মহাশক্তির আরাধনা ......দেবীর বন্দনা -১৪২৭ শ্রী শ্রী মহাপঞ্চমী পূজার কবিতা (প্রথম পর্ব)
আনুমানিক পঠন সময় : ৪ মিনিট

কবি : লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
দেশ : India , শহর : New Delhi

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , সেপ্টেম্বর
প্রকাশিত ৯৩৫ টি লেখনী ৭২ টি দেশ ব্যাপী ২৫৬৭৮৩ জন পড়েছেন।
করোনা আবহে আজি জাতীয় সংকট,
বন্ধ হলো মূর্ত্তি পূজা, তবু পূজে ঘট।
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

কমিটির অন্যরা জানাচ্ছেন, আড়ম্বর কমাতে মণ্ডপের দৈর্ঘ্য অন্যান্য বারের তুলনায় প্রায় ১৫ ফুট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অষ্টমীর অঞ্জলির জন্য বেলেঘাটা, ফুলবাগান এলাকায় মাইক লাগানো হচ্ছে কয়েকটি বাড়ি ধরে ধরে, এক-একটি জ়োন বানিয়ে। বাড়ি বাড়ি ফুল-বেলপাতা পৌঁছে দেওয়ারও ব্যবস্থা হচ্ছে। ভিড় এড়াতে বেলেঘাটার ৩৩ পল্লি এখন থেকেই প্রচার করছে, ‘‘মণ্ডপে এসে নয়, দয়া করে বাড়িতে বসে মাইকে পুরোহিতের মন্ত্র পাঠ শুনে অঞ্জলি দিন। অঞ্জলি দেওয়া শেষ হলে আমাদের পৌঁছে দেওয়া ফুল গুলো বাড়ির দরজার কাছে এক জায়গায় রেখে দিন। আমাদের কমিটির ছেলেরাই গিয়ে নিয়ে আসবে। প্রতিমার সঙ্গেই সেগুলি ভাসান চলে যাবে!’’

ওই পুজো কমিটির অন্যতম কর্তা পরিমল দে বললেন, ‘‘পাড়ার লোকেদেরই আমরা এই কথা বলছি। তাহলে ভাবুন, বাইরের দর্শনার্থীদের জন্য আমাদের পরামর্শ কত স্পষ্ট। পরিষ্কার বলছি, এ বার বাদ দিন। করোনা মিটলে সামনের বছর দলবল নিয়ে আসুন। ইচ্ছে করেই এ বার আড়ম্বর কমিয়ে মানবিকতার পুজো করছি আমরা।’’
কমিটির অন্যরা জানাচ্ছেন, আড়ম্বর কমাতে মণ্ডপের দৈর্ঘ্য অন্যান্য বারের তুলনায় প্রায় ১৫ ফুট কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। বহু বছর ধরে কাজ করে আসা শিল্পী-কারিগরদের আয়ের পথ খোলা রাখতে দেবীর আঁচলের কারুকাজ বাদ দেওয়া না হলেও এ বার ভোগ থেকে শুরু করে বিসর্জনের সমস্ত জৌলুসের আয়োজন বন্ধ থাকছে। কমিয়ে ফেলা হয়েছে আলোর রোশনাই। উল্টে মণ্ডপে অবাঞ্ছিত ভিড় এড়াতে ফুল বাগান মেট্রো স্টেশনের আশপাশের এলাকা-সহ আরও দু’টি জায়গায় তিনটি অতিকায় স্ক্রিন বসাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। তাঁদের দাবি, ‘‘আমরাচাইব, মণ্ডপে না ঢুকে এ বার দর্শকেরাও ইস্ক্রিনেই আমাদের প্রতিমা দেখে নিন।’’

তবে এ বারের পুজোতেও মেলা হচ্ছে ৩৩ পল্লিতে। মণ্ডপ ঘিরে প্রতিবারের মতো এ বারও থাকছে আট-ন’টি স্টল। থাকছে নানা রকম দোলনা। তবে মেলার সেই সব স্টল থেকে কিছুই কেনা যাবে না বলে উদ্যোক্তাদের দাবি। পরিমলবাবু বললেন, ‘‘কেউ ফুচকা, কেউ ঘুগনি, কেউ আবার বন্দুক দিয়ে বেলুন ফাটানোর স্টল দেবেন। পুজোর চারদিন তাঁদের যা আয় হয়, সেটা আমরা কমিটির তরফে তাঁদের হাতে তুলে দেব। ভিড় এড়ানো এবং মানুষের কর্ম সংস্থান, দুই-ই হবে তাতে। দু’টো দিক বজায় রাখাই আমাদের দায় বদ্ধতার মধ্যে পড়ছে।’’

ভিড় কমিয়ে ‘দায়বদ্ধতার পুজো’ করার কথা বলছে মুদিয়ালি ক্লাবও। উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, অন্যান্য বারের তুলনায় মণ্ডপ এবার ৬০ শতাংশ ছোট করে ফেলা হয়েছে। আলোর জাঁকজমক বাদ, ভাসানের শোভা যাত্রা বাদ। বাদ পড়েছে ভোগের আয়োজনও। পুজোর অন্যতম কর্তা মনোজ সাউ বললেন, ‘‘কয়েক মাস আগে আমারই করোনা হয়েছিল। কী রকম ভোগান্তি পোহাতে হয়, সামনে থেকে দেখেছি। বড় কিছু করলেই বহু মানুষ ভিড় করবেন। তাই ছোট করে পুজো টিকিয়ে রাখার দায়বদ্ধতা সারব ঠিক করেছি।’’

উদ্যোক্তারা জানাচ্ছেন, সেই দায়বদ্ধতার অঙ্গ হিসেবেই মুদিয়ালির মণ্ডপ সাজিয়ে তোলা হচ্ছে বিভিন্ন জেলার পরিচিত শিল্পকর্ম দিয়ে। সেগুলি তৈরি করতে বলা হয়েছে কলকাতার পুজোর উপরে নির্ভরশীল বেশ কয়েকজন শিল্পীও কারিগরকে। ৩০০টি পরিবারের খাবারের ব্যবস্থা করার পাশাপাশি এক ক্যানসার আক্রান্তের চিকিৎসার খরচও জোগানো হয়েছে পুজো কমিটির তরফে।  তাঁদের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা এক দৃষ্টিহীন পড়ুয়ার মাধ্যমিকের পরবর্তী পড়াশোনার দায়িত্ব নেওয়ার সিদ্ধান্তও তাঁরা নিয়ে ফেলেছেন বলে জানালেন মুদিয়ালির পুজোর উদ্যোক্তারা। মনোজ বাবুর কথায়, ‘‘দর্শনার্থীদের বলব, মণ্ডপ দর্শন পরের বারও হবে। এবার মুদিয়ালিকে মনে রাখুন তার কাজ দিয়ে।’’

একই পথে হাঁটছেন উত্তরের আহিরীটোলা সর্বজনীনের উদ্যোক্তারা। মাঠ জুড়ে নয়, এবার তাঁদের মণ্ডপ হচ্ছে মাঠের প্রবেশপথের কাছে ছোট করে। আলোর আড়ম্বরে তাক লাগানোর রেওয়াজ বদলে ফেলা হয়েছে। ৮১ তম বছরে এ বার বাদ গিয়েছে ভোগ, জলসা বা বিসর্জনের যাবতীয় উদ্যোগও। এমনকি, প্রতি বার বর্ধমান থেকে আসা ঢাকির দলকেও এবার আসতে বারণ করছেন তাঁরা। পুজোর অন্যতম কর্তা দুলাল শীল বললেন, ‘‘ঢাকিদের পারিশ্রমিক পাঠিয়ে দেওয়া হবে। ওঁদের বাজানো ঢাকের বোলই রেকর্ড করে বাজানো হবে। কোনও রকম ভিড়ই আসলে চাইছিনা এবার।’’

মহাশক্তির আরাধনা ......দেবীর বন্দনা -১৪২৭
শ্রী শ্রী মহাপঞ্চমী পূজার কবিতা  (প্রথম পর্ব)
কলমে- কবি লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী

শ্রী শ্রী মহা পঞ্চমীতে দেবী আনয়ন,
বেদীপরে প্রতিমারে করিয়া স্থাপন।
মহাশক্তি আরাধনা করে বিশ্ববাসী,
শুভশক্তি আবাহন অশুভরে নাশি।

মহা পঞ্চমীতে হয় দেবী আগমন,
মহা শক্তি আরাধনা সুপ্রসন্ন মন।
সুদৃশ্য প্যাণ্ডেল পরি শোভে ফুলমালা,
মাইকের উচ্চরবে কান ঝালাপালা।

ঢাক ঢোল শঙ্খ ঘন্টা, বাজয়ে কাঁসর,
পূজার আনন্দ আজি আনন্দ বাসর।
করোনা প্রবাহে আজি জাতীয় সঙ্কট,
মূর্ত্তিপূজা বন্ধ বহু, তবু পূজে ঘট।


মহা পঞ্চমীর কাব্য লিখিল লক্ষ্মণ,
যে কাব্য পঠনে হয় করোনা দমন।


-------------------------------------------------
মা দুর্গার দোলায় আগমন -ফলমড়ক।
মা দুর্গার গজে গমন-ফল শস্যপূর্ণা বসুন্ধরা।

পঞ্চমী তিথি আরম্ভ :
বাংলা তারিখ – ৩ কার্তিক, ১৪২৭, মঙ্গলবার।
ইংরেজি তারিখ – ২০/১০/২০২০
সময়– অপরাহ্ন ৪টে ৩৫ মিনিট ৫৩ সেকেন্ড থেকে।

পঞ্চমী তিথি শেষ:
বাংলা তারিখ– ৪ কার্তিক, ১৪২৭, বুধবার।
ইংরেজি তারিখ– ২১/১০/২০২০
সময়–দুপুর ২টো ৪৪ মিনিট ১৯ সেকেন্ড পর্যন্ত।
সায়ংকালে শ্রীশ্রী শারদীয়া দুর্গাদেবীর বোধন।



মনে রাখবেন-
• পূজা প্রাঙ্গনে সকলের মাস্ক পরা প্রধান ও পবিত্রতম কর্তব্য।
• পূজার প্রাঙ্গনে প্রবেশের আগে হাত ধুয়ে নিন।
• স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।
• প্রতিটি পূজা প্যাণ্ডেলে স্যানিটাইজার রাখা বাঞ্ছনীয়।
• সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখুন।
• ভিড় থেকে নিজেকে ও পরিবারকে দূরে রাখুন।
• সকলকে জানাই শুভ দুর্গাপূজার শুভেচ্ছা আর শুভকামনা।

রচনাকাল : ২১/১০/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 5  France : 1  Germany : 2  India : 58  Russian Federat : 5  Sweden : 10  Ukraine : 3  United States : 76  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 5  France : 1  Germany : 2  
India : 58  Russian Federat : 5  Sweden : 10  Ukraine : 3  
United States : 76  
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
মহাশক্তির আরাধনা ......দেবীর বন্দনা -১৪২৭ শ্রী শ্রী মহাপঞ্চমী পূজার কবিতা (প্রথম পর্ব) by Lakshman Bhandary is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৪৮৩৪৯৫
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী