Doctor বা চিকিৎসক এনাদের প্রয়োজন সারা বিশ্ব জুড়ে ।একজন চিকিৎসকের সাথে রোগীর সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য , অভিন্ন।আজও নানা অভিযোগ আর অনুযোগ থাকলেও সমাজে ভগবানের পরে কিছু ক্ষেত্রে ভাগ্য নির্ধারণের দায়ভার যদি কেউ বহন কোরে থাকে তা হোলো 'ডাক্তার' । চিকিৎসা সেবার ক্ষেত্রে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার ক্ষেত্রে ডাক্তার আর রোগীর সম্পর্কই হোলো অন্যতম প্রধান বিষয়। ঈশ্বরের আশীর্বাদে রোগীদের রোগ নিরাময়ের জন্য নিরলস সেবা দিয়ে যাচ্ছেন এই ডাক্তার বা চিকিৎসক।
'জাতীয় চিকিৎসক দিবস' আমাদের ভারতবর্ষে পালন করা হয় ১লা জুলাই । তবে বিশ্বের এক একটি দেশে এই দিনটি পালনের তারিখ টি কিন্তু আলাদা। তবে ভারতে এই তারিখে ডাক্তার দিবস পালন করার একটি ইতিহাস আছে। সেটি হোলো :
পশ্চিমবঙ্গের দ্বিতীয় মূখ্যমন্ত্রী ও কিংবদন্তী চিকিৎসক ডাঃ বিধানচন্দ্র রায়ের স্মৃতিতে জাতীয় চিকিৎসক দিবস (National Doctor's Day) পালিত হয়। কিংবদন্তী এই বিশিষ্ট ব্যক্তি ১৮৮২ সালের ১লা জুলাই জন্মগ্রহণ করেন। এরপর একই দিনে ৮০ বছর বয়সে ১৯৬২ সালে তিনি ইহলোক ত্যাগ করেন। তিনি সেই কতিপয় মানুষের মধ্যে একজন যিনি FRCS এবং MRCP ডিগ্রী অর্জন করেছিলেন।
এই চিকিৎসা দিবস দিনটি এক চিকিৎসকের স্ত্রী শ্রীমতী ইউডোরা ব্রাউন আমান্ডের মস্তিষ্কপ্রসূত।প্রথম এই দিনটি পালন করা শুরু হয় ১৯৩৩ সালের ৯ মে , জর্জিয়ায়।বর্তমান ভারতে বিভিন্ন আয়োজনের মধ্যে দিয়ে পালিত হয় এই জাতীয় চিকিৎসক দিবস। এই দিবসটি পশ্চিমবঙ্গের সাবেক মুখ্যমন্ত্রী ডা. বিধানচন্দ্র রায়কে উৎসর্গ করা।
কিন্তু গত কয়েক বছরে কিছু ডাক্তারের গাফিলতি ও রোগীর আত্মীয়দের হাতে ডাক্তারদের নানা ঘটনার নজির উভয় পক্ষের মধ্যেই তিক্ততা বাড়িয়েছে কেবল। পরিস্থিতি চরমে ওঠে , রোগীর আত্মীয়দের হাতে এন. আর.এস কলেজের জুনিয়র ডাক্তারদের মার খাওয়ার ঘটনার প্রতিবাদে চিকিৎসার মতো জরুরী পরিষেবা বন্ধ কোরে দেন চিকিৎসকেরা । সারা দেশের চিকিৎসক সম্প্রদায় সামিল হন এই ঘটনার প্রতিবাদে। প্রায় এক সপ্তাহ কার্যত অচলাবস্থায় পরিণত হয়েছিলো এই জরুরী পরিষেবা ।আর তার ফলে এই অচলাবস্থার ছাপ পড়েছিলো জাতীয় চিকিৎসক দিবসেও।
এই ডাক্তার আর রোগীর ঠান্ডা লড়াইয়ের যুদ্ধ মিটতে না মিটতেই সারা বিশ্ব জুড়ে কোভিড ১৯ মহামারী বিশ্বজুড়ে যে আতঙ্কের সৃষ্টি করেছে তাতে এক প্রকার দেবতার ভূমিকা পালন করে I সারা বিশ্বজুড়ে কেবলমাত্র ডাক্তার আর স্বাস্থকর্মীরাই প্রাণপণ লড়াই করে চলেছেন এই মহামারীর বিরুদ্ধে। এই মুহূর্তে দেশে নানা জায়গায় ডাক্তারদের অনেকেই নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের পরিষেবা দিতে গিয়ে নিজেরাই তাঁদের দ্বারা সংক্রামিত হচ্ছেন। তাঁরা প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার অভাবেই এমনভাবেই নিজেদের জীবনকে বাজি রেখে রোগীকে সুস্থ করার জন্য নিজেদেরকে পুরোপুরি সোপে দিয়েছেন।কোভিডের প্রাদুর্ভাবে এই সময় ডাক্তারদের জন্য সঙ্কটপূর্ণ সময় কারণ তারা একদম ফ্রণ্টলাইনে থেকে মানুষের সেবায় ব্রতী হয়েছেন।এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে আনুমানিক ৫৪৮ জন ডাক্তার প্যারামেডিক আক্রান্ত।
বিশ্বব্যাপী এই যুদ্ধে ডাক্তাররাই প্রধান সৈনিকের ভূমিকা পালন করতে হচ্ছে।সেইসব ডাক্তারদের কেউ কেউ 'ঈশ্বরতুল্য' মনে করেন।এনাদেরই উদয়াস্ত চিকিৎসায় , সেবায় লক্ষ লক্ষ কোভিড ১৯ এ আক্রান্ত রোগী সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরছেন। অথচ বার বার তাঁদেরই মাথায় লোহার মুকুট পরিয়ে দেওয়া হচ্ছে । এমন দুঃসময় ধরে যাঁরা পাশে থাকেন তাঁরাই হলেন ভগHTTবান।আর সেই ঈশ্বরকেই অপদস্ত কোরে চলেছে একদল মানুষ।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত মন্দির , মসজিদ , গির্জা সমস্ত কিছু লকডাউনের জন্য বন্ধ ছিলো।কোনো স্থানেই ভগবানের দ্যাখা পাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই ছিলো না , তখন ভগবান রূপী ডাক্তার ই ছিলেন আমাদের ভগবান। চীনের উহান থেকে বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়া প্রাণঘাতী কভিড ১৯ প্রায় ১৮৫ টি দেশে হানা দিয়েছে ।বিশ্বের নানা প্রান্তরে ডাক্তাররা করোনা নিয়ে দিচ্ছেন সুচিন্তিত পরামর্শ , সেগুলো মুহুর্তেই ভাইরালও হচ্ছে।
আপামর জনসাধারণ মাঝে মধ্যে ভুলে যায় বিশিষ্ট প্রবাদপ্রতিম ডা. বিধানচন্দ্র রায়ের জন্মদিনকে সশ্রদ্ধ শ্রদ্ধা জানাতেই এই দিবস। তাই সকল চিকিৎসককে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন কোরে দিনটি কে বর্নাঢ্য করাই এই দিনের লক্ষ । কিছু দেশে চিকিৎসকদের ছুটির দিন হিসেবেও পালন করা হয়। বিভিন্ন সংগঠন ও হাসপাতাল থেকে চিকিৎসকদের জন্য অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। প্রতি বছর বিশ্বজুড়ে উদযাপন করা হয় ' জাতীয় চিকিৎসা দিবস '।
[ বি: দ্র : প্রয়োজনার্থে কিছু তথ্য সংগৃহিত ]
রচনাকাল : ১/৭/২০২০
© কিশলয় এবং লিজা মন্ডল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।