প্রাগৈতিহাসিক স্বপ্নদোষ
মোঃ তোফায়েল হোসেন
তার সম্পাদিত আলতারাঙ্গা নিটোল গালে
যখন ছিল শুধুই অগণিত ব্রণের রাজত্ব;
হাইড্রোজেনের হকার হয়ে আমি নাকি তখন
দেখিয়েছিলাম সংমিশ্রিত প্রেমের স্ফুলিঙ্গ।
সংকীর্ণ স্কাটের ভিতর স্বতন্ত্র স্পন্দন হয়েছিল স্থির,
অদৃশ্য সিগন্যালে নাকি সঞ্চারিত হয়েছিল সুড়সুড়ি।
তারপর সুষমা অঙ্গ নাকি করেছিলাম সোমত্ত!
সাম্প্রদায়িক উৎকন্ঠার স্পর্শময় পেনিসিলিনে-
সংশয় সন্ত্রাসের নিষ্ঠুর পুনরাগমন হবে বলে
প্রচ্ছন্ন পোস্টার আমিই নাকি স্থাপন করেছিলাম
তার নবযৌবনের সরঞ্জামময় তপ্ত স্টুডিওতে।
তার সায়ন্তন সম্পূরক সাইক্লোনময় তীব্র প্রেম যখন
দোভাষী সেই মগ্ন হকারের নগ্ন দেশালই ছুঁয়েছিল;
দূরের সম্প্রসারিত উদাসী বিবর্ণ প্ল্যাটফর্ম পেরিয়ে
আমি তখন একাকী- মরুদ্যানের কুখ্যাত অস্ত্রাগারে।
সে যখন ধূসর শতরঞ্চির শয্যায় দোলায়মান সম্ভোগে
রংচটা ব্রেসলেটের সংকেতিক চিহ্ন আঁকে দেহময়!
আমি তখন নিস্তব্ধতার গানে স্মৃতির অদ্ভুত পিছুটানে,
শুধুই হাহাকারের কথা বলছি মৃত্যুর কানে-কানে।
তার কম্পমান শ্বেত সার্বভৌম- সাম্প্রতিক শিহরণে
যখন অচেনা যুবকের নীল চোখে সাকিন খোঁজে;
আমি তখন ভাবছি- কবে ডুবেছি নিস্তেজ সম্মোহনে!
সোনালী ওড়নার সেফটিপিন খোলে রেখে তন্বী তনু
সে যখন সেচ্ছায় করছে ডিপোজিট- নিন্দিত নরকে।
কল্পনায়, সুপ্রিমকোর্টের নিস্তনী ভেজা বরান্দায় বসে
আমি তখন সম্ভ্রান্ত সাঁকো- করতে চাচ্ছি নিবন্ধন!
অতঃপর তার ছন্নছাড়া পোয়াতি স্বর্ণ-অস্তিত্ব যখন
চুপিচুপি এসে ভালোবেসে দাড়ালো বৈঠকখানায়,
আমি তখন রঙ্গিলা ব্রঙ্কাইটিজের ব্যান্ডেজ প্রাদুর্ভাবে
হয়ে গেছি দুঃখ নদীর ওপারের ঐতিহাসিক গভর্নর।
সে যখন দেখাল- প্রখ্যাত প্রক্রিয়ার দংশিত দাগ
মহিলা সমিতির মেশিনে বানানো ময়লা ব্লাউজে;
যখন দেখাল- সূচ্যগ্র স্তনের উত্থান পতনের নালিশ
শব্দহীন চিৎকার করছে প্রতিধ্বনির পাহারায়।
আমি তখন দেখেছি তার নিউজপ্রিন্টের পেটিকোটে,
সে নিজেই প্রজ্বলিত বৃহন্নলা- যেন বায়োস্কোপ সম্রাজ্ঞী।
ভাবছি, আমার প্যাসেঞ্জারময় এক্সপ্রেসে কেমনে হলো
তার সম্ভ্রম সংহার, কেমনে হলো সে ডাংগুলি ডিনামাইট।
মেয়ে, তুমি এ অবেলায় কেন যে প্রতারণা
করতে এসেছ
কেন যে মিথ্যের জলে ডুবাতে চাচ্ছ এই ডুবন্ত আমায়;
আমি তোমার সেই সম্পাদক নয়- সে অন্য কেউ।
তুমি হয়তো জানো না- এ তোমার ক্লান্ত মনের ভ্রান্ত ধারণা
এ তোমার প্রাগৈতিহাসিক স্বপ্নদোষ!
জেনে রাখ- এই আমি কোনকালেই দোভাষী ছিলাম না
অথবা কোনকালেই আমার চোখ নীল ছিল না।
আরও জেনে রাখ- এই আমি কোনকালেই হাইড্রোজেন
কিংবা অক্সিজেনের হকার ছিলাম না!!!
***
রচনাকাল : ৬/৮/২০২০
© কিশলয় এবং মোঃ তোফায়েল হোসেন কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।