ছেলেটা খুবই বদমাস আর অসভ্য ।গ্রামের কত লোকের বাগানে ঢুকে আম ,কাঠাল,জামরুল,পিয়ারা এসব আত্মসাৎ করছে নিত্যদিন।ওর জ্বালায় সবাই অতিষ্ট একেবারে।ছেলেটার বাড়ির লোকের কাছে সবসময়ই লোকজনের নালিশ লেগেই থাকে।অতিষ্ট হয়ে মা উত্তম মধ্যম দ্যান।আবার কখনো কারোর দোকানে টাকা না দিয়েই খাবার খেয়ে যায় ।এভাবেই দিব্য চলছিল তার জীবন। হঠাৎ একদিন তার ধুম জ্বর এলো। ওষুধও কাজ করছে না ঠিকমতো। জ্বর বাড়তেই লাগলো।"করোনা"র জন্য ডাক্তারবাবু বসছেন না চেম্বারে। নানা গুণীর নানা মত নিয়ে ওষুধ খাওয়াতে লাগলো বাড়ির লোক।৫দিনের দিন সকাল বেলায় মা ডাকছে বাবুন বাবুন....পরক্ষণেই বাড়ির ভিতর থেকে কান্নার রোল উঠলো।সে আর নেই।বাবুন চলে গেলো আজ প্রায় সাত বছর। এখনও সেই গাছগুলো আছে।দুপুর বেলায় এখন আর কেউ বাগানের ফল পাড়তে আসেনা লুকিয়ে লুকিয়ে।কেউ আর দোকানে বিনাপয়সায় খাবার খেতে আসেনা।
গ্রামে কারোর বাড়ি পূজা হলে প্রসাদের জন্য ছুটে আসেনা কেউ।এখন যে কেউ নেই উপদ্রব করবার মতো। তবু এখনো গ্রামবাসীদের মন যেনো নিঃশব্দে খোঁজে ওই ছেলেটিকে। এখনও দুপুরবেলায় গাছের আওয়াজ হলে মাঝে মধ্যে মা চেঁচিয়ে বলে ওঠেন 'বাবুন শিগগির নেমে আয় বলছি,না হলে পা ভেঙ্গে দেব '।কিন্তু হায় সে যে এখন সবকিছু ভাঙ্গার উর্ধ্বে।
রচনাকাল : ৩/৮/২০২০
© কিশলয় এবং পূর্বালী চক্রবর্তী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।