শিলচর শহর থেকে প্রায় ২৩ কিলোমিটার দুরে কুম্ভিরগ্রাম এয়ারপোর্ট যাওয়ার পথে পড়ে শালগঙ্গা গ্রাম। সেখানে দুর্গাদেবীর একটি মন্দিরের সেবাইত ছিলেন ঠাকুর বলরাম গোস্বামী। জানিনা এ সৌজন্যটা এখনো আছে কিনা, ৯০-৯১ সালে কোনো অতিথিই ঠাকুরের প্রসাদ না খেয়ে সেখান থেকে ছাড়া পেতেন না। প্রসাদ বলতে একেবারে দুপুরের খাবার- ভাত, ডাল, তরকারী চাটনি- সব নিরামিষ। এমনি এক বর্ষার দিনে আমরা সপরিবারে ও সবান্ধবে গেছি, পুজোশেষে গোঁসাই ঠাকুরের অনুরোধে খেতেও বসেছি।
মাটিতে পাতা পেড়ে খাওয়ার ব্যবস্থা। বাইরে তখন মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছে। খাওয়ার স্থানটি শুকনো হলেও দু-সারির মাঝের জায়গাটুকু পরিবেশকদের পায়ে পায়ে ভিজে উঠল। এমন সময় 'দড়াম'! এক আধবুড়ি ভদ্রমহিলা জলে পা পিছলে পপাত ধরণীতলে। একটি বার-তের বছরে মেয়ে খাচ্ছিল। মজা পেয়ে সে হো-হো করে হেসে উঠল। ব্যস আর যায় কোথায়! বাপান্ত গালাগাল শুরু করলেন মহিলাটি।
-আহা এত কথা কেন দিদিমা? আমি পড়লে তুমি হাসতে না? বল সত্যি করে- হাসতে না? তা মনে কর না আমি পিছলে পড়েছি আর তুমি হাসছ।
অকাট্য যুক্তি! এবার আমাদের সবার হাসবার পালা। শেষে আর থাকতে না পেরে মহিলাটিও হেসে উঠলেন। একটা বিশ্রী কান্ড হতে হতেও তার এক মধুর পরিসমাপ্তি ঘটল।
চারপাশের কান্ডকারখানা দেখে মনে হচ্ছে আমরা যেন অনেক বদলে যাচ্ছি- স্বাভাবিক সহিষ্ণুতা আর রসবোধটুকু যেন আমরা দিন-দিন হারিয়ে ফেলছি।
রচনাকাল : ৮/৮/২০২০
© কিশলয় এবং তথাগত চক্রবর্তী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।