অনেকদিন বাদে স্ত্রী বাপের বাড়ি চলে যাওয়ায় সেদিন রাতেরবেলায় মটন বিরিয়ানী, চিলি চিকেন আর চিলড্ বিয়ার সহযোগে ডিনার সেরে নিশ্চিন্তে ঘুম দিচ্ছিলো রনি। গভীর রাতে আচমকা ঘুম ভেঙে গিয়ে চোখটা খুলতেই সামনে একটা বীভৎস কদাকার মুখ দেখতে পেলো। তার হাতের সরু সরু লম্বা নখযুক্ত আঙুলগুলো ধীরে ধীরে রনির দিকে এগিয়ে আসছে।
- বাঁচাওওও..
***********************
- অ্যাই যে মশাই শুনছেন..
- কে..কে?
ঘুমচোখে ধড়ফড় করে উঠে রনি সামনে একটা বিকট মুখ দেখে ভয়ে আঁতকে উঠলো।
- আরে ভয় পাবেন না, আমি গেছোভূত! ঐ সামনের বটগাছটাতেই থাকি- আমি আর আমার পেত্নী..আই মিন পত্নি!
- তা'ও ভালো। আমি ভাবলাম বুঝি আমাকে..
- আরে না না..আচ্ছা আপনার কথাগুলো একটু কেমন যেন শোনাচ্ছে!
- ও কিছু না। একটু সর্দি হয়েছে..তাই!
- ও..আসলে ঐ বটগাছটা থেকে রোজই আপনার স্ত্রীর কান্ডকারখানা দেখি। আপনার তো মশাই একেবারে ল্যাজে-গোবরে অবস্থা!
- ওর কথা বলে আর ভয় দেখাবেন না ভূতদাদা..একটুও শান্তি নেই জীবনে।
- ঐজন্যই আর আপনাকে কিছু করলাম না। মরাকে মেরে কি লাভ!
- তা ভূতদাদা, আপনার স্ত্রী নিশ্চয়ই ওর থেকে ভালো?
- কে..ঐ পেত্নী! আর বলবেন না মশাই..ও স্ত্রী নয়, একেবারে 'গরম ইস্ত্রি'! ভূত হয়েও আমি যাকে ভয় পাই, সে হল আমার 'ইস্ত্রি'!
- কি রে হতচ্ছাড়া মিনসে..সাহস তো কম নয়..একটা মানুষের বাচ্চার কাছে আমার নামে বদনাম করতে এসেছিস?
আচমকা রনির গলায় অন্য স্বর শুনে চমকে গেল গেছোভূত।
- অ্যাই কে তুমি?
- চিনতে পারছিস না মিনসে? তুই এখানে আসার আগেই মালটাকে আমি..এই দেখ..
পাশের চাদরটা তুলতেই দেখা গেল রনির মৃতদেহ।
গেছোভূত চমকে গিয়ে সেই ছদ্মবেশী রনির পায়ের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো তার পাগুলো পিছনদিকে ঘোরানো।
- বাবাগোওওও..'গরম ইস্ত্রি'!
*************************
রচনাকাল : ১৭/৮/২০২০
© কিশলয় এবং শুভেন্দু ভৌমিক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।