পরাধীন ভারতবাসীর স্বাধীনতার স্বপ্ন
স্বাধীনতার সংগ্রাম...... স্বাধীন ভারত
স্বদেশের গান (গীতি কবিতা) পঞ্চম পর্ব
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
ভারতের স্বাধীনতার পিছনে বেশ কয়েকজন মহিলার অসামান্য কৃতিত্ব,
সেইসব সাহসিনী নারীদের কথা
রাণী লক্ষ্মী বাঈ
ইতিহাসে তাঁর কথা সকলেই পড়েছ। তবে এই সাহসিনী রাণীর আসল নাম কিন্তু এটা নয়! ১৮৪২ সালে ঝাঁসির মহারাজ গঙ্গাধর রাওয়ের সঙ্গে বিয়ের পর ‘মণিকর্ণিকা’ নাম পালটে তিনি হলেন ঝাঁসির রাণী লক্ষ্মী বাঈ। তাঁর ছিল এক শিশুপুত্র দামোদর রাও এবং এক দত্তক পুত্র। তবে রাজার মৃত্যুর পর সেই সময়ের ব্রিটিশ সরকারের প্রধান লর্ড ডালহৌসি রানির দত্তক পুত্রকে রাজা হিসেবে মানতে রাজি হলেন না। তখনই ব্রিটিশদের থেকে ঝাঁসিকে মুক্ত করার যুদ্ধ শুরু করেন রাণী। শিশু দামোদরকে পিঠে বেঁধে ঘোড়ার পিঠে চড়ে যুদ্ধ করতে যেতেন তিনি। সঙ্গে সবসময় রাখতেন অস্ত্র। ১৮৫৮-এর কোটাহ-কী-সেরাই-এর যুদ্ধে স্যার হিউ রোজ়ের নেতৃত্বে ব্রিটিশ সেনার হাতে মারা যান ইতিহাসের অন্যতম এই সাহসিনী রাণী।
কস্তুরবা গাঁধী
‘গান্ধী’ শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে একজনেরই ছবি। কিন্তু, জানেন কি, সেই মানুষটির পাশাপাশি দেশের জন্য একইরকম পরিশ্রম করে গিয়েছিলেন তাঁর স্ত্রী কস্তুরবা গাঁধীও? ভারতকে ব্রিটিশ রাজ থেকে মুক্ত করতে এবং সাধারণ মানুষের অধিকারের জন্য রীতিমতো সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন তিনি। ১৯১৩ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতীয়দের যে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতিতে কাজ করতে হত, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রধান মুখ ছিলেন কস্তুরবা। ফলে গ্রেফতার করা হয় তাঁকে এবং পাঠানো হয় তিন মাসের সশ্রম কারাদণ্ডে। পরে দেশে ফিরে এসে, গাঁধীজির কারাবাসের সময়টাতে দক্ষভাবে তাঁর জায়গা নেন কস্তুরবা গাঁধী।
সরোজিনী নাইডু
‘দ্য নাইটিঙ্গেল অফ ইন্ডিয়া’— তিনি জন্মেছিলেন কিন্তু হায়দরাবাদের এক্কেবারে বাঙালি এক পরিবারে, সরোজিনী চট্টোপাধ্যায় হয়ে। ইংল্যান্ডে পড়ার সময় ১৯ বছর বয়সে বিয়ে করেন মুথিয়ালা গোবিন্দারাজুলু নাইডুকে বিয়ে করেন। তিনি, সরোজিনী নাইডু, ভারতের প্রথম মহিলা রাজ্যপাল এবং ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের দ্বিতীয় মহিলা প্রেসিডেন্ট। সাহসিনী এই কবি এবং স্বাধীনতা সংগ্রামীকে জেলেও যেতে হয়েছিল দু’বার! আইন অমান্য আন্দোলনের সময় গাঁধী সহ অন্যান্য নেতাদের সঙ্গে জেলে পাঠানো হয় তাঁকেও। দ্বিতীয়বার গ্রেফতার হলেন ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দেলনের সময়। তিনি অ্যানি বেসান্তের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলেন Women’s Indian Association (WIA)-তেও। ১৯৪৯-এ লখনউয়ে নিজের অফিসেই হার্ট অ্যাটাকে মারা যান সরোজিনী নাইডু।
পরাধীন ভারতবাসীর স্বাধীনতার স্বপ্ন
স্বাধীনতার সংগ্রাম...... স্বাধীন ভারত
স্বদেশের গান (গীতি কবিতা) পঞ্চম পর্ব
কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
কত না সংগ্রাম করে
পেয়েছি মোদের স্বাধীনতা
ভারত মাতাকে মোরা করেছি স্বাধীন।
এদেশের স্বাধীনতা
নিয়েছিল কেড়ে যারা,
তাদেরই পদানত ভারত ছিল একদিন।
একদা দেশের মাটিতে
বিদেশী শাসকরা এসে,
মোদের হাতে তুলে দেয় পরাধীনতার শৃঙ্খল,
দেশ জাতি বিপন্ন
কৃষকের নাই অন্ন,
স্বাধীনতার তরে আজও সংগ্রাম করে অবিরল।
কত সংগ্রামের পরে
এদেশ হলো স্বাধীন,
বয়ে গেছে কত রক্ত নদীর ধারা এদেশের মাটিতে,
রক্ত দিয়ে লেখা
এদেশের স্বাধীনতা
সংগ্রামের ইতিহাস কাঁদে ঐ রক্ত পূজার বেদীতে।
স্বাধীনতার সংগ্রামে
রক্ত দিয়ে আনলো যাঁরা,
দেশের স্বাধীনতা, ফাঁসির মঞ্চে যাঁরা দিয়ে গেল প্রাণ।
সারা ভারত জুড়ে,
হিমালয়ের শিরে, ভূধরে-সাগরে,
অশোক লাঞ্ছিত ত্রিবর্ণ পতাকা গাহিছে তাঁদের জয়গান।
রচনাকাল : ৮/৮/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।