প্রায় মাস-দেড়েক বাদে বুলা শিখা বৌদির বাড়ি যাচ্ছে। এই কটা দিন বিন্দির বাবা বুলাকে বেশ যত্নেই রেখেছিলো। ভোলা এমনিতে বেশ ভালো , কিন্তু পেটে লাল জল পড়লেই অন্য মানুষ।
লকডাউনের জেড়ে মদের দোকানগুলো বন্ধ হয়ে ভালোই হয়েছে । যেই না ভাবা ! ওমনি ভোলা পাশে এসে ফিসফিসিয়ে বললো , ' টিনের কৌটাতে দেখলাম , দুশোটাকা রেখেছিলি , আমি নিয়ে যাচ্ছি , আজ বিনটে বললো , মালের দুকান টা খুলবে লে । '
বুলা হতবাক , চোখের কোল দিয়ে এক-ফোঁটা জল গড়িয়ে গেলো , ভাবলো , কাল বিন্দির মুখে সে কি ভাবে দু-মুঠো ভাত তুলে দেবে? কি কোরে সে চাল টা কিনে এক সপ্তাহের জন্য রেখে দেবে? কি কোরে করবে সে সব কিছু ,এই ভেবে সে রাস্তার মোড়ে দাঁড়িয়ে নিশ্চুপে চোখের জল ফেলে তারই আধ-,পুরোনো শাড়ির আঁচল দিয়ে তা মুছে নিয়ে বাকি পথ চলতে শুরু করলো ধীর গতিতে।
এই কিছুদিন বুঝি সবই সপ্ন ছিলো বুলার কাছে , সারা বিশ্বব্যাপী কোরোনার ত্রাসে যে লকডাউন হয়েছে , তা যে আরও কতো বুলার মতো মেয়ে বা বউ এর মুখে একটু হাসি একটু সুখের প্রলেপ ছড়িয়ে দিয়েছে , তা আমাদের কাছে অজানাই হয়ে থাকবে।
রচনাকাল : ৫/৬/২০২০
© কিশলয় এবং লিজা মন্ডল কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।