ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- 2020 (দ্বিতীয় পর্ব) ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

কবি : লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
দেশ : India , শহর : New Delhi

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০১৯ , সেপ্টেম্বর
প্রকাশিত ৯৩৫ টি লেখনী ৭২ টি দেশ ব্যাপী ২৫৬৮০৮ জন পড়েছেন।
ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- 2020 (দ্বিতীয় পর্ব)
ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


ভাদু লে লে লে পয়সা দু আনা, কিনে খাবি মিছরির দানা। এই সেই জনপ্রিয় ভাদু গান, কয়েকবছর আগে পর্যন্ত এই গান গেয়ে এবং নিচে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরে বেড়াতে দেখা যেত বেশ কিছু ভাদু শিল্পীদের ভাদ্র মাসে।


কিন্তু বর্তমান মুঠোফোন, অত্যাধুনিক সাউন্ড সিস্টেম ইত্যাদির আঁড়ালে দুই দশক ধরে এই ভাদু গান এবং ভাদু শিল্পীরা লুপ্তপ্রায়। ভাদ্র মাসের দিনের বেলায় প্যাচপ্যাচে গরমে অথবা সন্ধ্যার পর আর সচরাচর দেখা যায় না এই সকল ভাদু শিল্পীদের। অথচ কয়েক বছর বীরভূম, বাঁকুড়া, বর্ধমান, পুরুলিয়ার মত রাঢ় বাংলায় গ্রামে গ্রামে দেখা যেত এই সকল ভাদু শিল্পীদের।


তবে বীরভূমে বেশকিছু গ্রামের সাধারণ দিনমজুর সম্প্রদায়ের কিছু মানুষ এই ডিজের যুগেও টিকিয়ে রেখেছে এই ভাদু শিল্পকে। ভাদ্র মাসের পহেলা তারিখ থেকে একটি মেয়েকে ঘাগরার মত শাড়ি পরিয়ে ও মাথায় ওড়না দিয়ে ভাদু সাজিয়ে গানের সঙ্গে নাচানো চিরাচরিত রীতি। আর মাটির ভাদু মূর্তি কোলে করে নিয়ে গ্রামে গ্রামে ঘুরে টাকা পয়সা আদায় করে ভাদু শিল্পীরা। ভাদু শিল্পীরা মুখে মুখে রচনা করেন গান, তাদের গানে উঠে আসে তাদের জীবন যন্ত্রণার প্রসঙ্গ, উঠে আসে সামাজিক বিষয়। ঢোল, হারমোনিয়াম, কাঁসা ইত্যাদি বাদ্যযন্ত্র সহযোগে গান শোনান ভাদু গানের লোক শিল্পীরা।


এই ভাদু গানের পিছনে আছে এক রাজকুমারীর করুণ কাহিনী। পুরুলিয়ার কাশীপুরের পঞ্চকোটের রাজা নীলমণি সিং দেওরের কন্যা ছিল ভদ্রাবতী বা ভাদু। তাঁর বিবাহের ঠিক হয় বীরভৃমের এক রাজপুত্রের সঙ্গে। বিয়ের দিন বিবাহ করতে আসার পথে ডাকাতদলের হাতে খুন হন ভদ্রাবতীর হবু স্বামী।শোকে মুহ্যমান হয়ে ভদ্রাবতী আত্মঘাতী হয়।


কারও মতে ভদ্রাবতী বা ভাদু চিতার আগুনে আত্মাহুতি দেয়। আবার কারো মতে জলে ঝাঁপ দিয়ে মৃত্যুকে বেছে নেয়।রাজার প্রিয় ভদ্রাবতীকে জনমানসে স্মরণীয় করে রাখতে রাজা নীলমণি সিং দেওর ভাদু গানের প্রচলন করেন। ভাদু একটা লোকগান কিন্তু তার প্রচলন রাজপরিবারের হাত ধরে। আর তা শুরু হয় পয়লা ভাদ্র থেকে ভাদু পুজোর মধ্য দিয়ে। ভাদ্রমাসের সংক্রান্তিতে ভাদুর বিসর্জন হয়।


ভাদু গানের আসর  আমার গীতিকবিতা-1
কথা - আঞ্চলিক সুর - অপ্রচলিত
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী


চল ভাদু চল সিনাতে যাবো অজয় লদীর ঘাটে,
আসার পথে শালুক তুলবো ঐ কাদা ডোবাতে।
আমার ভাদু মান করেছ্যা মানে গেলো সারাদিন,
উপর কুলি নামু কুলি মাঝ কুলিতে আছে সতীন।


চল ভাদু চল খেলত্যা যাব রাণীগঞ্জের বড়তলা,
অমন পথে দেখে আসবি খাদানের ডুলি চলা।
ও ভাদু মা, ও ভাদু মা তোমার কেনে মন ভারি,
চল তুমায় দেখায় আনবো ইস্টিশানের রেলগাড়ি।


আমার ভাদু ছুটু ছ্যালা কাপড় পরত্যা জানে না,
তুদের ভাদু গতর খাকি হয়েছ্যা তাই রাতকানা।
ভাদর মাসে ভাদু এলো কয়লাখাদে আঘাম জল,
পা হড়কে পড়্যা যাবি তাই তো বলি ধীরে চল।


ভাদু করি গো মানা,
উ পাড়াতে সতীন আছে পান দিলে পান খেয়ো না।


রচনাকাল : ৪/৯/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 8  China : 16  France : 4  Germany : 1  Hong Kong : 1  India : 98  Ireland : 27  Russian Federat : 9  Sweden : 18  Ukraine : 3  
United States : 95  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 8  China : 16  France : 4  Germany : 1  
Hong Kong : 1  India : 98  Ireland : 27  Russian Federat : 9  
Sweden : 18  Ukraine : 3  United States : 95  
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- 2020 (দ্বিতীয় পর্ব) ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও গীত সংকলন by Lakshman Bhandary is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৪৮৩৫২৫
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী