কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা....... দেবী বিসর্জন
এসো মাগো বসো ঘরে (ধর্মীয় কবিতা)
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
লক্ষ্মীপুজোকে ঘিরে অনেক প্রচলিত লোককাহিনি আছে৷ তার মধ্যে অন্যতম হল অলক্ষ্মী বিদায়েরটি৷ প্রাচীনকালে দেশের পূর্ব প্রান্তের প্রদেশে এক রাজা তাঁর সাম্রাজ্যের এক কারিগরকে বলেছিলেন সেই কারিগরের যদি কোনও মূর্তি বাকি থাকে বিক্রি হতে তবে তিনি সেটা কিনে নেবেন৷ কথামতো একটাই মূর্তি বাকি ছিল এবং সেটা অলক্ষ্মীর, বাধ্য হয়ে রাজা সেটাই কিনলেন৷ তারপর থেকে রাজ্যের উপর ঘনিয়ে এল বিপদের কালো মেঘ৷ একের পর এক ক্ষতি হয়ে রাজ্যের অবস্থা যখন বেসামাল, তখন রানিকে কেউ একজন উপদেশ দেন শারদ পূর্ণিমাতে ভক্তিশ্রদ্ধা সহ সমস্ত নিয়ম মেনে কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো করতে৷ রানি সেইমতো পুজো করার পরই রাজ্যে আবার সুখ-সমৃদ্ধি ফিরে আসে৷ সেই থেকেই দেশের পূর্বভাগে কোজাগরী পূর্ণিমার দিন মা লক্ষ্মীর আরাধনার প্রথা প্রচলিত হয়৷
এদিন সন্ধ্যায় মা লক্ষ্মীর পুজো হয়৷ কথিত আছে, লক্ষ্মীপুজোয় যিনি সারারাত জেগে থাকেন, মা লক্ষ্মীর কৃপা তার উপর বর্ষিত হয়৷ মা লক্ষ্মী সারারাত ঘুরে ঘুরে নাকি গৃহস্থকে জিজ্ঞেস করেন ‘কে জাগ্রতি?’ বাংলায় এর অর্থ হল কে জেগে আছো? তাই অনেকেই চেষ্টা করেন শারদ পূর্ণিমার রাতে জেগে থাকার৷ তাহলে মিললেও মিলে যেতে পারে দেবীর বিশেষ উপহার, গৃহস্থালি ভরে উঠবে সুখ-সমৃদ্ধিতে৷ কেননা মা লক্ষ্মী যে ঐশ্বর্য আর সমৃদ্ধির দেবী৷
লক্ষ্মীপুজোর মূল হল আলপনা, আগে চালের বাটা দিয়ে মা লক্ষ্মীর পায়ের ছাপ সহ বিভিন্ন নকশার আলপনা তৈরি করা হলেও এখন সকলেই নিজের নিজের সাধ্যমতো বাজার থেকে কিনে আনেন স্টিকার৷ মনে করা হয় ‘ভক্তিভরে যে নারীগণ’ এইভাবে লক্ষ্মীর পা আঁকেন, তার মাধ্য দিয়েই মা লক্ষ্মী নাকি সেই গৃহে প্রবেশ করেন৷ এইভাবে পা আঁকার মধ্য দিয়ে গৃহে মা লক্ষ্মীর আগমন ও অধিষ্ঠানকেই চিহ্নিত করা হয়৷ এছাড়া পদ্মফুল, গাঁদারমালা, আখ, মিষ্টি, পান, সুপুরি, নারকেল, কলা, পান, খই, মুড়কি, নাড়ু, মোয়া ব্যতীত পুজো অসম্পূর্ণ৷
পরদিন সন্ধ্যায় ঢাক ঢোল বাজিয়ে শোভাযাত্রা করে নদীতে বা কোন বডো জলাশয়ে লক্ষ্মী প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। আবার একটি বছরের অপেক্ষা। আসছে বছর আবার হবে। করোনা আবহে নয়, মাস্ক বিহীন পূজা হবে।
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা....... দেবী বিসর্জন
এসো মাগো বসো ঘরে (ধর্মীয় কবিতা)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
কোজাগরী লক্ষ্মীপূজা দেবী বিসর্জন,
এক বর্ষ পরে পুনঃ দেবী আগমন,
দেবী বিসর্জন আজি অপরূপ সাজে,
চলে সবে নদীতটে ঢাকঢোল বাজে।
আলতা সিঁদুরে করে দেবীর বরণ,
সাজানো বরণ ডালা সুগন্ধি চন্দন।
ধান্য খই বাতাসা ও সুমিষ্টান্ন ফল,
বিসর্জনের বাজনা মহা কোলাহল।
নদীঘাটে আসে সবে লইয়া প্রতিমা,
সকলে বন্দনা করে দেবী আরাধনা।
জয় মহালক্ষ্মী বলি গাহে জয়গান,
নদীজলে বিসর্জন দেবীর ভাসান।
লক্ষ্মী বিসর্জন কাব্য করি সমাপন,
মালক্ষ্মীর কৃপা মাগে শ্রীমান লক্ষ্মণ।
https://www.youtube.com/watch?v=CNN0xgt5sw0
রচনাকাল : ৩১/১০/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।