আমি হয়তো কোন ভালোবাসার অঙ্কুরিত বীজ,
তাই জানি না বাবা মা কে?
কোন পরিবারে জন্ম আমার?
সমাজের ভয়ে স্থান পেয়েছিলাম–
রাস্তার ধারে নোংরা ডাস্টবিনে।
সদ্য ছোট্ট ফুটফুটে বাচ্চা,
শরীর অনাবৃত বেঁচে আছে কিনা,
সেটা জানার দরকার নেই কারোর?
সবাই দেখছে, কিন্তু–
কোন পরিস্কার মনের মানুষ
হাত দিয়েও দেখছ না, হাত ময়লা হয়ে যাবে।
নানারকম মন্তব্য, নানা কটুক্তি–
এমন সময় এক হাত আমাকে শ্পর্শ করে।
বুঝলাম এটাই আমার মায়ের হাত।
এই হাত ই সমাজের চোখে নোংরা।
এই মা একজন বৃহন্নলা মা।
এই মা মাতৃত্বের স্বাদ কোনদিন পায় নি।
কারণ―
সমাজের চোখে এনারা অবহেলিত,
অপমানিত, ঘৃন্য মানুষ।
এই মা ই আমাকে বুকে জড়িয়ে মানুষ করেছে,
সমাজের কোন কথায় কর্ণপাত না করেই।
আজ আমার পরিচয় ,বৃহন্নলার মেয়ে।
কোথায় ছিলো সভ্য মানুষ সেদিন?
যেদিন অনাবৃত হয়ে পড়েছিলাম ডাস্টবিনে?
আজ তাদের বলার কোন অধিকার নেই?
আমার অপরাধ, আমি একজন বৃহন্নলার মেয়ে
তাই প্রতিনিয়ত সংঘর্ষ সমাজের সাথে।
কেন এই মায়েরা সমাজে স্বীকৃতি পাবে না?
এই মা না থাকলে, আমি হয়তো মরেই যেতাম।
এই মা ই আমাকে বড়ো করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছে।
এই মাদের ও আশা থাকে ভালো করে
বেঁচে থাকতে সন্মানের সঙ্গে।
কিন্তু না―
কেউ দেয় না সন্মান, ভাগ্যে জোটে তিরস্কার।
অনেক কষ্টে টাকা রোজগার করতে গেলে
শুনতে হয় অকথ্য ভাষা।
আমি এই বৃহন্নলার ই মেয়ে,
তাই এই লড়াই আমার একার
আমার এই মায়ের জন্য।
আমি গর্বিত এই বৃহন্নলা মায়ের জন্য।
রচনাকাল : ৮/৩/২০২০
© কিশলয় এবং সুমিতা গাঙ্গুলি কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত।