~পরিচারিকা ~
রূপক ঘোষ
গ্রীনপার্ক
বাড়ি বাড়ি কাজ করে,
ছোট মেয়ে ঝুমকো।
বয়সটা হবে বারো,
তার বেশি নয়কো।।
বস্তিতে থাকে মেয়েটি,
চেহারাটা শীর্ণ।
মা বাবা থাকে সাথে,
ঘরখানা জীর্ণ।।
ঘর মোছে, ঝাঁট দেয়,
মুখে হাসি লেগে রয়।
ফুরসত মেলে যদি,
পাকা পাকা কথা কয়।।
এক দিন না এলে,
ঝুমকোর ডাক পড়ে।
এরপর ও না এলে,
গিন্নির রাগ চড়ে।
আমি বলি রাগ কেন?
নাই বা ও আসলো।
মিলে মিশে একদিন,
সবাই কাজ করলো।।
মুখ খানা হাঁড়ি করে,
পাশ থেকে উঠে পড়ে।
সারাদিন গজ্ গজ্,
যাকে পারে মুখ করে।।
তিন দিন পরে কাজে,
ঝুমকো যেই আসলো।
দু-চার কথা তাকে,
শুনিয়েই ছাড়লো।।
কোন কিছু না বলে,
অভিমানে কাজ সারে।
কেন সে যে আসে নি,
জিজ্ঞাসা করে নি তারে।।
মনে মনে ভাবে মেয়েটি,
কি ছিল তার দোষ?
বাপ টা যে মারা গেছে,
হয়নি মরার বয়স।।
এরপর একদিন ঘটনাটা ঘটলো,
সোনার গলার হার ঘর থেকে হারালো।
চিৎকারে বাড়িময় হই চই জুড়লো,
চুরির ঘটনায় ঝুমকো কে জড়ালো।।
নানা জনে নানা ভাবে,
জেরবার করলো।
কিছুই জানি না বলে,
হাত জোড় করলো।।
এরপরে থানা - পুলিশ,
কত কিছু ঘটলো।
হার খানা না পেয়ে,
জেলে তাকে ভরলো।।
হঠাৎ জানা গেল,
হার চুরি যায় নি।
কোথা যেন রাখা ছিল,
মনে কারো পড়ে নি।।
ছাড়া পেয়ে মেয়েটি বলে,
চুরি আমি করি নি।
গরীব বলে মোরে,
বিশ্বাস কর নি।।
এটাই নিয়ত ঘটে থাকে সমাজে,
লজ্জায় মাথা নত হয় না আমাদের।
অপবাদ দিয়ে থাকি খেটে খাওয়া শ্রেণীকে,
তারপর ও নিয়ে থাকি সেবাটুকু গরীবের।।
১৯ শে জ্যৈষ্ঠ, ১৪২৭
রচনাকাল : ১৬/৬/২০২০
© কিশলয় এবং রূপক ঘোষ কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।