শিউলি ঝরানো সকালে শরতের আগমনী
শারদ সংকলন-১৪২৭ প্রথম পর্ব
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
নীল মেঘে ধবধবে সাদা তুলোর মতো গুচ্ছ গুচ্ছ সাদা মেঘের ভেলা কেড়ে নেয় প্রকৃতি প্রেমিদের মন, বার্তা দেয় পুজোর আগমনীর। গাছে গাছে শিউলির মন মাতানো সুবাস, কাশ ফুলের ছড়াছড়ি অনুভূত হয় শরতের ছোঁয়া। মালতী, কামিনী, জুঁই আর টগর মাথা তুলে নিজেদের সৌন্দর্য্য জানান দিতে থাকে। ফুলের সমারোহে ভরে ওঠে বাংলার বুক। মন মাতানো ঘ্রাণে চারদিক মুখরিত হয়ে উঠে। তাদের মিষ্টি সুবাস ছড়িয়ে পড়ে বাংলার এপ্রান্ত থেকে ওপ্রান্তে।
তাই আমার লেখা "শিউলি ঝরানো সকালের কবিতা" য় লেখা আছে---
শরতের আগমনে, মেঘ গগনে গগনে
পুঞ্জে পুঞ্জে ভেসে চলে যায়,
সাদা মেঘেদের ভেলা, সারাদিন করে খেলা
গাছে গাছে পাখি গীত গায়।
শিউলি, কাশ ফুল ছাড়া শরৎ যেমন নিষ্প্রাণ, তেমনি শারদীয় উৎসবও অনেকটাই অসম্পূর্ণ। মিষ্টি শিশিরের পরশ, ঢাকের শব্দ আর ভোরের শিউলি তলা-এসবই একে অন্যের পরিপূরক। কথিত আছে, দেবী দুর্গার সব থেকে পছন্দের ফুল শিউলি। তাই, দুর্গাপুজোর অঞ্জলিতে শিউলি ফুলের গুরুত্ব অপরিসীম। শরতের ভোরে ঘাসের ডগায় শিশির জমে। আর এই শিশির ভেজা ঘাসে পা দিলেই যেন স্বর্গসুখের অনুভূতি জাগে।
আমার লেখা শরতের একটি কবিতায় উল্লেখ আছে-
ফুটিল টগর কলি শিশিরে সিক্ত শিউলি
মালতী মাধবী চাঁপা বেলি,
বাড়ির বেড়ার ধারে কেয়াফুল সারে সারে
গন্ধরাজ, ফুটেছে চামেলি।
এছাড়াও আমার কবিতার আরও একটি লাইন-
জলাশয়ে খালে বিলে শালুক পাপড়ি মিলে
সরোবরে ফুটেছে কমল,....
শিউলি আর কাশ ফুলের মিলিত প্রকাশ মানেই এটা শরৎকাল। আর শরৎকাল মানেই বাঙালীর শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গা পুজোর আগমন। চারিদিকে ঢ্যাং কুরা কুর ঢাকের আওয়াজ, শিউলির গন্ধ, কাশ ফুলের মেলা, সব মিলিয়ে আকাশে বাতাসে উৎসবের ছটা। শোনাযায় মায়ের পদধ্বনি.. তাই, প্রত্যেক বাঙালির কাছে শিউলি ফুল, কাশ ফুল আর শরৎ কালের একটা আলাদাই গুরুত্ব আছে। কারণ, সর্বপ্রথম এরাই জানান দেয় পুজো আসছে। আর, বেশি দেরি নেই।
কবির কথায় শরতের কবিতায় তাই বার বার বলতে ইচ্ছে করে--
পূজা এসে গেল ভাই আর তো সময় নাই
আনন্দেতে প্রাণে দেয় সাড়া,
গাঁয়ের মন্দির মাঝে ঢাক ঢোল কাঁসি বাজে
পূজার উত্সবে জাগে পাড়া।
রচনাকাল : ৫/১০/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।