোনের এক সময় উন্মত্ত ভৈরব ঋষিকে দেবী কালীর জন্ম তত্ত্ব জানাতে অনুরোধ করলে, তিনি বলেন ব্রহ্মা প্রকৃতির সহায়তায় ১০ জন মানুষ সৃষ্টি করলেন যথা “”মরীচি, অত্রি, অজ্ঞিরা, পুলস্ত্য, পুলহ, ক্রেতু, বশিষ্ঠ, দক্ষ, ভৃগু ও নারদ। এরা প্রত্যেকেই সত্তঃগুণসম্পন্ন হওয়ায় কেউই বংশ বিস্তারে রাজী হলেন না।
তখন ব্রহ্মা দক্ষকে বেছে নেন এবং তার উপর রজোগুন প্রয়োগ করে প্রজা সৃষ্টির প্রেরণা জাগালেন। অতঃপর তিনি কন্যা লাভের জন্য তাকে মহাকালীর তপস্যা করতে বলেন। দক্ষ পিতার আদেশ মেনে ১০০০০ বছর তপস্যা করে মহাকালীর দেখা পান। কিন্তু তাকে দেখেই দক্ষ ভয়ে প্রকম্পিত হলেন। মহাকালীর উগ্র রূপ, করাল বদন, সুবিশাল অস্ত্র সমেত বাহু দেখে দক্ষের প্রাণ ভয়ে কাঁপতে লাগলো। দেবী তার ভীত অবস্থা দেখে পরম মাতৃরূপে তাকে দেখা দেন।
দক্ষ দেবীর এই রূপ দেখে স্বস্তি ফিরে পেলো এবং দেবী কন্যা রূপে পাবার আকাংক্ষা ব্যক্ত করলেন। দেবীও তাকে তার প্রথম কন্যা হয়ে জন্ম নেবার প্রতিশ্রুতি দেন। তখন দক্ষ দেবীকে তার সম্পর্কে জানতে চাইলেন।
দেবী বললেন: আমি পরম শক্তি, সৃষ্টির বাহক, পরিচালক, ধারক, তড়িত এবং লয়। এই সকল আমারি শক্তি। সৃষ্টির অন্তরালে আমি যোগমায়া রূপে কর্ম, জ্ঞান, শ্রদ্ধা, বুদ্ধি, বিবেক ও চেতনা দ্বারা মুক্তির এবং মোক্ষ প্রদানের শক্তি দাত্রী। অপরদিকে পঞ্চ মহা তত্ত্ব, ও ছয় রিপু নিয়ন্ত্রণ করে জীবগনের জীবন রচনাকারক মহামায়া আমি। আমাতেই সমস্ত শক্তি একীভুত এবং আমার থেকেই বিভিন্ন ধারায় তা প্রবাহিত।
হে দক্ষ একমাত্র শক্তিদায়ীনি আমি। সমস্ত সৃষ্টগণ যে শক্তি লাভ করে তা আমিই দিয়ে থাকি। হে দক্ষ, ঈশ্বর ছাড়া যেমন সৃষ্টি হবে না ঠিক আমি শক্তি না দিলে সেই সৃষ্টি মুল্যহীন। এই কথা শুনে প্রজাপতি দক্ষ অতীব প্রীত হলেন। এবং বারংবার দেবীকে অশ্রুসিক্ত নয়নে স্তব দ্বারা তুষ্ট করলেন।
অতপর দেবীর নিকট বিদায় নিয়ে সে সংসারে মনোযোগী হলো। দক্ষের মোট ২৮ টি কন্যা হয় এবং প্রথম কন্যাটি ছিলেন দেবী। তিনি সতী নামে জন্ম নেন এবং শিবেরস্ত্রী হন। অপর কন্যাদের বিয়ে হয় চন্দ্রের সাথে এবং তারা যতদিন পৃথিবী থাকবে, ততদিন নক্ষত্র হয়ে চাঁদের পাশে অবস্থান করবে। ঋষির মুখ থেকে দেবী
রচনাকাল : ১৫/১১/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।