বেকার
লোকটা জানে ওর আর কিছু হওয়ার নয়।বেকাররা অপরাধীদের থেকেও ন্যক্কারজনক।রোজগার না থাকার শেকড়হীনতার দরুণ ও এদিক ওদিক যখন খুশি আলোর মতন হুস করে চলে তো যেতে পারে অস্তিত্বের ভারকে কলা দেখিয়ে কিন্তু পকেটে পয়সার ভার না থাকায় মাঝে মাঝে ভয় হয় ওর ঘুরে বেড়ানোটা বেলুনের ওড়ার মতন না হয় যে যেকোনো ছুতোয় শুধু ভাসতে চায় শূন্যে।
লোকটা জানে ওর আর কিছু হওয়ার নয়,ভালো,মন্দ,প্রেরণাদায়ক,বিপজ্জনক, আনন্দ,দুঃখ,সাহসের,ভয়ের...আর কিস্যু নয়।ওর ছোটোবেলার খেলনা তীরগুলোর কথা মনে হয় যার মুখে রাবারের দরুণ সেটা দেওয়ালে সহজেই সেঁটে যেত।তবে, যত দিন গড়ায় ততই তীরের দেওয়ালের সাথে বোঝাপড়া কমতে থাকে।সে আর দেওয়ালের অন্তরঙ্গতা চায়না।সে দেওয়াল থেকে খসে পড়তে চায়।সময়ের অদৃশ্য পুড়তে থাকা তাকে মনে করিয়ে দেয় যাত্রাপথ অনেকটা দীর্ঘ হয়ে গেছে।এবার আর তার কিছু হওয়ার নয়।আর লোকটারও কিছু হওয়ার নয় তাই সে অসময়ে ঢুলতে থাকে।মাঝরাতে অট্টহাসিতে বিস্ফোরণ ঘটে তার নীরবতার।সে গান গেয়ে ওঠে শ্মশানঘাটে, না খেয়ে থাকে টানা বেশ ক'দিন;তারপর যখন মানুষের তখনও তার বিরুদ্ধে অভিযোগের চাবুক চালানো বাকি থাকে ও অবাক হয়ে দ্যাখে নিজেকে ঘর সাজানোর জিনিসে ঠাসা দোকানের আয়নায়।নিজেকে দেখতে থাকে আর তারপর বলে ওঠে "এইতো এইদুটো ডানাই খুঁজছিলাম!এগুলোই চাওতো?তোমাদের বিষে ওরা ক্ষীণকায়।ওরা আর উড়তে পারবে না।ওদের কেটে ফেল,কেটে ফেল!"
রচনাকাল : ৪/১১/২০২০
© কিশলয় এবং প্রতীক মিত্র কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।