দূরের তারা
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখক : মোঃ তোফায়েল হোসেন
দেশ : Bangladesh , শহর : Moulvibazar

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , আগষ্ট
প্রকাশিত ২৮ টি লেখনী ৪২ টি দেশ ব্যাপী ১৮৮৪৫ জন পড়েছেন।
Md. Tofayel Hossen
☞☞☞☞☞ (অণুগল্প)  ☜☜☜☜☜

দূরের তারা
মোঃ তোফায়েল হোসেন

অবশেষে যন্ত্রণার শেষ। এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটা এখন যেন মনে হচ্ছে হাজারটা লটারি পাওয়ার সমান। আগামী সোমবার জয়েনিং। নয়নাকে জানাতেই হবে। পকেট থেকে মোবাইলটা বের করে বাটনে আঙ্গুল চালালাম। রিং হয়েই যায়। তারপর আবার। কিন্তু নয়না ধরছেনা কেন! কি হল ব্যাপারটা! এই সময় সে তো ঘরেই থাকে। 

হ্যালো... একটা পুরুষ কন্ঠ। কে বলছেন?

প্রথমে কন্ঠটা অপরিচিত মনে হলেও পর মুহূর্তেই চিনতে পারলাম অনিককে। হাজারও চিন্তা মস্তিষ্কের কোষে এমন আঘাত করতে লাগলো- দিশেহারা করে তুললো। ভাবনার অতলে ডুবতে ডুবতে নিজের অজান্তেই আলতো করে মোবাইলের লাল বাটনটা টিপে দিলাম। 

নয়না দু’দিন আগেই জানিয়েছিল- আমার বাল্যবন্ধু অনিক বিয়ের প্রস্তাব পাঠিয়েছে। ব্যবসায়ী বর পেয়ে নয়নার পরিবার রাজি হয়ে যাচ্ছে। আমি নয়নাকে বলেছিলাম- বিয়েটা যেভাবেই হোক আটকাও। আমি মাসখানেকের মধ্যেই যা করার করছি। সে আমাকে বিশ্বাস দিয়ে, আশ্বাস দিয়ে নিশ্চিন্ত করেছিল।

আমার আর নয়নার সম্পর্ক পারিবারিকভাবে কখনো হওয়ার নয় তা আমরা দু’জনই জানি। আকাশ-পাতাল ব্যবধান দুই পরিবারের। তাই সম্পর্ক হওয়ার পরপরই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম- চাকুরিটা হয়ে গেলেই কাউকে না জানিয়ে বিয়ে করে ফেলব। তারপর যদি পরিবার মেনে নেয়- নিল। না মানলে দু’জনে নির্জনে কাটিয়ে দেব ভালোবাসাময় জীবন।

বিভিন্ন দিক থেকে নয়নার বিয়ের প্রস্তাব আসছে শুনে একটা চাকুরির জন্য দিনরাত দৌড়-ঝাঁপ শুরু করে দিলাম। তার-ই রেশে ধরে গত দশ দিন আগে গ্রাম ছেড়ে এ শহরে এসেছিলাম এবং এবার সফলও হলাম। এ্যাপয়েন্টমেন্ট লেটারটা হাতে পেতেই নয়নার প্রেমময় মায়াবী মুখ দৃষ্টিতে ভেসে উঠেছিল। একটা সংসারের গল্প মনের অতলে বাসা বাঁধতে লাগলো। 

খুব তাড়াতাড়ি আমরা বিয়ে করছি এ কথা জানাতেই নয়নাকে ফোন দিয়েছিলাম। কিন্তু নয়নার ফোনটা অনিক কেন রিসিভ করলো? প্রশ্নটা মনের কোণে উঁকি দেয়ার সাথে সাথেই জাবাব দিল নয়নার পাঠানো এসএমএস। সে লিখেছে- অনেক দেরি হয়ে গেছে প্রিয়। আমি পারিনি বিয়েটা আটকাতে।

নয়না দুই কথায় খুব সুন্দরভাবে সবকিছুর সমাপ্তি টেনে দিল। কিন্তু আমি তো এলোমেলো। স্বপ্নগুলো স্বপ্নের মতোই রয়ে গেল অবশেষে। কষ্ট পেয়ে কষ্টরাই হাহাকার করে উঠলো। ভেবে পেলাম না কাকে অভিশাপ দেব- নিজেকে না নয়নাকে! অতঃপর কাপুরুষ এই আমি সিলিং ফ্যানে নিজের অনেক ব্যবহৃত ছিন্নভিন্ন গামছাটা বেঁধে আত্মহত্যা করার সিদ্ধান্ত নিলাম। মৃত মায়ের মুখটা বারবার চোখের সামনে ভেসে উঠায় শেষ মুহূর্তে সাহসের অভাব দেখা দিল। ব্যর্থ হয়ে গেলাম।

পরদিন সকালেই খবর পেলাম অনিক গত রাতে সিলিং ফ্যানের সাথে গামছা ঝুলিয়ে আত্মহত্যা করেছে। কেন জানি খবরটা শুনে একটুও অবাক লাগলো না। শুধু নয়নার জন্য আমার চোখ দু’ফোটা অশ্রু বিসর্জন দিল পৃথিবীর অজান্তে।
***
রচনাকাল : ৩১/৮/২০২০
© কিশলয় এবং মোঃ তোফায়েল হোসেন কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 2  Canada : 2  China : 12  Europe : 24  France : 3  Germany : 2  Hungary : 2  India : 160  Ireland : 4  Japan : 2  
Latvia : 1  Romania : 1  Russian Federat : 12  Saudi Arabia : 14  Sweden : 9  Ukraine : 5  United Kingdom : 8  United States : 144  Vietnam : 1  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 2  Canada : 2  China : 12  Europe : 24  
France : 3  Germany : 2  Hungary : 2  India : 160  
Ireland : 4  Japan : 2  Latvia : 1  Romania : 1  
Russian Federat : 12  Saudi Arabia : 14  Sweden : 9  Ukraine : 5  
United Kingdom : 8  United States : 144  Vietnam : 1  
© কিশলয় এবং মোঃ তোফায়েল হোসেন কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
দূরের তারা by Md. Tofayel Hossen is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১১১১৫৭৩৮
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী