আদর্শ শিক্ষক
আনুমানিক পঠন সময় : ৩ মিনিট

লেখিকা : স্বাগতা রায়
দেশ : India ,

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , জুলাই
প্রকাশিত ১৬ টি লেখনী ৩০ টি দেশ ব্যাপী ১১৭২৫ জন পড়েছেন।
আমার চোখে প্রথম আদর্শ শিক্ষক হলেন আমার বাবা। আমার বাবা প্রাইমারী স্কুল শিক্ষক ছিলেন এবং আমি সেই স্কুলেই পড়তাম।ওটা বাবার স্কুল ছিল এবং আমার স্কুল ও ছিল। সেই জন্য খুব একটা দুষ্টুমি করতে পারিনি।আমার পাশের বাড়ির একটি ছেলে আমার সঙ্গে পড়তো।তখন ক,খ,গ এইভাবে মার্কস দেওয়া হতো। আমি সবতেই ক' পাওয়া সত্বেও আমার রোল ২ করে দিয়েছিলেন আমার বাবা।আমি জিজ্ঞাসা করেছিলাম আমার পাশের বাড়ির ছেলে একটি বিষয়ে খ'পাওয়া সত্বেও ওকে তুমি ১ রোল করলে।তখন বললেন তোকে১ রোল করলে সবাই ভাবতো আমার মেয়ে বলে সবাই তোমাকে বেশি নম্বর দিয়েছে।এবং এই নিয়ে যেসব কথা উঠবে তাতে তোমার ভালো লাগবে না।আমি আর বেশি কথা বাড়ায়নি। যাইহোক আমার বাবা কোনো রকম ঝামেলা অশান্তি চাইতেন না।তিনি সবসময় বলেন সবসময় সত্য কথা বলবে এবং সৎ পথে চলবে।তাহলে জীবনে কখনও বিপদে পড়বে না।আমাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খুব একটা ভালো ছিল না।কিন্তু উনি আমাকে বিজ্ঞান বিষয় নিয়ে যাতে পড়তে পারি তার ব‍্যবস্হা করে দিয়েছিলেন।খুব ধৈর্য্য এবং শান্তিপ্রিয় মানুষ।হাতের লেখা খুব সুন্দর এবং কাজকর্ম খুব পারফেক্ট।শিক্ষক দিবসে তাই বাবাকে জানাই আমার শ্রদ্ধা ভালোবাসা এবং প্রনাম।

আমার চোখে দ্বিতীয় আদর্শ শিক্ষক হলেন আমার উচ্চ মাধ‍্যমিকের রসায়ন বিষয়ের গৃহশিক্ষক। উনি হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন।যা বলবো তা কম বলা হবে। আমি বেশি দূরে পড়তে যাবো না বলে( উনি আমার বাড়ির কাছে ছিলেন বলে) পড়তে যায়।আর আমার বন্ধুরা অন্য এক আমার কলেজের প্রফেসরের কাছে পড়তো।যাইহোক আমি ক্লাসে খুব ভালো রেসপন্স করতাম ।একদিন উনি সবার মাঝে আমাকে দাঁড় করিয়ে বললেন তুমি কার কাছে পড়ো? তখন আমি ওনার নাম বলাতে উনি বললেন ও তো আমার ছাত্র খুব ভালো ছেলে।আমার সঙ্গে যারা পড়তো সবাই আমাকে গুরুত্ব দিতে লাগলো।প্রাকটিক্যাল করার সময় একটা প্রশ্নের উত্তর দিতে পারলে তোমাকে ফুল মার্কস দেবো। আমি যখন পেরে যায় উনি আমাকে খুব আশীর্বাদ করেন এবং স‍্যারের খুব নাম করেন। এরপর সেই প্রফেসর যখন আর টিউশন পড়াবেন না বলেন তখন ওনার সব ছাত্রছাত্রীরা আমার স‍্যারের কাছে চলে আসে।আমাদের পরীক্ষা নেওয়া হলে আমি সবার থেকে এগিয়ে থাকি। মানুষ হিসেবে খুব নম্র ভদ্র এবং বিনয়ী ছাত্রদরদী।দুবছর আমি পড়েছিলাম । এখনও দেখা হলে কথা বলেন।স‍্যার ভীষণ সুন্দর দেখতে এবং কথাবার্তা ও মার্জিত। উনি আমাকে বই দিয়ে এবং কোনো মাসে অর্থনৈতিক ভাবে দিতে অসুবিধা হলে উনি কিছু বলতেন না। আর কি বলবো শিক্ষক দিবসে ওনাকে শ্রদ্ধা ও প্রনাম জানাই।

আমার চোখে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা যে শিক্ষিকার তিনি হলেন আমার মা।আমার মা যদি না আমার পেছনে লেগে থাকতেন তাহলে কোনো দিন আমি হাই স্কুল শিক্ষিকা হতে পারতাম না।মাধ‍্যমিকের পর বিজ্ঞান বিষয় কে বেছে নিতে মায়ের সবচেয়ে বেশি ভূমিকা ছিল।মা বাবু কে রাজি করিয়েছিলেন আমাকে আমার পছন্দ মতো বিষয় নিয়ে পড়তে পারি তার জন্য। পড়াশোনা শেষ করার পর চাকুরী পাওয়া তারপরও মায়ের ভূমিকা ছিল অনস্বীকার্য। বাড়ি থেকে যখন যাতায়াত করতাম তখনও সব জিনিস গুছিয়ে দেওয়া টিফিন প‍্যাক করে দেওয়া খাবার রান্না করা সব কিছু মা করতেন।কোনো সময় বিরক্ত হতেন না।মায়ের জায়গায় দাঁড়িয়ে যখন নিজেকে কল্পনা করি তখন মনে হয় আমি এগুলো কিছুই করতে পারবো না।মায়েরাই পারে।না খেয়ে আমাদের জন্য অপেক্ষা করা। যতটা পারে সব কিছু দিয়ে দেওয়া মনের কথা বোঝা।সব মায়েরাই পারে তাই মায়ের বিকল্প হয়না।অনেক ভালোবাসা এবং প্রনাম জানাই মা তোমাকে।তোমার ঋণ পরিশোধ করতে কোনো দিন কেউ পারে নি আর আমি ও পারবো না।

***শুভ শিক্ষক দিবস***
রচনাকাল : ৩০/৮/২০২০
© কিশলয় এবং স্বাগতা রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 5  China : 14  Europe : 2  France : 5  Germany : 2  India : 127  Ireland : 3  Philippines : 1  Romania : 1  Russian Federat : 12  
Saudi Arabia : 8  Sweden : 10  Ukraine : 5  United Kingdom : 3  United States : 112  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 5  China : 14  Europe : 2  France : 5  
Germany : 2  India : 127  Ireland : 3  Philippines : 1  
Romania : 1  Russian Federat : 12  Saudi Arabia : 8  Sweden : 10  
Ukraine : 5  United Kingdom : 3  United States : 112  
© কিশলয় এবং স্বাগতা রায় কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
আদর্শ শিক্ষক by Swagata Roy is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৬২৬১৮৯