ক্লাসরুম থেকে স্টাফরুম
আনুমানিক পঠন সময় : ৯ মিনিট

লেখক : সনৎকুমার পুরকাইত
দেশ : India , শহর : ডায়মন্ডহারবার

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , জুন
প্রকাশিত ৯৭ টি লেখনী ৪১ টি দেশ ব্যাপী ৪১০১৫ জন পড়েছেন।
Sanat Kumar Purkait
(এক)
স্নাতকোত্তর পাঠ শেষে বাড়িতে শুধু শুধু অবস্থান করাটা বাড়ির প্রিয়জনদের কাছে কেমন একটা ডেঁপো ছেলের বেয়াড়া জীবনচর্চার ন্যায় মনে হতে পারে ভেবে পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশের পূর্বেই চাকরীর সন্ধান করতে লাগলাম। এস এস সি পরীক্ষা দিয়েছি, কিন্তু প্যানেল বের করেনি তখনও। সব বিষয়ের ইন্টার্ভিউ শেষ হলে একসাথে প্রকাশ করবে। এম এস সি’র রেজাল্টের পূর্বেই খবর এসে গেল নেট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হবার খবর। কিন্তু সেই শংসাপত্র আসতে আসতে আরও ছয় সাত মাস লেগে যাবে। কারণ, এখনকার মতো তখন এত ডিজিটাল সার্ভিস চালু হয় নি। বলাবাহুল্য, তখন নেট পরীক্ষার আবেদন বা রেজাল্ট জানতে গেলে এমপ্লয়মেন্ট নিউজ পত্রিকা কিনতে হয়েছিল। তার থেকে বেশী সুবিধা ছিল না। তবে আমরা সারা ভারতের সফল প্রার্থীদের খবর এক লহমায় জানতে পারতাম।

(দুই)
যাইহোক, স্নাতকোত্তর পর্বে বেশ মজা করে রবিবারগুলোতে বিভিন্ন স্কুলে ডেপুটেশন ভ্যাকান্সিতে ইন্টার্ভিউ দিয়ে বেড়াতাম। রবিবারের নিউজপেপারে এই সংক্রান্ত খবরগুলো বেশী করে থাকতো। সেটা আবার পেয়ে যেতাম সেলুন দোকান কিংবা চা দোকানের বাসি পেপার হিসাবে সোমবারের সকালে। মজা করে বললাম এই কারণে, যে ডেপুটেশন ভ্যাকান্সিতে সাধারণত বি.এড. ডিগ্রিধারীদের অগ্রাধিকার ছিল আর তা কমপক্ষে গোটা দশেক কমপক্ষে জুটে যেতই। যেহেতু, এটা অস্থায়ী চাকরি, তাই এলাকার ছেলেমেয়েদের প্রাধান্য দিয়ে সুযোগ দেওয়া হত। এছাড়াও পরিচালন সমিতির সম্পাদক বা সভাপতির আত্মীয় বা ছেলে মেয়ে থাকলে আর কোন কথা ছিল না। তাই আমাদের চাকরি পাওয়ার তাগিদ ছিল না, কিন্তু বিষয়ের উপর ইন্টার্ভিউ বা ক্লাসটিচিং এ মাস্টারি ফলাতে যেতাম বলা ভালো। বেশ ভালো লাগতো। বলা ভালো ইন্টার্ভিউ’র ভয় কেটে গেছিল এই কারণে। বেশ কয়েকটা স্কুলে ইন্টার্ভিউ দিয়ে অর্বাচীনের মতো হাসিমুখে চলে আসতাম। কারণ, আমার পাবার কিছু নেই, হারাবার কিছু নেই। কিন্তু, বয়সে বড় অনেক দাদাদিদিদের চোখেমুখে আতঙ্ক দেখেছিলাম, না পাওয়ার আতঙ্ক। সেদিক থেকে আমি তেইশ বছরের বালক একেবারে হাতপা ঝাড়া। সঙ্গী ছিল সাধারণ জ্ঞান, গল্প ও উপন্যাসের বই আর আমার খুব প্রিয় রেডিওতে এফ এম চ্যানেলের গানের অনুষ্ঠান।

(তিন)
২০০৬ সালের জানুয়ারি মাসের ৪ তারিখ, বুধবার বেলা আড়াইটা। তখন আমার কাছে সবদিন রবিবারের মতো। স্বাভাবিকভাবে তখনও দুপুরের আহার গ্রহণ হয় নি। শীতের আমেজে স্নান করতে করতেই দুপুর গড়িয়ে যেত। তার উপর একটু উচাটন জীবনযাপন, অবসরে প্রকৃতির মাঝে হারিয়ে যাওয়া। বাগান বাড়িতে দুপুরে হারিয়ে যাওয়া, পাখির কুজন শুনে তাঁদের কথার মানে খোঁজা। তাই দেরিটাই নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেদিন বাড়ির কাজে আমি আর বোন কাকলি একটু ব্যস্ত ছিলাম। বাইরে থেকে কেউ একজন এসে আমাকে ডাক দিল।
-তোমাকে বাইরে একজন লোক খুঁজছেন। তাড়াতাড়ি এসো।
-কিন্তু কে? তুমি তাঁর নাম জেনেছ? আমাকে খুঁজছেই বা কেন?
(সত্যি সে সময় আমাকে বাইরের লোক খোঁজার মত তেমন কিছুই ছিল না। শুধু গ্রামের লোক তাঁদের দরকারে আমাকে খুঁজতেন, বাড়িতে আসতেন কোন দরখাস্ত, চিঠি বা কাগজপত্র দেখে দেওয়ার জন্য।)
-আমি জানি না। বাইকে করে একজন এসে তোমার নাম বলে জানতে চাইলেন বাড়িটা কোথায়? একটু ডেকে দেওয়া যাবে কিনা?
ব্যস, আমিও একটু গুছিয়ে নিয়ে বেরিয়ে গেলাম। গিয়ে দেখি সত্যি সত্যি একজন লোক বাইকে করে এসেছেন এবং আমাকেই খুঁজছেন। কাছে গিয়ে চেনা চেনা মনে হলেও মনে করতে পারলাম না। জানতে চাইলাম।
-বলুন, কাকে খুঁজছেন? আসুন, বাড়িতে চলুন।
-না, আজ আর যাবো না। পরে একদিন আসবো। আপনাকে এই চিঠিটা দিতে এসেছিলাম। আমি আসছি বজবজ নয়াচক হাই স্কুল থেকে। আমার নাম অসিত বাবু। আপনি কালই চলে আসুন। হেডমাস্টার নির্দেশ দিয়েছেন।
আমি তো অবাক হয়ে তাঁকে জানতে চাইলাম,
-কিন্তু, চিঠি ডাকে না পাঠিয়ে এমন হাতে হাতে কেন? আর এত পরে চিঠি দিয়ে এত তাড়া কেন?
-আপনি আসুন কাল, সব কথা হবে। অবশ্যই আসুন, জয়েন করুন। প্রত্যাশা রইল, দেখা হবে।

(চার)
আমার থেকে বিদায় নিয়ে চলে গেল অসিত বাবু আর তাঁর সঙ্গী। আমি চিঠিটা হাতে নিয়ে তখনও দাঁড়িয়ে আছি। সম্বিৎ ফিরতেই দেখি, আমার চারদিকে অনেকেই জড়ো হয়েছে, উৎসুক দৃষ্টি নিয়ে। একটু দূরে আলোচনা চলছে, লোকে চাকরি পায় না, আর চাকরি বাড়িতে বয়ে দিয়ে গেল। আমার দেহে মনে এক অপরূপ আনন্দ বিরাজ করছে। ওঁদেরকে দু একটি প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বাড়িতে চলে এলাম। দুপুরের রোদে মা একটু ঘুমিয়ে পড়েছিল। আমি এসে দেখি কাকলি বাড়ি মাথায় করে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছে, ‘দাদা চাকরি পেয়েছে, একটা লোক এসে চাকরি দিয়ে গেছে’। আমি আসতেই মা জানতে চাইল ব্যাপারটা। মাকে সবকিছু বললাম, এটাও বললাম যে, এই চাকরি আপাতত অস্থায়ী। মা তবুও খুশি হল, পাড়ার কিছু লোক খুশি হল। তবে কেউ কেউ হয়তো মেনে নিতে পারলো না। তাঁরা স্থায়ী বা অস্থায়ী বিষয়টার মধ্যে ঢুকে বিষয়টা হালকা না করে শুধু ভাবতে লাগলো, চাকরি পেয়ে গেল! স্কুল মাস্টারি পেয়ে গেল! তাও হাই স্কুল! আচ্ছা অনেক টাকা মাইনে বল! ইত্যাদি ইত্যাদি। আগেকার দিনে মেধাবী ছাত্রদের পাঠশেষ হলে প্রধান শিক্ষকরা ডেকে পড়াতে বলতেন জানতাম। তবে এসময়, এমন বাড়িতে বয়ে এসে পড়াতে ডাকা সে কি কম প্রাপ্তি গো।

(পাঁচ)
পরেরদিন, ৫ই জানুয়ারি, ২০০৬, বৃহস্পতিবার সাতসকালে উঠে স্নান খাওয়া করে রওনা দিলাম বজবজ নয়াচক হাই স্কুলের উদ্দেশ্যে। বজবজে আগে কোনদিন আসা হয় নি। ইন্টার্ভিউ দিতে প্রথমবার পদার্পণ। ভাবি নি, এখানে আমাকে রোজ নিয়ম করে আসতে হতে পারে। যাইহোক, দুটো ট্রেন, দুটো অটো চড়ে তারপর একটু প্রকৃতির মাঝ দিয়ে পদব্রজে হেঁটে গেলেই আমার সেই স্বপ্নপূরণের প্রথম অঙ্গীকার ‘নয়াচক হাই স্কুল’। অপূর্ব অমলিন স্মৃতি আজও মনের মণিকোঠায় অনেকটা জায়গা জুড়ে আছে, থাকবেও।

(ছয়)
এতদিন পড়েছি, আজ পড়াব। এতদিন দূর থেকে স্টাফরুমে উঁকি দিয়েছি লাজুক লাজুক মুখ নিয়ে, আজ স্টাফরুমে বসবো। খুব ভালো অনুভুতি হচ্ছে। প্রথমদিন যাত্রাপথে সারাক্ষণ নয়াচক হাই স্কুল বা তার পাশের পরিবেশ ও মানুষজনের কথা ভাবতে ভাবতে সময় চলে যাচ্ছে। আর একটা কথা খুব জানতে ইচ্ছে করছিল খুব যে, প্রায় তিরিশের অধিক আবেদনকারী ছিল, যার মধ্যে স্থানীয় ছিল যেমন, তেমন বি. এড. ডিগ্রিধারীও ছিল। তারপরেও আমাকে এরা কিভাবে নির্বাচন করলেন! যাইহোক, সে পরে জানা যাবে। প্রথমদিন যাবার সময় সঙ্গী নেই। একাই গিয়ে অটোতে বসলাম। ধীরে ধীরে অনেকেই এলেন শ্যামপুর থেকে স্কুলের কাছে যাবে। অটোতে সামনে পিছনে করে আটজন প্যাসেঞ্জার নেওয়ার নিয়ম নাকি। আমি চাপ নিলাম না, আমি তো আগে এসে বসে পড়েছি, একেবারে সেফ সাইড। কিন্তু না, বিধি বাম। আমি তখন সদ্য ভার্সিটির স্টুডেন্টশিপে আছি, চিন্টে মার্কা ফিগার। চারজন ম্যাডাম আসতে এক এক করে তাঁদেরকে পিছনে ব্যবস্থা করে দিলেন মহান ড্রাইভার। তারপর সামনে অন্যান্য স্যার বা স্থানীয় বাসিন্দা বসাতে বসাতে আমার সিট এমন জায়গায় হল, যেন আমি অটোতে অষ্টম ব্যক্তি। যাইহোক এভাবে ততদিন চলেছিল, যতদিন আমার পরিচয় প্রদান করে কুলীন শিক্ষক সমাজের সদস্য বলে মান্যতা পেলাম না। তবুও শারীরিক গড়নের কারণে অটো ড্রাইভার অ্যাডজাস্ট করার জন্য আমার দিকে অসহায়ের মতো তাকাতেন। তাই আমিও একদম ফাঁকা অটো পেলেও প্রথমেই গিয়ে সামনের ঐ জায়গাতে বসে পড়তাম। সে ছিল চাকরি জীবনের শুরু। আমাকে যেন অটোর ছাদে বসতে বললেও আমি না করতাম না। সম্পূর্ণ আলাদা তাগিদ, আলাদা অনুভূতি। এভাবেই আমাদের নিত্যযাত্রা সুন্দর হয়ে উঠেছিল, যখন সঙ্গী হিসাবে আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিতা ইংরাজির শিক্ষিকা শ্রীপর্ণা নন্দী কে পেলাম। সঙ্গী ছিল অঙ্কের শিক্ষক সুব্রত হাজরা। যদিও সুব্রত দা নিজের সাইকেলে যেতেন স্টেশন থেকে। কিছুদিন পর, আমরা তিনজন বজবজ স্টেশন থেকে শ্যামপুর পর্যন্ত হেঁটে গিয়ে ওখান থেকে একটা অটোতে চলে যেতাম। তাতে কিছুটা পয়সা সাশ্রয় হতো।

(সাত)
এহেন স্কুলে পৌঁছে প্রধান শিক্ষকের কাছে পৌঁছাবার আগেই এগিয়ে এলেন অসিত দা। নিয়ে গেলেন বিপ্লব দা ওরফে বাপি দার কাছে। পরিচয় হল শুভ দার সাথে, মান্ডি বাবুর সাথে, লীনা দি, সর্দার বাবু, ত্রিপাঠি বাবু, রমেশ দা আর অঞ্জু দি। এঁদের অনেকেই অবসর নিয়েছেন চাকরি থেকে কেউবা জীবন থেকে। যাইহোক, বাপি দা সকল অফিসিয়াল কাজকর্ম মিটিয়ে আমাকে বুঝিয়ে দিলেন। আমি জয়েন করলাম আমার প্রিয় উজ্জ্বল কান্তি জানা’র পোষ্টে। আমি আজীবন এই নয়াচক হাই স্কুলের কর্তৃপক্ষ, এখানকার ছাত্রছাত্রী, শিক্ষক উজ্জ্বল দা, অসিত দা, বাপি দা, হেডমাষ্টার তাপস কুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ও শ্রীপর্ণা ম্যাডামের কাছে চিরদিন কৃতজ্ঞ থাকবো। সেদিনের সেই ফুটে ওঠা কুঁড়ির সব ক্ষমতা ছিল হয়তো বিকশিত হবার, কিন্তু সব কিছুর উপরে দরকার ছিল একটা পরিবেশ যেটা এখানে এসে আমি পেয়েছিলাম। জীবনের প্রথম পাঠদান করতে গিয়ে শেখার ছিল অনেক। সেটা পেয়েছিলাম এখানে। মনোরম গ্রামীণ পরিবেশে আধুনিক শহুরে সভ্যতা ও সংস্কৃতির আঁচ। নাচ, গান, খেলায়, নাটক, আবৃত্তি সবেতেই ছেলেমেয়েদের প্রতিভা ছিল দুচোখ ভরে দেখার মতো। খেলায় বাপি দা আর মান্ডি বাবু। সংস্কৃতিতে উজ্জ্বল দা আর শ্রীপর্ণা ম্যাডাম।

(আট)
এই শিক্ষা মন্দিরের আচার্যদের পাশে বসতে পেরে নিজেকে ধন্য বলে মনে করি আজও। সবাই আমাকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিলেন। সবার কাছে আমি খুব গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠলাম বয়সে নবীন আর পরিশ্রমী হবার কারণে। সবার প্রিয় হয়ে উঠলাম। শিক্ষকরা জানলেও জানত না ছাত্রছাত্রীরা। কোন কিছু বুঝে ওঠার আগে আমি পূর্ণ সময়ের চাকরি পেয়ে চলে এলাম। আমার এই চাকরিতে সবাই খুশি হয়েছিলেন, কিন্তু চলে আসাতে নয়। চেষ্টা করেছিলেন যদি আমাকে নয়াচক হাই স্কুলে আনা যায়। কিন্তু পোষ্ট ছিল না। আজ অনেক দূরে থাকলেও মনটা পড়ে রয়েছে আজও সেই সুদূর নয়াচকে। মনে আছে মাতৃসম লীনা দি, আমার আড়ালে শ্রীপর্ণাকে প্রস্তাব দিচ্ছেন আমাকে বিয়ে করার জন্য। এগুলো ভেবে আজ মনে মনে হাসি পেলেও কষ্ট হয় লীনা দি অবসর নেবার কয়েকদিনের মধ্যে কুকুরের কামড়ে মারা যাবার খবরে। জানি না এটা সত্য কিনা? বাপি দা আর শুভ দা রাজনৈতিক মতাদর্শে ভিন্নধারার হলেও কি সুন্দর তাঁদের আলোচনা আর বিশ্লেষণ। সেই ছোট থেকে এঁদের দেখে আমাদের চলার পথ কুসুমাস্তীর্ণ হয়েছে। শ্রীপর্ণা আমার সমকালীন হলেও ওঁর থেকে আমি অনেক কিছু শিখেছি, আজও শিখি। আর যাঁদের নাম এখানে আলাদা করে নেব না, তাঁরা আমার প্রিয় ছাত্রছাত্রী, তাঁদের অনেকেই কিছু বুঝে ওঠার আগে আমি তাঁদের থেকে দূরে সরে এলেও আজ এতবছর পরেও তাঁরা সোশ্যালসাইটে আমাকে খুঁজে বের করেছে, বন্ধুত্ব পাতিয়েছে, কুশল বিনিময় করে। তাঁদের মধ্যে সবার নাম করা এখানে সম্ভব না হলেও সুদীপ, লাবনী, প্রিয়া, মধুপর্ণা, পূজা, সায়ন্তনী, সৌরভ, সাইফুদ্দিনদের নাম না করে উপায় নেই। একজন শিক্ষক এভাবেই বেঁচে থাকে সমাজের কাছে। নয়াচক আমার জীবনের একটা আঙ্গিক। আমি ভুল করেও কোনদিন ভুলে যাবো না তাঁকে। সেই যে যাত্রা শুরু হয়েছিল একটু বেলাভূমির উপরে, তখন কি আর জানতাম যে সমগ্র বেলাভূমির পুরো সৈকত জুড়ে লাল কার্পেট বিছিয়ে সমগ্র শিক্ষার আঙ্গিনা আমাকে আহ্বান জানাতে প্রস্তুত আছে। সবাই বলে শেষ ভালো যার, সব ভালো তার। আমি মনে করি শুরুটা ভালো যার, আপাতত ভালোই হল তার। শেষের কথা এখন ভাবলে শুরুটা না বিগড়ে যায়। ক্ষণিকের নয়াচক এক বৃহত্তর প্ল্যাটফর্ম আমার জন্য। তাই তো পূর্ণ সময়ের সরকারী চাকরি পেয়ে যাবার পরেও চোখের জল ফেলতে ফেলতে সেদিন বিদায় নিয়েছিলাম। আজও মিস করি বাঁশবাগানের ভিতর দিয়ে সরু রাস্তা দিয়ে গ্রামের ধার ধরে স্কুলের দিকে পদব্রজে এগিয়ে যাওয়া। বিভূতিভূষণের কথা আমাকে মনে করিয়েছিল। আজও মনে পড়ে স্কুলের পিছনে বড় পুকুর আর তেঁতুল গাছের ছায়া। সব থেকে বড় বিষয় নয়াচক আমাকে হাঁটতে শিখিয়েছে, প্রথম চাকরী দিয়েছে, প্রথম স্বনির্ভর হতে দিয়েছে, বাইকে চড়ে চাকরীর খবর দিয়েছে, দিয়েছে সুস্থ ও প্রাণবন্ত এক সংস্কৃতি ও শিক্ষার ঠিকানা। ভোলা যায় না তা। শুধু চোখের কোণ বেয়ে আনন্দে অশ্রু ধারা নেমে আসে। প্রণাম নয়াচক, প্রণাম নয়াচক হাই স্কুল, ভালো থেকো তোমরা সবাই।
রচনাকাল : ১৬/৬/২০২০
© কিশলয় এবং সনৎকুমার পুরকাইত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 7  China : 7  Europe : 3  Germany : 1  India : 87  Ireland : 4  Russian Federat : 10  Saudi Arabia : 2  Ukraine : 6  United Kingdom : 2  
United States : 81  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 7  China : 7  Europe : 3  Germany : 1  
India : 87  Ireland : 4  Russian Federat : 10  Saudi Arabia : 2  
Ukraine : 6  United Kingdom : 2  United States : 81  
© কিশলয় এবং সনৎকুমার পুরকাইত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
ক্লাসরুম থেকে স্টাফরুম by Sanat Kumar Purkait is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৬২৬৬২৫
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী