অব্যক্ত
আনুমানিক পঠন সময় : ৪ মিনিট

লেখিকা : নন্দিতা সরকার
দেশ : India , শহর : সোনারপুর

কিশলয়তে প্রথম আত্মপ্রকাশ - ২০২০ , এপ্রিল
প্রকাশিত ১৬ টি লেখনী ২৯ টি দেশ ব্যাপী ১১২৮৩ জন পড়েছেন।
আপন হতে বাহির হয়ে  বাইরে দাঁড়া,
বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া।। 
     আজ গানটা শুনে দিতি র ঘুম ভাঙ্গল।আজ অনেক কাজ,মিম এর জন্মদিন... মেয়ে তার বড্ড অভিমানী,চাইনি দিতি দূরে যাক,সে বুঝিয়েছিল তার জন্যই তার বেঁচে থাকা, না হলে যাকে বাবা মার অমতে বিয়ে করে দিন রাত  কষ্ট আর অবজ্ঞা পেয়েছে...তার ভালো লাগা মন্দ লাগার সে ধার ধারেনি,
       আর যাই হোক বিশ্বাস  ...যেটা স্বামি স্ত্রী বন্ধন ,সেটা দৃঢ় হয়নি,সেখানে থাকার কোনো মানে খুঁজে পাইনি।তাকে বাঁচি য়ে রেখেছিল তার প্রাণের ঠাকুর রবি ঠাকুর,আত্মার শান্তি বিবেকানন্দ,
লড়াই করার ক্ষমতা নেতাজির থেকে  পেয়েছিল।
      পুরনো ভাবনা র তার ছিড়ে যায় বাবা র মত মানুষ অমল সেন এর কথায়।সবাই এখানে তাকে ভালো বাবা বলেই ডাকে।তিনি দিতি কে পুরুলিয়ার  এনে অচেনা ভারত কে চিনিয়ে ছিলেন। 
       তিনি না থাকলে এই মানুষ গুলো কে দিতি চিনতো না, ক্ষুধার্ত ভারত, অপুষ্ট ভারত , অশিক্ষিত ভারত কাকে বলে।
  প্রথম এসে অমল বাবা তাকে নিয়ে দেখিয়েছিল মানুষ গুলো কেমন বেঁচে আছে।যারা ভাত খেলে ভাবে ভোজ খাচ্ছে,দেখলো  কচু সেদ্ধ নুন দিয়ে খেয়ে মানুষ কেমন দিন গুজরান করে,বিনা চিকিৎসায়  মানুষ কেমন মারা যায়, অপুষ্ট শিশু র বেড়ে না ওঠা।
     সহ্য করতে পারিনি ,সেদিন থেকে ওদের সুখদুঃখ হাসি কান্নার সাথী নিজেকে করেছে।সংসার  এ বুঝেছিল ....            
       গোপন থাক   গোপন ব্যথা,
      গোপন থাক    মনের কথা,
   গোপন থাক    মনের ব্যথা , 
তার বন্ধু তাকে সংসারী সন্ন্যাসিনী বলতো।সত্যি হইতো সংসার এর নোংরামি  দেখতে দেখতে সে অনেক দিনই মনে মনে সন্ন্যাসিনী  হয়ে গিয়েছিল।মিম কে সে কলেজে অধ্যাপিকা করেছে।তার অধরা স্বপ্ন মেয়ে রূপ দিয়েছে।এটাই মিম কে ছোট থেকে শিখিয়েছে  নিজের পায়ে না দাঁড়ালে এই সমাজ যতই বড়াই করুক ছেলেমেয়ে সমান সমান ,কিন্তু কখনোই  সে অধিকার কেউ দেই না,অধিকার ছিনিয়ে নিতে হবে,না হলে তাকে তার মা র মত পস্তাতে হবে। মেয়ে বলেই বুঝত,আজ মন টা তার খুব চাইছিল মিম কে দেখতে,কিন্তু অভিমানী মেয়ে তার  ।আসবে না।
  দিতি র অনেক কাজ ,শিব কে পূজো দিয়ে ,ছোট পুঁচকে গুলো কে যে তাদের দিতি মা পায়েস খেতে দেবে। তাই পড়া আজ নমনমো।
  ৩০টা গাছ তাকে লাগাতে হবে ওদের নিয়ে।মিম এর ৩০ বছর পূর্ণ হবে আজ।অমল বাবা সব ব্যবস্থা করে দিয়েছেন।নিজেও  এই রুক্ষ ভূমিতে গাছ লাগিয়ে, এই দরিদ্র মানুষ গুলোর পাশে থেকে,তাদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করেছেন।সপ্তাহে একবার তার ছাত্র ডাক্তার  কর এসে দেখে যান।
    পিপলু, বুধাই,রঞ্জি ,শ্যামা  সবাই এসে দিতি মা কে ঘিরে রেখেছে।তাদের বৃক্ষ উৎসব। পলাশ,কুসুম,শিমুল ,দেবদারু, আমড়া,অমল তাস ,অর্জুন,আমলকী,বহেড়া,পিয়াসাল, কুর্চ ই ,মহুয়া, শাল ..সব গাছ গুলো লাগান হবে।চরম ব্যস্ততা সব কচিকাঁচা দের মধ্যে। তারা
  
     মরু বিজয়ের কেতন উড়ায় এ গাইতে গাইতে গাছ লাহবে।
  লাল মাটিকে সবুজায়ন করতে সবাই চললো ,পাশে ও গ্রামের অনেকে চললো। 
   মা তো,দিতি র মন টা মুখে হাসি হলেও বুক এ চাপা কষ্ট হচ্ছিল।আজ অবধি তো কেউ তাকে বুঝলো না।
     অমল বাবা তাকে তার প্রিয় হলুদ পলাশ গাছ টা লাগাতে বলল।সবাই গান টা গাইছিল...
   লাগানোর পর জল দিতে বলবে বলে মুখ টা তুলতে দেখলো জল নিয়ে মিম ।মার  মনের ডাক এ সে সাড়া না দিয়ে পারেনি....পাশে অমল দাদু হাসি মুখে ....নাতনি কে বললেন 

শুধু নিশ্বাস প্রশ্বাস নেওয়া টা বাঁচা নয় দিদিভাই ,তার ও বাইরে এমন জিনিস আছে যেটা বেঁচে থাকার  মন্ত্র। 
  মিম এর এই আসা টা অপ্রত্যাশিত হলে ও সবাই মিম দিদি কে ঘিরে নাচছে দেখে তার ও ভালো লাগলো।।সব গাছ লাগানোর পর মিম যখন তাকে জড়িয়ে ধরলো তাদের আনন্দাশ্রু  তে দিনটা   অসাধারণ কাটলো।।।নিজেই গাইলো বৃষ্টির সাথে  
  
আজ আকাশের মনের কথা ঝরো ঝরো বাজে.....
রচনাকাল : ১৮/৫/২০২০
© কিশলয় এবং নন্দিতা সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।

শেয়ার করুন    whatsapp fb-messanger fb-messanger



যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 3  Canada : 35  China : 25  France : 4  Germany : 1  India : 230  Ireland : 80  Italy : 1  Malaysia : 1  Russian Federat : 10  
Saudi Arabia : 4  Sweden : 12  Ukraine : 10  United States : 223  
যেখান থেকে লেখাটি পড়া হয়েছে -


Bangladesh : 3  Canada : 35  China : 25  France : 4  
Germany : 1  India : 230  Ireland : 80  Italy : 1  
Malaysia : 1  Russian Federat : 10  Saudi Arabia : 4  Sweden : 12  
Ukraine : 10  United States : 223  
লেখিকা পরিচিতি -
                          নন্দিতা সরকার ১লা জানুয়ারি দক্ষিণ পরগণা জেলার সোনারপুরে জন্মগ্রহণ করেন।
তিনি একজন গৃহবধূ হওয়ার সাথে সাথে শিক্ষকতার সাথেও যুক্ত। এর পাশাপাশি তিনি সাহিত্য চর্চাতেও সমান আগ্রহী। কবিতা লেখা তাঁর ভীষণ প্রিয়, এর সাথে সাথে তিনি স্কুলে গীতি আলেখ্যও লেখালেখি করেন। কিশলয় পত্রিকার মাধ্যমেই তাঁর প্রথম অনলাইন পত্রিকায় লেখালেখি করার আত্মপ্রকাশ। 
                          
© কিশলয় এবং নন্দিতা সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।
অব্যক্ত by Nandita Sarkar is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivs 3.0 Unported License Based on a work at this website.

অতিথি সংখ্যা : ১০৪৮৩৯১৬
  • প্রকাশিত অন্যান্য লেখনী