করোনার সংগ্রাম- সচেতনার হাতিয়ার।
সবাই করো সংগ্রাম........ দশম পর্ব
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
করোনা ভাইরাস সংক্রমণের প্রধান লক্ষণ হলো, শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, জ্বর এবং কাশি। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসটি শরীরে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় পাঁচ দিন লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর। তারপর দেখা দেয় শুকনো কাশি। এক সপ্তাহের মধ্যে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয় এবং তখনই কোনও কোনও রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
কীভাবে ছড়িয়েছে এই ভাইরাস
মধ্য চীনের উহান শহর থেকে এই রোগের সূচনা। ৩১ ডিসেম্বর এই শহরে নিউমোনিয়ার মতো একটি রোগ ছড়াতে দেখে প্রথম চীনের কর্তৃপক্ষ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকে সতর্ক করে। এরপর ১১ জানুয়ারি প্রথম একজনের মৃত্যু হয়।
তবে ঠিক কীভাবে এর সংক্রমণ শুরু হয়েছিল, তা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারেরনি বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, সম্ভবত কোনও প্রাণী এর উৎস ছিল। প্রাণী থেকেই প্রথমে ভাইরাসটি কোনও মানুষের দেহে ঢুকেছে এবং তারপর মানুষ থেকে মানুষে ছড়িয়েছে।
এর আগে সার্স ভাইরাসের ক্ষেত্রে প্রথমে বাদুড় এবং পরে গন্ধগোকুল থেকে মানুষের দেহে ঢোকার নজির রয়েছে। আর মার্স ভাইরাস ছড়িয়েছিল উট থেকে।
করোনা ভাইরাসের ক্ষেত্রে উহান শহরে সামুদ্রিক একটি খাবারের কথা বলা হচ্ছে। শহরটির একটি বাজারে গিয়েছিল এমন ব্যক্তিদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ ঘটেছে বলে প্রমাণ পাওয়া গেছে। ওই বাজারটিতে অবৈধভাবে বন্যপ্রাণী বেচাকেনা হতো
কিছু সামুদ্রিক প্রাণী যেমন বেলুগা জাতীয় তিমি করোনা ভাইরাস বহন করতে পারে। তবে উহানের ওই বাজারে মুরগি, বাদুড়, খরগোশ এবং সাপ বিক্রি হতো।
এর চিকিৎসা কী?
ভাইরাসটি নতুন হওয়াতে এখনই এর কোনও টিকা বা প্রতিষেধক আবিষ্কার হয়নি। এমনকি এমন কোনও চিকিৎসাও নেই, যা এ রোগ ঠেকাতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইতোমধ্যে মানুষকে নিয়মিত হাত ভালোভাবে ধোয়া নিশ্চিত করার পরামর্শ দিয়েছে।
হাঁচি-কাশির সময় নাক-মুখ ঢেকে রাখা এবং ঠান্ডা ও ফ্লু আক্রান্ত মানুষ থেকে দূরে থাকারও পরামর্শ দিয়েছে তারা। এশিয়ার বহু অংশের মানুষ সার্জিক্যাল মুখোশ পরা শুরু করেছে।
মনে রাখবেন হাত সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, বারবার হাত ধুতে হবে। হাত দিয়ে নাক বা মুখ ঘষবেন না, ঘরের বাইরে গেলে মুখোশ পরতে হবে। ‘আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মুখোশ পরুন, আর নিজে অসুস্থ না হলেও, অন্যের সংস্পর্শ এড়াতে মুখোশ পরুন।’
বাইরে বেরোবেন না। ঘরের কোণে বন্দী থাকুন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে দূরে থাকুন। সবাইকে দূরে রাখুন। নিজে বাঁচুন অপরকে বাঁচান। সু্স্থ থাকুন, অপরকে সুস্থ রাখুন। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!
সবাই করো সংগ্রাম........ দশম পর্ব
কবি- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
করোনা ভাইরাস ছেয়ে গেল দেশ
দিকে দিকে শুনি হাহাকার,
দিনে দিনে কত অসহায় মানুষ
হতেছে করোনার শিকার।
বন্ধ সবে আজ আপন আলয়ে
জন বিহীন পথ ঘাট,
ঘরে নাই চাল পড়েছে আকাল
বন্ধ সব দোকানপাট।
লকডাউন তাই অন্য পথ নাই
বন্দী তাই গৃহের কোণে,
মৃত্যুর মিছিলে মানুষ সকলে
আজ মৃত্যুর প্রহর গোনে।
নিজে বাঁচো আর অপরে বাঁচাও
হাত ধুয়ো ডেটল জলে,
স্যানিটাইজার করো ব্যবহার
পড়োনা করোনার কবলে।
গৃহে বন্দী থাকো, মুখ ঢেকে রাখো
পাবে করোনা থেকে নিস্তার,
গৃহে বন্দী হলে বাঁচিবে সকলে
ভাইরাসের হবে না বিস্তার।
বাঁচার লড়াই দিকে দিকে আজ
শুনি দূরে মৃত্যুর আহ্বান,
মানুষের তরে যুঝিছে মানুষে
কোথায় লুকালো ভগবান?
রচনাকাল : ৮/৬/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।