স্থান কলকাতার আধুনিক সজ্জায় সজ্জিত সকল মানুষের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু ইকোপার্ক। প্রাণচঞ্চল তিলোত্তমা মহানগরী কলকাতার কোলাহল কাটিয়ে এই ইকোপার্ক ব্যস্ত জীবনের একটু হাঁফ ছেড়ে প্রাণভরে মুক্ত অমলিন বিশুদ্ধ শ্বাস নেওয়ার ঠিকানা। যাইহোক, আসল কথায় আসা যাক। এহেন ইকোপার্কে সুকন্যা ম্যাডাম দাম্পত্যসুখে হাসিতে লুটোপাটি খাচ্ছিল। সুকন্যা, সুকন্যা দত্তগুপ্ত কলকাতার বনেদি পরিবারের মেয়ে। পড়াশুনায় ভালো। চাকরীও জুটিয়েছে। মফস্বলের একটি কলেজের অধ্যাপিকা। বিয়ে হয়েছে রাজারহাটের সুমন বিশ্বাসের সাথে। সুমন পেশায় সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কর্মস্থল সল্টলেক সেক্টর ফাইভ। সুখের অন্ত্য নাই। যাইহোক, সপ্তাহের মাঝে কোন এক কর্মব্যস্ত দিনের পড়ন্ত বিকেলে সুকন্যা ও সুমনকে দেখা গেল ইকোপার্কের এক বসার বেঞ্চে। আড়চোখে দেখে সবাই ভাবছিল ওই বুঝি সর্বসুখী। কিন্তু এত সুখের মাঝেও অন্তরে চাপা টেনশন কাজ করছিল সুকন্যার। কারন, কলেজে নতুন জয়েন করার পর থেকে এ পর্যন্ত ওর আর্লি ডিপারচার নিয়ে পরপর চারটে মিটিং এ এজেন্ডা ছিল। সুকন্যা ক্লাস ফাঁকি দিয়ে রোজ দুটোর আগে কলেজ পালিয়ে যায়। বিষয়টা নিয়ে সবাই বিরক্ত। সেবার তো ছাত্রছাত্রীরা প্রিন্সিপালকে লিখিত জমা দিল। প্রতিবার মুখ পুড়িয়ে ক্ষমা চেয়ে মিটিং শেষে বেরোতে হয়। ওখান থেকে বেরোলেই আবার যে কে সেই। এই হল সুখের নমুনা। নিজের সুখের কারনে প্রতিদিন শত সহস্র ছাত্রছাত্রীদেরকে বঞ্চিত করে বিনা অনুশোচনায় স্থানত্যাগ করেন। আর অপরদিকে কমলিনী ম্যাডাম সাড়ে চারটের ক্লাসটা নিতে গিয়ে রোজ শ্বাশুড়িমাতার কাছে কথা শুনতে হয়। আর বুঝি কেউ কলেজে চাকরী করে না। তোমার এত দেরি হয় কেন? কমলিনী বোঝাতে গিয়ে বারবার ব্যর্থ মনোরথে প্রত্যাবর্তন করেন। তাতে কি তাঁর সুখ তো হাজার হাজার ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে। সবাই কমলিনী ম্যাডাম বলতে পাগলপারা। তাঁর হৃদয় সুখের আতিশয্যে ভেসে যায়। প্রসঙ্গত বলে রাখি, এই গল্পের কাহিনী ও সংশ্লিষ্ট চরিত্র সবই কাল্পনিক। ঘটনার মধ্যে কেউ যদি তাঁর জীবনের বাস্তব ছবি প্রতীয়মান হতে দেখেন তাহলে অনুগ্রহপূর্বক এড়িয়ে যাবেন। ধন্যবাদ।
রচনাকাল : ১৫/৬/২০২০
© কিশলয় এবং সনৎকুমার পুরকাইত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।