পর্ব - (১)
ঈশ্বরের এক রহস্য সৃষ্টি নারী,
প্রথম ভাগে কুমারী বলে,
সব সহ্য করতে পারি।
তারপরে সে ষোড়শী
দেহে আসে রূপ যৌবন,
পুরুষ ভাবে কামনার আগুনে,
সব পোড়াব কিছুক্ষন।
সেই কামনাও পরিনতি পায়
তার নাম দেওয়া হয় বিয়ে,
অদৃষ্টের একি পরিহাস,
পিছন ছাড়েনা গিয়ে।
তার পরের ভাগ সংসার জীবন,
কিছু সুখ কিছু দুঃখ,
পুরুষ নারীর মতের অমিল,
জীবন যে হয় রুক্ষ।
একে একে আসে সন্তান সব,
সংসার হয় পূর্ণ,
নারী ভাবে আমি পেয়েছি সবই,
আর কিছু নেই শূন্য।
সন্তান ক্রমে বড় হতে থাকে,
নারীর জায়গা কমে,
একদিন তারা ঠেলে দেয় মাকে,
পাঠায় বৃদ্ধাশ্রমে।
বাপের ঘর স্বামীর ঘর,
অবশেষে সন্তানের ঘর,
ভাগ্যের পরিহাসে,
একে একে সবই পর।
মৃত্যুর সময় ঈশ্বরেরে,
জিজ্ঞাসা করে নারী,
সবই তো দিয়েছ পুরুষকে,
আমরা কি পদতলে তারই?
ঈশ্বর বলে নারী জাতির
আর এক নাম সহ্য,
সবই দিবি উজাড় করে,
পুরুষ করবেনা তবু গ্রাহ্য।
কুমারী, ষোড়শী, যৌবনা, বৃদ্ধা,
একই অঙ্গে সৃষ্ট নারী
নিজে স্বয়ংসিদ্ধা
পর্ব - (২)
কন্যাসন্তান হিসেবে বাবার
সংসারে অবহেলা,
স্ত্রী হিসেবে শ্বশুর বাড়িতে,
সম্মান না থাকা।
শেষ বয়সে সন্তানের ঘরে বোঝা
হিসেবে হেলাফেলা।
রাস্তায় অশ্লীলতার স্বীকার
সন্তানের জন্ম দিতে গিয়ে কষ্ট,
নানান নিপীড়নের শিকার নারী,
কবে বদলাবে এই সমাজ??
নারী শিক্ষা উন্নতির প্রতিটি
ক্ষেত্রে, প্রতিটি স্তরে নারী,
তবু্ও এই সমাজে সেভাবে
তাদের নেই কোনো দাম,
যোগ্য জবাব দেবে কে??
উত্তর চাই তারই??
এক শ্রেণীর মানুষ চন্ডীকে যে শ্রদ্ধায় পুজো করে, তুষ্ট করে, তারাই আবার,
অন্তরালে কঠোর সমালোচনায়
নারীর দোষ ধরে।
নারীশক্তিতেই পুরুষ সৃষ্টি
নারীতেই সৃষ্টি, লয়,শক্তি।
নারীকে দাও তার যোগ্য সম্মান,
কর শ্রদ্ধা, ভক্তি।
গৃহের নারীকে অপমান, অসম্মান
করে যায় না পাওয়া মান।
যতই লোক দেখানো মন্দিরে গিয়ে
কর দূর্গার আরাধনা, স্তুতি, স্তোত্রপাঠ,
যাগযজ্ঞ, দেবীঘটে প্রতিষ্ঠা কর প্রাণ,
সবই যাবে বিফল।
অতএব নারীসম্মানই হোল শ্রেষ্ঠ শক্তি,
যোগ্য সম্মানেই পুরুষ তুমি হবে সফল।
রচনাকাল : ৯/৩/২০২০
© কিশলয় এবং সুমিতা সরকার কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।