~গ্রামের পুজো ~
রূপক ঘোষ
গ্রীনপার্ক
আজি হতে অর্ধ শতাব্দী আগে,
পুজোর মেদুর স্মৃতি মনে বড় জাগে।
উঠতো একটা ঠাকুর দুটি গ্রাম মিলে,
আসতো দেখতে ঠাকুর কত ছেলে - পিলে।।
ঠাকুর গড়তো কুমোর ক্লাবের দাওয়ায়,
তাই দেখে ছোটরা ভাসতো হাওয়ায়।
খড় - মাটি দিয়ে কুমোর গড়তো মাকে,
ফাঁক পেলেই ছুটে যেতাম দেখতে তাকে।।
বাঁশে-বাঁশে দোল খেয়ে ছোঁয়া- ছুঁয়ি খেলা,
সে সব দিনের কথা যায় নাকো ভোলা।
মন্ডপের ছিল অতি সাধারণ সাজ,
তাই নিয়ে ছিল নাকো মনে কোন লাজ।।
ত্রিপলেতে ছাওয়া হত মন্ডপ খানা,
নীল সাদা কাপড়েতে চারিপাশ টানা।
সাজতো দুগ্গা মা এক চালা সাজে,
ঢাকীর ঢাকের আওয়াজ কানে আজ ও বাজে।।
ছিল না আলোর বাহার ছিল নাকো থিম,
হ্যাজাকের আলো জ্বলে করে টিমটিম।
মাইকে বাজানো হতো শারদীয়া গান,
গানের মধুর সুরে ভরে যেত প্রাণ।।
কোথা দিয়ে কেটে যেত চার - পাঁচ দিন,
দশমীতে শুরু হতো বুক চিন্ চিন্।
দশমীর বিকেলেতে সিঁদুর খেলা,
জমে যেত কতো লোক ভীড় হতো মেলা।।
ঘুরপাক খাই মোরা ঠাকুরের পাশ,
অস্ত্র যে নিতে হবে মনে বড় আশ।
ফাঁক পেয়ে তুলে নিই খড়্গ খানা,
বড়রা করছে নিষেধ শুনছি না মানা।।
ধর ধর মায়ের অস্ত্র সব নিয়ে গেল ওরা,
এক ছুটে চলি সব যায় নাকো ধরা।
পরদিন বেলা হতে বাড়ি বাড়ি ঘুরি,
টপাটপ্ বড়দের প্রণাম টা সারি।
কাকী-জেঠী খেতে দিত কতো নাড়ু- গজা,
তখন এটাই ছিল বিজয়ার মজা।
বিজয়া হয় না আজ, হারিয়েছে রীতি,
বুক ভরে নিয়ে আছি আজ ও সেই স্মৃতি।।
২৬ শে শ্রাবণ, ১৪২৭
রচনাকাল : ১১/৮/২০২০
© কিশলয় এবং রূপক ঘোষ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।