মা লক্ষ্মীর মর্ত্যে আগমন
(পৌরানিক নাটক)
রচনা- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
=================
চতুর্থ অঙ্ক চতুর্থ দৃশ্য
[রতনের বাটির সম্মুখভাগ]
[রতন ও মুক্তার প্রবেশ। মঞ্চের সম্মুখে কমলাসনে
কমলা লক্ষ্মী সমাসীন। হাতে প্রস্ফুটিত পারিজাত।
অন্য হাতে রত্নহার। ]
[ মা লক্ষ্মীর সম্মুখে মঙ্গলঘট। আমের পল্লব রাখা।
নববস্ত্র ও সশীষ ডাব। ফুল মালা ধান্য ও দূর্বা।
ঘৃত মধু ও গঙ্গাজল পাত্রে রাখা আছে।
ধূপ ও দীপ জ্বালে রতন ও মুক্তা।
উভয়ের পরণে পট্টবস্ত্র।]
[পাঁচালির সুরে রতন ও মুক্তা একসাথে গেয়ে ওঠে।
মিউজিকে সুরময় আবেশের সৃষ্টি করে।]
রতন: প্রণমামি লক্ষ্মীদেবী বসো মাগো ঘরে,
ভক্তিপুষ্প অর্ঘ দিয়ে পুজিব তোমারে।
তুমি মাতা লক্ষ্মীদেবী ঐশ্বর্ষ্যদায়িনী,
অপার মহিমা তব কি বর্ণিব আমি।
মুক্তা: এসো মাগো লক্ষ্মীমাতা তুমি মা কমলা,
মম গৃহে থাকো মাগো না হয়ো চঞ্চলা।
লক্ষ্মীর পাঁচালী কাব্য পড়ে যেইজন,
ধন বৃদ্ধি হয় ভবে সুখী সেইজন।
রতন: প্রতি গুরুবারে যেবা লক্ষ্মীপূজা করে,
সুখ, শান্তি, ধন, বৃদ্ধি হয় তার ঘরে।
লক্ষ্মী করুণায় ঘরে ভরে রত্নধন,
অন্তিমে পাই মা যেন অভয় চরণ।
[পূজার পাঁচালি পাঠ চলাকালীন একে একে গ্রামবাসীগণ আসে।
তাদের হাতে ফলমূল ও নৈবেদ্য। গ্রাম্য রমণীগণ সকলে একসাথে
প্রবেশ করে। সকলে শঙ্খধ্বনি ও উলুধ্বনি দেয়।]
পূজান্তে সকলের জয়ধ্বনি
রতন: জয় লক্ষ্মী মাতার জয়।
সকলে: জয় লক্ষ্মী মাতার জয়।
মুক্তা: জয় লক্ষ্মী মাতার জয়।
সকলে: জয় লক্ষ্মী মাতার জয়।
রতন: জয় লক্ষ্মী মাতার জয়।
সকলে: জয় লক্ষ্মী মাতার জয়।
[সকলে বিগ্রহের সম্মুখে প্রণাম করে। সহসা জনৈক বণিক প্রবেশ করে।]
বণিক: কার পূজা কর ভাই কহ সবিশেষ?
রতন: লক্ষ্মীপূজা করি তাই ঘুচিয়াছে ক্লেশ।
সকলে: সাধু সাধু!
রতন: দূরবাসী তুমি। তবু অতিথি হে এবে।
আতিথেয় সেবা তুষ্টি লহ হে অতিথি।
পূজান্তে প্রসাদ ভোগ করিলে গ্রহণ,
লক্ষ্মীর দয়ায় পাবে অমূল্য রতন।
বণিক: তবে তাই হোক। ধন্য ধন্য আজি আমি।
সপ্তডিঙা সাজাইয়া যাইব আজি ঘরে।
গিয়া পূজিব লক্ষ্মীরে শ্রদ্ধা ভক্তিভরে।
আজি হতে দিকে দিকে হউক প্রচার,
লক্ষ্মীর পূজন হোক বিশ্বের মাঝার।
[প্রসাদ গ্রহণ ও তত্পরে প্রস্থান}
[মহর্ষি নারদ সহ শ্রীবিষ্ণু নারায়ণের আবির্ভাব।]
শ্রীবিষ্ণু: ধন্য ধন্য তুমি রতন ।
যে কারণে পূজিলে কমলা।
সেইহেতু আজি হতে পূজাপাঠ করিবে সকল
বিশ্ববাসীগণ। কমলা। পরীক্ষায় উত্তীর্ণা তুমি।
চল যাই বৈকুণ্ঠলোকে। ভক্ত হাতে ফুল পেলে
তুমি। ভক্তজনেরে কর আশীর্বাদ।
পূরিবে সবার মনোসাধ। করিবে পূজা সবে।
প্রতি ঘরে ঘরে, প্রতি গুরুবারে, ভক্তি সহকারে।
[রতন ও মুক্তা সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করে। গ্রামবাসীগণ ও রমণীগণ সকলে
পূষ্প ও ফুলমালা দিয়ে পুজা করেন লক্ষ্মী নারায়ণের। স্বর্গ হতে দেবতারা পুষ্পবৃষ্টি করেন।
চতুর্দিকে আলোকময় প্রভায় স্থানটি রমণীয় হয়ে ওঠে।
মহর্ষি নারদ গেয়ে ওঠেন]
নারদ: ভগবান- ভগবান
তুমি প্রভু হে মোর ভগবান।
তব নাম লয়ে দেশে দেশে ফিরি
গাহি তব জয়গান।
[পূর্ব গীতাংশ]
নারদ: বলির দর্প গেল রসাতলে,
রাবণ মরিল সাগর জলে।
হল নির্মূল সারা কুরুকুল ধর্ম হলো সংস্থান।
ভগবান- ভগবান …………
তুমি প্রভু হে মোর ভগবান।
[যবনিকা]
রচনাকাল : ১৬/৬/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।