ভাদুগান ও ভাদু উত্সব- 2020 (প্রথম পর্ব)
ভাদুর কাহিনী, আলোচনা ও আমার গীতিকবিতা
ভাদ্র মাসের পয়লা দিনে রাজবাড়িতে ভাদুর মূর্তি স্থাপন করা হত৷ অন্তঃপুরের মহিলারা প্রতি রাতে ভাদুর সামনে বসে গান করে ভাদু উত্সব করতেন৷ ভাদ্র সংক্রান্তির দিন সারা রাত জেগে হত ভাদু উত্সব৷ এই দিনটিকে বলা হয় ভাদুর জাগরণ৷ সংক্রান্তির রাতে ভোর বেলায় ভাদুর বিসর্জন হয়৷
মানভূমের গ্রামাঞ্চলে ভাদ্র সংক্রান্তিতে বিশ্বকর্মা পুজোকেও ছাপিয়ে যায় ভাদু৷ মেয়েরা কুমোর বাড়ি থেকে ভাদু মূর্তি কিনে এনে গ্রামে স্থাপন করেন৷ ভাদু গানে কখনও দৈনন্দিন জীবন কখনও বা চাওয়া -পাওয়ার যন্ত্রণা ফুটে ওঠে৷
‘ভাদু আমার ছোট ছেলে , কাপড় পড়তে জানে না ’ (পুরুলিয়ায় শিশুদের লিঙ্গ নির্বিশেষে ছেল্যা >ছেলে বলা হয় )৷
ভাদুর গীতে ক্রমশ উহ্য হয়েছেন খোদ ভাদুই৷ এসেছে রামায়ণ -মহাভারতের কাহিনি৷ ‘রামের মা সিনাতে গেল , রাম কাঁদে ধুলায় পড়ে / কেনে গরবি ধুলা দিলি / ধুলা ঝাড়ে লিই কোলে৷ ’
ভাদু গানের আসর আমার গীতিকবিতা-1
কথা - আঞ্চলিক সুর - অপ্রচলিত (তাল- দাদরা)
কলমে-লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
ও ভাদু মা ও ভাদু মা ফেলছো কেনো চোখের জল,
কি হয়েছে বলো মা আমায় খেতো দেবো রম্ভা ফল।
ও ভাদু মা ও ভাদু মা........
আমার ভাদু রাগ করেছে কথা সে আর কইবে না,
ও ভাদু মা এই বয়েসে রাগ করা আর সাজে না।
ও ভাদু মা ও ভাদু মা........
ও পাড়া যেও না ভাদু মা, ও পাড়া যেতে মানা,
ও পাড়াতে সতীন আছে ধরলে পরে ছাড়ে না।
ও ভাদু মা ও ভাদু মা........
ওপর কুলি নামু কুলি মাঝ কুলিতে গোল হচ্যা,
আমার ভাদু ছুটু ছ্যালা ঘরে ফিরতে লারিছ্যা।
ও ভাদু মা ও ভাদু মা........
রচনাকাল : ২/৯/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।