সুখের চাবিকাঠি
আনুমানিক পঠন সময় : ২ মিনিট

লেখক : সনৎকুমার পুরকাইত
দেশ : India , শহর : ডায়মন্ডহারবার

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , জুন
প্রকাশিত ৯৭ টি লেখনী ৪০ টি দেশ ব্যাপী ৩৭৮০৭ জন পড়েছেন।
Sanat Kumar Purkait
     শশাঙ্কের জীবনে চল্লিশটা বসন্ত পেরিয়ে গেল এ বছর। অনেক লড়াই করে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। কোম্পানিতে টপমোস্ট পজিশনে এখন শশাঙ্ক রায়মণ্ডল। ব্যস্ততা কমেছে, কিন্তু দায়িত্ব বেড়েছে। সমাপ্তি আর পাঁচ বছরের শিশু সূচনাকে নিয়ে ছোট তাঁর ছোট্ট পরিবার। বেশ সুখে কাটছিল দিন। বেশ কয়েকমাস ধরে শশাঙ্ক দেরি করে ফিরছে। মদ্যপান করেও আসছে মাঝে মাঝে। সমাপ্তি কিছু জিজ্ঞাসা করলেই প্রচণ্ড রেগে যাচ্ছেন। শশাঙ্ক এখন তাঁর আপিসের বস। আপিসের বস তাঁর জুনিয়র মহিলা স্টাফকে লিফ্ট দেওয়ার স্বপ্নে বিভোর। বাড়িতে যতই অশান্তি হোক না কেন আপিসের স্টাফদের সাথে কোন খারাপ প্রভাব পড়ে না। এ হেন জুনিয়র মহিলা স্টাফকে নিয়ে সকাল বিকাল নতুন করে স্বপ্ন দেখেন। একদিন সূচনা আব্দার করে বাবাকে বলেছিল, ‘ও বাবা, আজ তুমি আমাকে স্কুলে দিয়ে আসবে চল। সবাইয়ের বাবা তো আসে বলো। তুমি চল। বাবা শশাঙ্ক পেপারে মুখ গুঁজে বসে শুনতে শুনতে হটাত চিৎকার করে বলে উঠলেন আমার যাওয়ার সময় নেই। তুমি তোমার মায়ের সাথে যাও’। বাবার চিৎকার শুনে বাবাকে সেদিন নতুন করে চিনেছিল পাঁচ বছরের সরল শিশুকন্যা সূচনা। এমন সময়, মেয়ের স্কুল ডন বস্কে  পরীক্ষা শুরু হল। বাংলা পরীক্ষায় পরিবার নিয়ে রচনা এসেছিল। সর্বসুখী বসের মেয়ে রচনা লিখল... পরিবার নিয়েই রচনা লিখেছিল একেবারে প্রাঞ্জল ভাষায়। সে লিখেছিল 'আমাদের পরিবার খুব বাজে। আমার বাবা আমাকে একদিনও স্কুলে দিতে আসে না। আমাকে বকে দেয়। মাকেও মারতে যায়।'.....ইত্যাদি ইত্যাদি। বাংলার ম্যাডাম তাঁর এই রচনা পড়ে প্রিন্সিপালের নজরে আনেন এবং মেয়েটির কাউন্সেলিং দরকার বা তার বাবা মায়ের সাথে কথা বলা দরকার। সেইমতো সবকিছু এগোল। শশাঙ্ক যথারীতি ম্যাডামকে দুটো বাজে কথা শুনিয়ে দিল। বাড়িতে থমথমে পরিবেশ।তবুও বস লিফ্ট দিতে ফেল করে না। এখানেই সুখের উৎস ভিন্ন হলেও সুখ তাঁর মতো করে খুঁজে নিয়েছিল শশাঙ্ক। তারপর এক ছুটির দিন ছোট্ট মেয়ে কচি কচি আঙ্গুলগুলি স্পর্শ করলো শশাঙ্কের হাতের উপর। ‘বাবা, আজ আমরা একসাথে খাবো। অনেকদিন তোমার সাথে খাওয়া হয় নি। এসো না। এসো। আমি আজ তোমাকে খাইয়ে দেবো’। দরজার আড়ালে দাঁড়িয়ে সকলের অজান্তে চোখটা বারেবারে মুছে নিচ্ছিল সমাপ্তি। শশাঙ্কের চোখের কোনা বেয়ে দু ফোঁটা জল গড়িয়ে পড়ল। জড়িয়ে ধরল শশাঙ্ক, দুহাত এগিয়ে ফুলের মতো সূচনাকে জড়িয়ে ধরল নিজের বুকের মাঝে। এখন আর শশাঙ্ক সুখ খুঁজতে জুনিয়র স্টাফকে লিফট দিতে ছোটে না। মেয়েকে সময় দেয়। সমাপ্তির সাথে পালা করে মেয়েকে স্কুলে দিতে যায় শশাঙ্ক। আনন্দে ভরে ওঠে জীবন। প্রসঙ্গত বলে রাখি, এই গল্পের কাহিনী ও সংশ্লিষ্ট চরিত্র সবই কাল্পনিক। ঘটনার মধ্যে কেউ যদি তাঁর জীবনের বাস্তব ছবি প্রতীয়মান হতে দেখেন তাহলে অনুগ্রহপূর্বক এড়িয়ে যাবেন। ধন্যবাদ।       
রচনাকাল : ১৫/৬/২০২০
© কিশলয় এবং সনৎকুমার পুরকাইত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 3  Germany : 1  India : 84  Ireland : 2  Netherlands : 1  Russian Federat : 10  Saudi Arabia : 4  Ukraine : 7  United States : 58  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Canada : 1  China : 3  Germany : 1  India : 84  
Ireland : 2  Netherlands : 1  Russian Federat : 10  Saudi Arabia : 4  
Ukraine : 7  United States : 58  
© কিশলয় এবং সনৎকুমার পুরকাইত কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
সুখের চাবিকাঠি by Sanat Kumar Purkait is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৫০৬৯৮৭
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী