করোনার সংগ্রাম- সচেতনার হাতিয়ার।
সবাই করো সংগ্রাম........ তৃতীয় পর্ব
তথ্যসংগ্রহ ও কলমে- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত আজ সারা বিশ্ব। অসুস্থ পৃথিবীর অসহায় মানুষেরা আজ মৃত্যুর মুখে প্রহর গুনছে। মারণ সংগ্রামের প্রথম ও প্রধান হাতিয়ার জন সচেতনতা। ঘন ঘন স্যানিটাইজার ব্যবহার করা মানেই করোনা ভাইরাস থেকে নিজেকে দূরে রাখা। মুখে থাকুক মাস্ক। কয়েকটি সাধারণ অভ্যাস মেনে চললে এ থেকে বেঁচে থাকা খুবই সহজ হয়ে যায়–
ঘন ঘন ভালো করে হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে। যদি সম্ভব হয়, প্রতি ২ ঘণ্টা পর পর হাত ধোয়া উচিত। ভালো করে বলতে অ্যালকোহল বেসড সলিউশন, যা বাজারে হেক্সিসল বা হেক্সিরাব নামে পাওয়া যায়, সেসব দিয়ে হাত ধুতে পারলে ভালো। না পারলে ভালো সাবান বা হ্যাণ্ডওয়াশ দিয়ে পরিষ্কার করা উচিৎ। অন্তত ২০ সেকেণ্ড প্রবাহমান জলের নিচে হাতের তালু, আঙুলের ফাঁকা জায়গা, নখ ভালো করে ঘষে কবজি পর্যন্ত হাত ধোয়া। বাইরে থেকে এসে এবং খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে হাত ধুতে হবে।
বাইরে বের হওয়ার সময় মাস্ক ব্যবহার করা ভীষণ জরুরি। এন৯৫ বা এন৯৯ মাস্ক ব্যবহার করতে পারলে ভালো। তবে, আমাদের দেশে এগুলো অপ্রতুল বিধায় আর যেহেতু এখনও দেশে করোনা ভাইরাসের আউটব্রেকের খবর পাওয়া যায়নি, অন্তত সার্জিক্যাল মাস্ক ব্যবহারের অনুরোধ করছি। সার্জিক্যাল মাস্কগুলো সাধারণত ৩ লেয়ারের হয়। যেগুলো সাধারণ ক্ষেত্রে ভাইরাসকে আটকাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে এ নিয়ে গবেষণা চলছে। বিতর্কেরও শেষ নেই। এজন্য বাড়তি সাবধানতা অবলম্বন করে অন্তত ২টা মাস্ক একত্রে ব্যবহার করতে পারলে ভালো হয়। আর নীল-সাদা কোন পাশ বাইরে রাখতে হবে, সেটা নিতান্তই ব্যক্তিগত। উভয় ক্ষেত্রেই তিনটি লেয়ার থাকে যেহেতু, সুরক্ষাও একই থাকে। সাধারণত নীল পাশ বাইরেই রাখা হয়। তবে খেয়াল রাখতে হবে, মাস্কের যে পাশ সামনে থাকে তাতে আড়াআড়িভাবে থাকা ভাঁজ গুলো যাতে নিম্নমুখী থাকে। তাহলে ভাঁজেভাঁজে ধুলোবালি আটকে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়।
এ ভাইরাসগুলো সাধারণত কয়েক মিটার দূরত্ব গিয়ে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এজন্য রোগাক্রান্ত ব্যক্তির থেকে অন্তত ২ মিটার দূরত্ব বজায় রেখে চলাই উত্তম। আর যাদের উপসর্গ দেখা দেবে, তাদের থেকেও নিরাপদ দূরত্ব রেখে চলতে হবে। হাঁচি দেওয়ার সময় অবশ্যই নাক-মুখ ঢেকে হাঁচি দিতে হবে। প্রয়োজনে টিস্যু দিয়ে ঢেকে সেই টিস্যু ফেলে দিতে হবে যাতে সে টিস্যু থেকেও আবার জীবাণু না ছড়ায়। আর হাতের কাছে টিস্যু বা রুমাল না থাকলে হাতের কনুই বাকা করে সে ভাঁজ দিয়ে নাক ঢেকে হাঁচি দিতে হবে। হাতের তালু ব্যবহার না করাই ভালো। হাতের তালু দিয়ে সব জায়গায় স্পর্শ করা হয়, এজন্য হাতের তালু নাক বা মুখের কাছে নিলে তা থেকেও বাইরে থেকে শ্বাসনালীতে জীবাণু ঢুকার সম্ভাবনা থেকে যায়।
এই ভাইরাস রোদে বেশিক্ষণ থাকলে নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় বলে ধারণা করা হচ্ছে। এজন্য বাইরে থেকে এসে ব্যবহৃত পোশাক-পরিচ্ছদ ভালো করে রোদে বা উচ্চ তাপমাত্রায় শুকাতে হবে। ঝুঁকিতে থাকা ব্যক্তিদের পাবলিক প্লেস এড়িয়ে চলতে হবে। জ্বর-কাশি-সর্দি থাকলে তাদের থেকে নিরাপদ দূরত্ব (অন্তত ২ মিটার) বজায় রাখতে হবে। করমর্দন পরিহারযোগ্য।
দিকে দিকে লক-ডাউন। তাই বাইরে বেরোবেন না। ঘরের কোণে বন্দী থাকুন। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ থেকে দূরে থাকুন। সবাইকে দূরে রাখুন। নিজে বাঁচুন, অপরকে বাঁচান। সু্স্থ থাকুন, অপরকে সুস্থ রাখুন। জয়গুরু! জয়গুরু! জয়গুরু!
সবাই করো সংগ্রাম........ তৃতীয় পর্ব
কবি- লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী
ভাইরাস ! নোভেল করোনা ভাইরাস!
ধরে ধরে মানুষেরে করে সে যে গ্রাস।
ধনী আর নির্ধনে সে, না করে বিচার,
হিন্দু, মুসলিম, শিখ, করে সে আহার।
চীন থেকে এসেছে করোনা ভাইরাস,
দিকে দিকে আক্রমণ করে বিশ্বত্রাস।
ইতালি, জার্মানি, ফ্রান্স পাঠায়েছে চর,
ভারতেও এসে গেছে তাই লাগে ডর।
ধর্ম কর্ম সব বুঝি যাবে রসাতলে,
মানুষ আনিল ডেকে নিজ কর্মফলে।
মানুষ ও ভাইরাসে করিছে সংগ্রাম,
আক্রান্ত মানুষ করে মৃত্যুরে আহ্বান।
মাভৈঃ মাভৈঃ কহে চিকিত্সা বিজ্ঞান,
লক্ষ্মণ লিখিল কাব্য করোনা-আখ্যান।
রচনাকাল : ৮/৬/২০২০
© কিশলয় এবং লক্ষ্মণ ভাণ্ডারী কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।